ফুটফুটে এই শিশুটিকে হাসপাতালের সিঁড়িতে ফেলে পালাল স্বজনরা

জন্মের পরই নির্মমতার শিকার হতে হলো ফুটফুটে এই শিশুটিকে। চোখ মেলে ভালো করে পৃথিবীর আলো দেখার আগেই যেনো অন্ধকার গ্রাস করে নেয় তার চারপাশ। মায়ের কোলে পরম মমতায় হেসে-খেলে সময় কাটানোর কথা থাকলেও এখন হাসপাতালের প্রতিকূল পরিবেশে থাকতে হচ্ছে নিষ্পাপ শিশুটিকে।

স্বজনরা মাত্র ১২/১৩ দিনের এ ছেলে শিশুটিকে হাসপাতালের সিঁড়িতে ফেলে পালিয়ে গেছে। তবে অন্য মানুষের ভালোবাসায় প্রাণে বেঁচে গেছে ভাগ্য বিড়ম্বনার শিকার শিশুটি।

কিশোরগঞ্জের ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের সিঁড়ি থেকে ওই নবজাতককে উদ্ধার করা হয়। আনুমানিক ১২/১৩ দিনের এ ছেলে শিশুটিকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। ডাক্তার আর নার্সদের আন্তরিক চিকিৎসা আর সেবায় সুস্থ্য হয়েছে উঠেছে শিশুটি।

তাকে দত্তক নেয়ার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেছেন কয়েকজন। এদিকে জন্মের পরই নির্মমতার শিকার শিশুটিকে কারও কাছে দত্তক দেয়া হবে, না-কি তাকে ঢাকার শিশু নিবাসে পাঠানো হবে তার নির্দেশনা চেয়ে আদালতে আবেদন করেছে সমাজ সেবা অধিদফতর।

গত ২৫ আগস্ট বিকেলে কিশোরগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালের দ্বিতীয় তলায় সিঁড়ির ওপর নবজাতক এ শিশুটিকে কাপড়ে মোড়ানো অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। সেই থেকে তার সময় কাটছে হাসপাতালে। হাসপাতালের নবজাতক ওয়ার্ডে নার্স আর আয়াদের পরম মমতায় আস্তে অস্তে হাসি ফুটছে শিশুটির মুখে।

ডাক্তাররা জানান, শিশুটি বর্তমানে সুস্থ আছে। কোনো অভিভাবক না থাকায় সমাজ সেবা বিভাগের তত্ত্বাবধানে তাকে নবজাতক ওয়ার্ডে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।

হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. রমজান মাহমুদ জানান, সার্বক্ষণিক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা শিশুটিকে বাড়তি নজরদারিতে রেখেছেন। বিষয়টি পুলিশ ও সমাজ সেবা বিভাগকে অবহিত করা হয়েছে।

জেলা সমাজ সেবা অধিদফতরের উপ-পরিচালক কামরুজ্জামান খান জানান, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের চিঠি পাওয়ার পর শিশুটিকে দত্তক দেয়া কিংবা ঢাকার শিশুমণি নিবাসে পাঠানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত পেতে গতকাল কিশোরগঞ্জের ১নং আমল গ্রহণকারী জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আবেদন করা হয়েছে। আদালত সিদ্ধান্ত দিলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বিএ-০৬/০২-০৯ (আঞ্চলিক ডেস্ক)