এক ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে ৬ ছাত্রীর অভিযোগ!

শরীয়তপুরের গোসাইরহাট উপজেলার সরকারি সামসুর রহমান কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইয়ামিন শিকদার ও ছাত্রলীগ নেতা মারুফ হোসেনের বিরুদ্ধে ছয় ছাত্রীকে ইভটিজিং করার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় কলেজের অধ্যক্ষ বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন ওই ছাত্রীরা। সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে এ ঘটনা ঘটে।

ইয়ামিন শিকদার (২৫) সরকারি সামসুর রহমান কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এবং ওই কলেজের অনার্স তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। আর মারুফ হোসেন (২০) কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সদস্য । তিনি ওই কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র।

কলেজ সূত্র জানায়, গত সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে কলেজ ক্যান্টিনে যাওয়ার সময় ছাত্রীদের পথ রোধ করেন ইয়ামিন শিকদার ও মারুফ হোসেনের নেতৃত্বে কয়েকজন ছাত্র। এ সময় তারা ছাত্রীদের বাজে কথা বলেন এবং একজনকে প্রেমের প্রস্তাব দেন। আবার সেগুলো মোবাইলে ভিডিও করেন। এ ঘটনায় কলেজের অধ্যক্ষ বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন ছাত্রীরা ।

এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী ওই ছাত্রীরা বলেন, সোমবার দুপুরে আমরা কলেজের ক্যান্টিনে খাওয়ার জন্য যাচ্ছিলাম। পথিমধ্যে ইয়ামিন ও মারুফের নেতৃত্বে কয়েকজন ছেলে এসে আমাদের পথ রোধ করে দাঁড়ায়। তখন একজন ছেলে বলে দোস্ত কোনটাকে প্রপোজ করবো বোরকা পরাটাকে, নাকি ড্রেস পরাটাকে । এগুলো বলে হাসাহাসি শুরু করে তারা। তারা এমনভাবে দাঁড়িয়েছিল আমরা কোনোভাবেই যেতে পারছিলাম না। পরে আমাদের একজনকে ডাক দেয় এবং প্রেমের প্রস্তাব দেয় এবং তা মোবাইলে ভিডিও করে। এতেও তারা থামেনি আমাদের পেছন পেছন মোবাইল দিয়ে ভিডিও করতে করতে আসে। তারপরও আমরা কিছু বলিনি।

তারা আরও বলেন, পরেরদিন মঙ্গলবার কলেজে ঢুকার পথে ইয়ামিনের নেতৃত্বে কয়েকজন ছাত্র বিভিন্ন ভাষায় আমাদের বাজে মন্তব্য করে। যা বলার মত নয়। মেহেদী মিরাজ নামে একটা ছেলে বহিরাগত ছিল। সে আমাদেরকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। আর বলে বোম মেরে ফাটিয়ে দেবে। এ নিয়ে আমরা ও আমাদের পরিবার দুশ্চিন্তায় রয়েছে।

এ বিষয়ে গোসাইরহাট উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক দেওয়ান আজমল হোসেন নয়ন বলেন, ইভটিজিংয়ের বিষয়ে আমরা তদন্ত করবো। যদি ইয়ামিন সিকদার এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকে তাহলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিকভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সরকারি সামসুর রহমান কলেজের অধ্যক্ষ মো. ফজলুল হক মোল্লা বলেন, সেদিন আমি কলেজে জাতীয় সংগীত মহরার মধ্যে ছিলাম। ওখান থেকে আসার পর কলেজের ছয় ছাত্রী আমার কাছে অভিযোগ করে তাদেরকে কয়েকজন ছাত্র উক্ত্যক্ত করেছে। আমি সঙ্গে সঙ্গে শিক্ষক পরিষদের মিটিং ডাকি এবং পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে দেই। যা দুই কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দেবে।

এ বিষয়ে গোসাইরহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আলমগীর হুসাইন বলেন, ইভটিজিংয়ের বিষয়টি আমি শুনেছি। তবে আমার কাছে কেউ অভিযোগ নিয়ে আসেনি। জেনেছি এ ঘটনায় কলেজের অধ্যক্ষ বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছে ছাত্রীরা।

বিএ-১৩/১৯-০২ (আঞ্চলিক ডেস্ক)