আইইবির রাজশাহী কেন্দ্রের নির্বচানি ইশতেহার ঘোষণা

ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশ (আইইবি) এর রাজশাহী কেন্দ্রের নির্বাচন উপলক্ষে একটি প্যানেলের নির্বচানি ইশতেহার ঘোষণা করা হয়েছে। রোববার বিকেলে একটি রেস্তোরাঁয় সংবাদ করে ‘মুজিব আদর্শে বিশ্বাসী সাবেক ছাত্রলীগ সমর্থিত প্যানেল’ এর ছয়দফা এই ইশতেহার ঘোষণা করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে সম্মানী সম্পাদক প্রার্থী প্রকৌশলী মুফতি মাহমুদ রনি ইশতেহার ঘোষণা করেন। এ সময় তিনি বলেন, বিগত দিনগুলোতে প্রকৌশলীদের কল্যাণ, উন্নতি এবং ঐক্য সৃষ্টিতে আইইবি রাজশাহী কেন্দ্র পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে। এই কেন্দ্রের প্রকৌশলীদের মধ্যকার এক বিশেষ পেশাভূক্ত শ্রেণির কল্যাণ এবং কর্তাব্যক্তিদের ব্যক্তিস্বার্থ চরিতার্থের মধ্য দিয়ে সময় অতিবাহিত হয়েছে। যার কারণে কেন্দ্রটি আজ বিলীন হয়ে যাবার দ্বারপ্রান্তে। তাই আমি সকল মতের প্রকৌশলীদের নিয়ে গতিশীল, আধুনিক ও সময়োপযোগী আইইবি পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে চাই।

এসময় রনি নির্বাচনি ইশতেহার তুলে ধরেন। এগুলো হলো- সিন্ডিকেট ভেঙ্গে সকল পেশায় নিযুক্ত প্রকৌশলীদের সংগঠন হিসেবে আইইবি রাজশাহী কেন্দ্রকে গড়ে তুলে সকল একাডেমিক ও প্রাতিষ্ঠানিক সেবাপ্রক্রিয়া ডিজিটালাইজড; দেশ-বিদেশের যেকোন স্থানে প্রকৌশলীরা যাতে আক্রান্ত বা শারীরিক নির্যাতনের শিকার না হয় সেজন্য পারস্পারিক বন্ধন সুদৃঢ় করে প্রকৌশলী সমাজকে একত্রিকরণ; ইঞ্জিনিয়ারদের পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য নিয়মিত ট্রেনিং কোর্স করার ব্যবস্থা করা, প্রয়োজনে বিদেশে ট্রেনিং-এর জন্য এই কেন্দ্র থেকে আইইবি সদর দপ্তরে সুপারিশ পেশ; তদন্ত কমিটি গঠন করে বিগত দিনে নতুন ভবন নির্মাণে বিলম্ব হবার কারণ অনুসন্ধানের পাশাপাশি দ্রুততম সময়ের মধ্যে নতুন ভবনের অন্তত দুটি তলা সম্পন্ন করার উদ্যোগ নেয়া; অবহেলিত রাজশাহী কেন্দ্রের উপ-কেন্দ্রগুলোতে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরিয়ে আনার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাসহ পাবনা ও সিরাজগঞ্জ উপকেন্দ্রের নিজস্ব ভবনের জন্য জোরালো ভূমিকা নেওয়া।

মুফতি মাহমুদ রনি বলেন, নতুন প্রকৌশলীদের মধ্যে আইইবি বিমুখ হবার প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বিগত ২০১৬-২০১৭ কমিটিতে আমাদের ভোটার সংখ্যা ছিল ৭৫৪ জন, যা কমে গিয়ে বর্তমানে প্রায় ৬৬০ জনে দাঁড়িয়েছে। রাজশাহীর আইইবি ভবনে গতিশীল কার্যক্রম না থাকার কারণে সন্ধ্যার পর অন্ধকারাচ্ছন্ন আইইবি ভবন ও এর আশেপাশে দেদারছে চলে বহিরাগত মাদকসেবীদের আড্ডা। যার কারণে অধিকাংশ প্রকৌশলী কেন্দ্রে যাওয়ার আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন। তাই আমরা চোখের সামনে একটি প্রতিষ্ঠানকে এভাবে ধ্বংস হতে দিতে পারি না।

তিনি বলেন, দেশের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রায় প্রকৌশলীরা সকলেই প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত। কিন্তু দুঃখের বিষয়, দেশের অন্যান্য পেশাজীবীদের মধ্যে প্রকৌশলীরাই সবচেয়ে বেশি নিপীড়নের শিকার। সম্প্রতি বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সহকারি প্রকৌশলী ফরিদুল ইসলামকে এক ঠিকাদার শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত ও এর আগে রেজাউল ইসলাম নামে এক প্রকৌশলীকে লাঞ্ছিত করার ঘটনা ঘটেছে। এর জন্য দায়ী গতিহীন ও অনৈক্য রাজশাহী কেন্দ্র আইইবি।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি অভিযোগ করেন, অযোগ্য নেতৃত্বের কারণে এত দিন অতিক্রান্ত হলেও আইইবি রাজশাহী কেন্দ্রের নতুন ভবনের একটি তলাও পূর্ণতা লাভ করেনি। বর্তমান কমিটিকে ঢাকা কেন্দ্র থেকে কনভেনশন আয়োজন করার অনুরোধ করলেও অদক্ষতার কারণে এই নেতৃত্ব তা আয়োজন করতে পারেনি। গত চার বছরে আইইবি রাজশাহী কেন্দ্রে মাত্র দুটি সেমিনার হয়েছে। বর্তমান কমিটি আইইবির রাজশাহী কেন্দ্রকে একটি সমিতি বানিয়ে ফেলেছে।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে মুজিব আদর্শে বিশ্বাসী সাবেক ছাত্রলীগ সমর্থিত প্যানেল থেকে ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী প্রকৌশলী মির্জা মোতাছিম বিল্লাহ, বঙ্গবন্ধু পরিষদের রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয় (রুয়েট) শাখার সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর ড. কামরুজ্জামান রিপন, কেন্দ্রীয় কাউন্সিল সদস্য প্রার্থী প্রকৌশলী প্রফেসর ড. মিয়া মো. জগলুল সাদতসহ স্থানীয় কাউন্সিলর সদস্য প্রার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।

বিএ-০৮/২৩-০২ (নিজস্ব প্রতিবেদক)