রাজশাহীতে নৌকা প্রতীকে বিজয়ী ১০, বিদ্রোহী ২ ও জামায়াত ১

রাজশাহীর পবা ও মোহনপুর উপজেলার ১৩টি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে ভোট গণনা শেষে বিজয়ীদের নাম বেসরকারিভাবে ঘোষণা করা হয়েছে। এতে নৌকা প্রতীক নিয়ে ১০ জন, আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী দুইজন ও একজন জামায়াত সমর্থিত চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন।

রোববার জেলার পবা উপজেলার সাতটি এবং মোহনপুর উপজেলা ছয়টি ইউনিয়ন পরিষদে একযোগে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়।

রাজশাহীতে তৃতীয় ধাপে এ ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচন কঠোর নিরাপত্তার মধ্যদিয়ে উৎসবমুখর পরিবেশে সম্পন্ন হয়েছে। কোথাও কোন অপ্রিতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। রোববার সকাল ৮টা থেকে বিকেলে ৪টা পর্যন্ত ১২৬টি কেন্দ্রে বিরতিহীনভাবে চলে ভোটগ্রহণ। সুষ্ঠু ও অবাধ নিরপেক্ষভাবে ভোট দিতে পেরে ভোটাররা আনন্দিত। এর আগে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করে নির্বাচন কমিশন।

কাশিয়াডাংগা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে ভোট দিতে আসা হড়গ্রাম ইউনিয়নের পুকুরিয়া গ্রামের ৬৮ বছরে বৃদ্ধা লুৎফর নেসা বলেন, বহুদিন পর এইবার ভালোভাবেই ভোট দিয়েছি। কোনো সমস্যা হয় নাই। সকাল ৮টায় ভোট শুরু হবে। সে জন্য সকাল সকাল বাড়ি থেকে সেন্টারে আসছি। দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট দিয়েছি। তবে নিজের ভোট নিজে দিতে পেরে সে খুব খুশি।

সর্বোপরি শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য সার্বিক ব্যবস্থাগ্রহণ করা হয়েছে পুলিশ ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে। এমন কথা জানিয়েছে অনেক ভোটাররাও।

পবা উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকে চার জন এবং আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী (স্বতন্ত্র) হিসেবে তিন জন প্রার্থী বিজয়ী হয়েছে। বাকি একটিতে জামায়াত সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন। তবে হরিপুর ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী না থাকায় আওয়ামী মনোনীত নৌকার প্রার্থী আগেই বিজয়ী হয়েছে।
ইউপি নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে পবা উপজেলায় বিজয়ীরা হলেন হুজুরীপাড়া ইউনিয়নে বিজয়ী নৌকা প্রতিকে গোলাম মোস্তফা। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী দেওয়ান রেজাউল করিম (মটরসাইকেল)।

দামকুড়া ইউনিয়নে বিজয়ী নৌকা প্রতীকে রফিকুল ইসলাম। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি স্বতন্ত্র আব্দুস সালাম। বড়গাছী ইউনিয়নে বিজয়ী নৌকা প্রতীকে শাহাদত হোসাইন সাগর। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বর্তমান চেয়ারম্যান বিএনপি সমর্থিত স্বতন্ত্র সোহেল রানা। এছাড়াও বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন দর্শনপাড়া ইউনিয়নে শাহাদত হোসেন সাব্বির (আনারস), তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বর্তমান চেয়ারম্যান নৌকা প্রতীকের কামরুল হাসান রাজ।

পারিলা ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ বিদ্রোহী সাঈদ আলী মোরশেদ (ঘোড়া)। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ বিদ্রোহী সাইফুল বারী ভুলু (আনারস) ও হড়গ্রাম ইউনিয়নে বিজয়ী জামায়াত নেতা স্বতন্ত্র আবুল কালাম আজাদ (অটো-রিকশা) বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী নৌকা প্রতীকের ফারুক হোসেন। এরআগেই হরিপুর ইউনিয়নে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী মনোনীত নৌকার প্রার্থী বজলে রেজবি আল হাসান মুঞ্জিল।

জেলার মোহনপুর উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নের সবক’টিতে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী বিজয়ী হয়েছে। যারমধ্যে মৌগাছি ইউনিয়নে আল আমিন বিশ্বাস, ধুরইল ইউনিয়নে দেলোয়ার হোসেন, রায়ঘাটি ইউনিয়নে বাবুল হোসেন, ঘাষিগ্রাম ইউনিয়নে আজহারুল ইসলাম, বাকশিমইল ইউনিয়নে আব্দুল মান্নান ও জাহানাবাদ ইউনিয়নে হযরত আলীকে বেসরকারিভাবে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়েছে।

এসএইচ-০১/২৯/২১ (নিজস্ব প্রতিবেদক)