ভালো কাজের আশায় ভারতে গিয়ে ৪ বছর বন্দী

ভালো কাজের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভারতে পাচার হওয়া ১০ বাংলাদেশি নারী-পুরুষকে উদ্ধার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে তাদের ফেরত পাঠাবে ভারতীয় পুলিশ।

বুধবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন যশোর রাইটস নামে একটি এনজিও সংস্থা।

রাইটস জানিয়েছে, পাচার হওয়াদের মধ্যে ৭ জন পুরুষ ও ৩ জন নারী রয়েছে। ৩ থেকে ৪ বছর পর তারা দেশে ফিরছেন। তাদের বাড়ি যশোর, নড়াইল, খাগড়াছড়ি ও বাগেরহাট জেলার বিভিন্ন এলাকায়।

জানা যায়, পাচার হওয়া সবাই দরিদ্র পরিবারের। এদেরকে ভালো কাজের কথা বলে ভারতে পাচার করে দালাল চক্র। পরে সেখানে জোরপূর্বক বিভিন্ন ঝুঁকিমূলক কাজে তাদের ব্যবহার করতে থাকে। এক পর্যায়ে তাদের কেউ পালিয়ে পুলিশের হাতে ধরা দেয়। আবার কাউকে পুলিশ পাচারকারীদের আস্তানা থেকে উদ্ধার করে। পরে অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে তাদের আশ্রয় হয় জেলে। সেখানে সাজার মেয়াদ শেষে দুই দেশের রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে আইনি প্রক্রিয়ায় স্বদেশ প্রত্যাবাসনে তারা দেশে ফেরার সুযোগ পাচ্ছেন।

এনজিও সংস্থা যশোর রাইটসের তথ্য ও অনুসন্ধান কর্মকর্তা তৌফিকজ্জামান জানান, করোনা সংক্রমণরোধে সরকারি নিয়ম মানতে ফেরত আসার পর এসব নারী-পুরুষকে ১৪ দিনের জন্য বেনাপোলে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে রাখা হবে। পরে তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। এসময় কেউ যদি পাচারকারীদের বিরুদ্ধে মামলা করতে চায়, তাকে আইনি সহায়তা করা হবে বলেও জানান তিনি।

বাংলাদেশ মহিলা আইনজীবী সমিতির যশোর শাখার আইনজীবী নাসিমা খাতুন বলেন, প্রতিবছর যে পরিমাণে পাচার হয়। তার মাত্র ৫ শতাংশ উদ্ধার করা সম্ভব হয়। পাচারকারীদের হাত অনেক বিস্তৃত। পাচারের জন্য তারা বিভিন্ন জায়গায় তাদের লোক নিয়োগ করে। পরে সুবিধা বুঝে কখনো সীমান্ত পথে আবার কখনো পাসপোর্টযোগে ভারতে নেয়। পাচারকারীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা দুর্বল আর বিচারের দীর্ঘ সময়ের কারণে পাচার কার্যক্রম দিন দিন বেড়ে চলেছে।

মানবাধিকার সংগঠন জাস্টিস অ্যান্ড কেয়ারের যশোর শাখার কর্মকর্তা মুহিত হোসেন জানান, পাচারকারীদের বিরুদ্ধে সামাজিকভাবে আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে এবং জনসচেতনতা বাড়াতে পারলে প্রতিরোধ কিছুটা সম্ভব হবে। সরকারি, বেসরকারিভাবে কর্মসংস্থান তৈরির বিষয়েও গুরুত্ব বাড়ানো দরকার বলে মত প্রকাশ করেন তিনি।

বেনাপোল ইমিগ্রেশন ওসি (তদন্ত) মজিবুর রহমান বলেন, পাচারের শিকার যারা স্থলপথে ফেরত আসেন তাদের ইমিগ্রেশন কার্যক্রম শেষে পোর্টথানা পুলিশে সোপর্দ করা হয়। সেখান থেকে আইনি সহায়তা দিতে এনজিও সংস্থা তাদের গ্রহণ করে থাকে।

এসএইচ-২৪/২৮/২১ (আঞ্চলিক ডেস্ক)