নিজের পায়ে দাঁড়াতে চান ‘হাত দিয়ে হাঁটা’ স্মৃতি

জন্ম থেকেই পা নেই। ছোট থেকে বাবাও নেই। নেই একটি হুইল চেয়ার কেনার সামর্থ্য। তবে আছে প্রবল ইচ্ছাশক্তি। জীবনে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার অদম্য ইচ্ছা। পড়ালেখা করে নিজের পায়ে দাঁড়াতে চান আবেদা আঞ্জুম স্মৃতি।

ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলার ভবানীপুরের শারীরিক প্রতিবন্ধী আবেদা আঞ্জুম স্মৃতি। পা-বিহীন অবস্থায় জন্ম নিলেও ছোট থেকেই তার স্বপ্ন, লেখাপড়া করে একদিন সে নিজের পায়ে দাঁড়াবে। স্বাভাবিক মানুষের মতো পা না থাকায় পায়ের চাপটা নিতে হয়েছে কোমল হাতে। গোটা শরীরের ভর তার হাতের তালুতে। তবুও থেমে নেই তার পথচলা।

জীবনের এ গল্পটি ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলার ভবানীপুরের আবেদা আঞ্জুম স্মৃতির। একটি মাদরাসায় দ্বাদশ শেণিতে পড়ে সে। বাড়ি থেকে কোমরে ভর করে হাতে হেঁটে মাটির রাস্তা পেরিয়ে বাকিটা ভ্যানে করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যায় স্মৃতি। লেখাপড়া করে নিজের পায়ে দাঁড়ানোর স্বপ্ন পূরণে তাকে প্রেরণা যোগায় সহপাঠী ও শিক্ষকরা।

স্মৃতি দেড় বছর বয়সে তার বাবাকে হারায়। তারপর থেকে প্রতিদিনের কাজকর্ম আর পড়ালেখায় একমাত্র মা-ই তার সহযোগী। তবুও সব বাধা পেরিয়ে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চান স্মৃতি।

তিনি বলেন, আমার মতো প্রতিবন্ধীদের অনেক অবহেলার শিকার হতে হয়। আমি চাই প্রতিবন্ধীদের যেন কেউ অবহেলা না করে।

অতি দরিদ্র এ শারীরিক প্রতিবন্ধীর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাতায়াতে সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি।

ভবানীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহীনুর মল্লিক জীবন বলেন, আবেদা আঞ্জুম স্মৃতির চলাফেরার জন্য আমি অবশ্যই একটি হুইল চেয়ারের ব্যবস্থা করব। এছাড়া পড়ালেখা শেষ হলে ইউনিয়ন পরিষদে বা অন্য কোথাও তার কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে।

চিকিৎসকরা জানান, কৃত্রিম পা সংযোজন করলে স্মৃতি হাঁটতে পারবে। কিন্তু সেটা খুবই ব্যয়বহুল। কে দাঁড়াবে স্মৃতির পাশে?

এসএইচ-০৫/১৪/২১ (আঞ্চলিক ডেস্ক)