অবশেষে পপি পেলেন স্ত্রীর স্বীকৃতি এবং সন্তান পেল পিতৃ পরিচয়

অবশেষে সন্তানের পিতৃ পরিচয় এবং স্ত্রী হিসেবে নিজের স্বীকৃতি পেলেন পপি আক্তার (১৯)। শুক্রবার রাত আটটার দিকে নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে প্রেমিক সুমন মোল্লার পরিবারের লোকজনের উপস্থিতিতে তাদের বিয়ে রেজিস্ট্রি হয়।

পুলিশ জানায়, তিন বছর আগে কিশোরগঞ্জ জেলার কটিয়াদি থানার শতদোন এলাকার পপি আক্তার রূপগঞ্জের বরপা এলাকার বাসা ভাড়া নিয়ে একই এলাকায় ‘মা-বাবার দোয়া’ নামে একটি কারখানায় শ্রমিকের কাজ করতেন। এ সময় কারখানার সুপারভাইজার আড়াইহাজার পৌরসভার কামরানীর চর গ্রামের মৃত হাশেম মোল্লার ছেলে সুমন মোল্লার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।

এক বছর আগে সুমন মোল্লা ঢাকা গিয়ে রেজিস্ট্রি ছাড়া হুজুরের মাধ্যমে পপিকে বিয়ে করে বরপা শান্তিনগর এলাকায় বসবাস শুরু করেন। এর মধ্যে পপি অন্ত:সত্তা হয়ে পড়লে সুমন বরপা ছেড়ে নিজের এলাকায় একটি ফোন ফ্যাক্সের দোকান শুরু করেন। পরে পপির সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন। এরই মাঝে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি পপির কোল জুড়ে একটি কন্যা সন্তান আসে।

পুলিশ আরও জানায়, এদিকে সুমন গত ৯ মার্চ স্থানীয় শম্ভপুরা এলাকায় এক মেয়েকে বিয়ে করেন। শুক্রবার তাকে বাড়িতে আনার প্রস্তুতি নেন। বরের বাড়িতে দিনভর চলে বিয়ের আয়োজন। আত্মীয় স্বজনেরা বাড়িতে কনে আনার প্রস্ততিও নেয়। এ খবর পেয়ে প্রতরণার শিকার পপি তার মাকে নিয়ে থানায় হাজির হয়ে লিখিত অভিযোগ দেন। পুলিশ বাড়ি থেকে সুমনকে আটক করে থানায় নিয়ে আসেন।

এ খবর শুনে দ্বিতীয় স্ত্রীর পরিবারও থানায় হাজির হয়ে সুমনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। বিষয়টি মিমাংসার জন্য পুলিশ প্রশাসন ও উভয় পরিবার উদ্যোগ নেয়। সদ্য বিয়ে করা বউকে তালাক দিয়ে শনিবার রাত আটার দিকে আড়াইহাজার পৌরসভার কাজী অফিসে পপির সঙ্গে সুমনের বিয়ে রেজিস্ট্রি করার সিদ্ধান নেওয়া হয়। এতে নবজাতক কন্যা সিনথিয়া পিতৃ পরিচয় ও স্ত্রী হিসেবে স্বীকৃতি পায় পপি আক্তার।

পপি আক্তার বলেন, ওসি আক্তার সাহেবের জন্য আজ আমি আমার অধিকার ফিরে পেয়েছি। অন্ত:সত্ত্বা হওয়ার পর লজ্জায় ঘর থেকে বের হতে পারতাম না। আজ এই বিয়ের কারণে আমি পেলাম স্বামী ও সংসার, আর আমার মেয়ে সিনথিয়া পেল তার পিতৃ পরিচয়।

আড়াইহাজার থানার এএসআই আলম বলেন, ওসির নির্দেশে সুমনকে আটক করা হয়। পরে কাজী অফিসে এই বিয়ে সম্পন্ন হয়।

আড়াইহাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আক্তার হোসেন বলেন, সুমন পবিারের চাপে প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে নবজাতক সন্তান ও পপিকে প্রথমাবস্থায় অস্বীকার করলেও পরে স্বীকার করেন। এ বিয়ের মাধ্যমে নবজাতক কন্যা পিতৃ পরিচয় ও পপি স্ত্রীর মর্যাদা পেয়েছে।

বিএ-১৮/১৫-০৩ (আঞ্চলিক ডেস্ক)