গোপনে বিয়ে করেই বিদেশে স্বামী, গ্রামের বাড়িতে স্ত্রীর অনশন

গোপনে

দীর্ঘদিন ধরে প্রেম, পালিয়ে ঢাকায় এসে কোর্টে রেজিস্ট্রি করে বিয়ে। ভাড়া বাসায় ৮ মাসের সংসার। অতঃপর বউ না জানিয়ে প্রবাসে পাড়ি জমিয়েছেন স্বামী দেলোয়ার হোসেন সৈকত।

এদিকে, কোনো উপায় না পেয়ে ওই যুবকের গ্রামের বাড়ি নেত্রকোনার মদন উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের রুদ্রশ্রী গ্রামে স্ত্রীর স্বীকৃতি চেয়ে অনশনে বসেছেন ওই তরুণী।

মঙ্গলবার সকাল থেকে সৈকতের বাড়িতে অনশন করছেন ওই তরুণী। দেলোয়ার হোসেন সৈকত ফতেপুর ইউনিয়নের রুদ্রশ্রী গ্রামের হারেছ মিয়ার ছেলে।

দেলোয়ার হোসেন সৈকতের পরিবারের দাবি, প্রায় এক বছর ধরে তাদের ছেলের খোঁজ খবর জানেন না তারা।

তবে দেলোয়ার হোসেন সৈকত প্রায় ২০/২৫ দিন আগে সৌদি আরবে চলে গেছেন বলে নিশ্চিত করেছেন সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম চৌধুরী।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রায় ৩ বছর আগে রুদ্রশ্রী গ্রামের হারেস মিয়ার ছেলে সৈকতের সাথে একই এলাকার এক তরুণীর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। দীর্ঘদিন প্রেমের পর ২০২০ সালের ২৮ নভেম্বর ঢাকার নোটারী পাবলিক আদালতে কোট ম্যারেজ করেন তারা। একই তারিখে নিকাহ রেজিস্টারের মাধ্যমে বিবাহ সম্পন্ন করেন।

ছেলের পরিবারের লোকজন তা মেনে না নেওয়ায় দুজনে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে ঢাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করতেন। দীর্ঘদিন সংসার করার পর ২০২১ সালের ৫ জুলাই ওই তরুণীকে ভাড়া বাসায় রেখে নিখোঁজ হয় দেলোয়ার হোসেন সৈকত।

তখন স্বামীর সন্ধান চেয়ে ওই তরুণী ১ আগস্ট ঢাকার ভাষানটেক থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। কোনো সন্ধান না পেয়ে ১৭ আগস্ট স্বামী দেলোয়ারের বাড়িতে স্ত্রীর স্বীকৃতি দাবিতে অনশনে বসেন।

অনশনে থাকা ওই তরুণী বলেন, দেলোয়ার হোসেন সৈকত আমার স্বামী। আমরা বিয়ে করে দীর্ঘদিন ধরে ঢাকায় বসবাস করছি। স্বামীর পরিবারের লোকজন ষড়যন্ত্র করায় বাসা থেকে টাকা পয়সা নিয়ে হঠাৎ নিখোঁজ হয় সৈকত। আমার স্বামীর পরিবারের লোকজন প্রভাবশালী হওয়ায় বাড়িতে আসার পর তারা আমাকে নির্যাতন করেছে। স্ত্রীর স্বীকৃতি না পাইলে আমি এখানে আত্মহত্যা করব।

এ ব্যাপারে দেলোয়ার হোসেন সৈকতের মা দিলোয়ারা আক্তার বলেন, এক বছর ধরে আমার ছেলের কোন খোঁজখবর জানি না। সে কোথায় আছে, কবে বিয়ে করেছে তাও জানি না। এই মেয়েটি (তরুণী কে দেখিয়ে) সকাল থেকে আমার ছেলের স্ত্রী দাবি করে ঘরে উঠেছে।

এদিকে ছেলের বাবা স্বীকার করে বলেন, আমার ছেলে সৈকত ২০/২৫ দিন আগে সৌদি আরব চলে গেছে। যাওয়ার আগে মেয়েটিকে কোর্টের মাধ্যমে তালাক দিয়ে গেছে।

ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম চৌধুরী জানান, রুদ্রশ্রী গ্রামের হারেস মিয়ার ছেলে ২০/২৫ দিন আগে দেশের বাহিরে চলে গেছে আমিও শুনেছি। যে মেয়েটি অনশনে বসেছে তার একটি তালাক নোটিশ কোর্ট থেকে আমার পরিষদে এসেছে।

মদন থানার ওসি ফেরদৌস আলম জানান, তরুণীর অনশনের বিষয়টি ইউএনও মহোদয়ের সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বুলবুল আহমেদ বলেন, আমি সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যানকে বলব বিষয়টি দেখার জন্য।

তালাকের বিষয়ে তিনি বলেন, তালাক কার্যকরের ক্ষেত্রে ৯০ দিনে ৩ টি নোটিশ পাঠাতে হয়। এতে মেয়েটির ভরণ পোষণের বিষয় থাকে।

এসএইচ-১৩/১৭/২১ (আঞ্চলিক ডেস্ক)