শিক্ষার্থীদের খেলায় ঘুম ভাঙায় ক্ষুব্ধ শিক্ষক, মারপিটে আহত ৮

ঝালকাঠীর একটি হাফেজি মাদ্রাসায় শিশু শিক্ষার্থীদের খেলার শব্দে ঘুম ভাঙায় ক্ষুব্ধ শিক্ষক ৮ শিক্ষার্থীকে বেদম মারধর করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

রোববার এ ঘটনায় এক শিক্ষার্থীর বাবার করা মামলায় অভিযুক্ত শিক্ষককে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ।

শনিবার সন্ধ্যায় ঝালকাঠি সদরের পোনাবালিয়া গ্রামের কে খান হাফেজি মাদ্রাসাতে শিক্ষার্থী নির্যাতনের এ ঘটনা ঘটে।

অভিযুক্ত শিক্ষক হাফেজ মাওলানা মোহাম্মদ উল্লাহ ওই মাদ্রাসার একমাত্র আবাসিক শিক্ষক। তিনি খুলনার খালিশপুরের কারী ইউনুস আলীর ছেলে।

ঝালকাঠি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-ওসি খলিলুর রহমান বলেন, গতকাল বিকেলে মাদ্রাসার ছাত্ররা খেলছিল। এসময় শিক্ষার্থীদের খেলার শব্দে শিক্ষক হাফেজ মাওলানা মোহাম্মদ উল্লাহের ঘুম ভেঙে যায়।

এতে তিনি ক্ষুব্ধ হয়ে মাদ্রাসা কক্ষের দরজা আটকে ৮ শিক্ষার্থীকে বেদম প্রহার করেন। এসময় শিক্ষার্থীরা কান্না শুরু করলে সবাইকে কক্ষের মধ্যেই আটকে রেখে বাইরে থেকে তালা ঝুলিয়ে দেন ওই শিক্ষক। আর মারধরের বিষয়টি কাউকে না বলার জন্য সব শিক্ষার্থীকে ভয়ভীতিও দেখান তিনি।

এদিকে মাগরিবের নামাজের সময় কৌশলে নলছিটি উপজেলার বারইকরণ গ্রামের প্রবাসী আব্দুর রহিমের ছেলে মো. সিয়াম (৯) পালিয়ে যায়। পরে সে কাঁদতে কাঁদতে গিয়ে স্থানীয় পোনাবালিয়া বাজারে গিয়ে বিষয়টি এলাকাবাসীকে জানায়।

বাজারে থাকা শতাধিক ব্যক্তি এসময় মাদ্রাসা ঘেরাও করে শিক্ষক মোহাম্মদ উল্লাহকে আটক করেন। তারা আহত শিক্ষার্থীদের উদ্ধার করে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেন।

চার শিক্ষার্থী পোনাবালিয়া গ্রামের শামীম খলিফার ছেলে আমিনুল ইসলাম (১০), বাড়ইকরণ গ্রামের আব্দুর রহিমের ছেলে মোহাম্মদ সিয়াম (৯), পোনাবালিয়া গ্রামের সুমন হোসেনের ছেলে মো. আমিনুল (৯) এবং একই গ্রামের মো. ইয়াছিনকে (১৪) উদ্ধার করে স্থানীয় পল্লী চিকিৎসকের মাধ্যমে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
বেশি আহত শিশু সিয়ামকে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়। আহত অপর শিক্ষার্থীরা যে যার বাড়িতে চলে গেছে বলেও জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।

তিনি বলেন, খবর পেয়ে রাতেই ঝালকাঠি সদর থানা পুলিশ ওই মাদ্রাসায় গিয়ে শিক্ষক মোহাম্মদ উল্লাহকে আটক করে নিয়ে আসে।

এদিকে নির্যাতনের শিকার মাদ্রাসা ছাত্র শিশু আল মুবিনের বাবা নুরুল্লাহপুর গ্রামের মো. সুমন খলিফা বাদী হয়ে রোববার ঝালকাঠি সদর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেছেন।

ওই মামলায় রোববার দুপুরে অভিযুক্ত মাদ্রাসা শিক্ষককে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে বলেও জানান ওসি।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত শিক্ষক হাফেজ মাওলানা মোহাম্মদ উল্লাহ বলেন, নিষেধ করা সত্ত্বেও শিক্ষার্থীরা দুষ্টুমি করায় রাগে ৭/৮ জনকে পিটিয়েছি। বেদম প্রহার করিনি।

এসএইচ-২৬/০৮/২১ (আঞ্চলিক ডেস্ক)