রাজশাহী মেডিকেলে ইন্টার্নদের ধর্মঘট চলছে, চরম দুর্ভোগে রোগীরা

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীর মৃত্যুতে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে হামলার ঘটনায় দুই দফা দাবিতে কর্মবিরতি চলছে। বুধবার মধ্যরাত থেকে রামেকের ইন্টার্ন চিকিৎসকরা এই কর্মবিরতি চালিয়ে যাচ্ছেন।

এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টায় জরুরি সভা ডাকে রামেক কর্তৃপক্ষ। এদিকে, ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কর্মবিরতির কারণে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন রোগীরা।

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী বলেন, ইন্টার্ন চিকিৎসকরা কর্মবিরতিতে আছে। চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়ে সমস্যায় আছি। আমার এই ঘটনায় আজ সকাল সাড়ে ৯টায় সব বিভাগীয় প্রধান ও ইউনিট প্রধানদের নিয়ে জরুরি সভা ডেকেছি।

তিনি বলেন, ইন্টার্ন চিকিৎসকরা দুইটা দাবি জানিয়েছে। সেগুলো হলো- হামলার ঘটনায় দোষীদের শাস্তি ও নিরাপদ চিকিৎসা দেওয়ার পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।

হাসপাতাল পরিচালক বলেন, রাবি ছাত্ররা শুধুমাত্র আন্দোলনই করেনি, তারা বিভিন্ন ওয়ার্ডে গিয়ে ডাক্তারদের খুঁজে বের করেছে। এই ঘটনায় ইন্টার্ন চিকিৎসকরা পালিয়ে যায়। রামেকে ২৮০ জন ইন্টার্ন চিকিৎসক আছে। তারা এখন কর্মবিরতিতে। তাহলেই বুঝতে পারছেন কী অবস্থা হচ্ছে। তারা আমাদের মেরুদণ্ড। এখন আমাদের সিনিয়র ডাক্তারদের দিয়েই চিকিৎসা চলছে। তাদের সঙ্গে কথা বলে কাজে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছি। আমাদের ওয়ার্ডগুলোতে প্রচুর রোগী আছে। ইন্টার্ন চিকিৎসকদের ছাড়া আমরা হাসপাতাল চিন্তাও করতে পারি না।

এর আগে চিকিৎসকের অবহেলায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ শাহরিয়ারের মৃত্যুর ঘটনায় লাঞ্ছিত হন বেশ কয়েকজন ইন্টার্ন চিকিৎসক। এসময় চিকিৎসকদের হামলায় আহত হন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের চার শিক্ষার্থী। এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিত, রাত ১২টার দিকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এবং রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আলোচনায় বসেন। দীর্ঘ আলোচনা শেষে, রাজশাহী মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. নওশাদ আলীকে আহ্বায়ক করে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে আন্দোলন স্থগিত করে ছাত্ররা রাবিতে ফিরে গেলেও এখনো কাজে যোগ দেননি ইন্টার্ন চিকিৎসকরা।

এর আগে রাবি শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছিলো রামেক হাসপাতাল চত্বরে। সেখানে একপাশে রাবি শিক্ষার্থী ও অন্যপাশে মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা অবস্থান নেন। আর মাঝে অবস্থান নেয় পুলিশ। দুপক্ষের স্লোগানে উত্তেজনা ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়েছে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েন হাসপাতালের রোগীরা।

বুধবার রাতে সাড়ে ১০টার দিকে রামেক হাসপাতালে হামলার পর দুপক্ষ পাল্টাপাল্টি অবস্থান নেয়। এর আগে দুপক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।

রাবির হবিবুর রহমান হলের তৃতীয় তলার বারান্দা থেকে পড়ে আহত এক শিক্ষার্থী রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান। এ ঘটনায় চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগ তুলে হাসপাতালে ভাঙচুর করেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। তাদের অভিযোগ, ওই শিক্ষার্থী ঠিকভাবে চিকিৎসাসেবা পাননি।

এসএইচ-০৫/২০/২২ (নিজ্স্ব প্রতিবেদক)