৫ মাসেও মুক্তি মেলেলি লিবিয়ান পুলিশের হাতে আটক ৮৬ যুবকের

নিশ্চিত মৃত্যু জেনেও অবৈধভাবে সমুদ্রপথে বিদেশযাত্রা কোনোভাবেই থামছেই না। ইতালি যাওয়ার সময় লিবিয়ান পুলিশের হাতে আটক মাদারীপুর, ফরিদপুর ও গোপালগঞ্জের ৮৬ যুবক জেলে রয়েছে ৫ মাস ধরে। ভিটেমাটি বিক্রি করে স্বজনরা দালালদের হাতে লাখ লাখ টাকা তুলে দিলেও মুক্তি মিলেনি যুবকদের। তাদের ফিরে পেতে বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করেছেন স্বজনরা। জেলা প্রশাসক জানান, আটক যুবকদের ফিরিয়ে আনতে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার নারায়নপুর গ্রামের মজিবর শেখ ও রাহাতুন বেগম দম্পতি। লিবিয়ায় আটক ছেলে ইয়াছিন কবে দেশে ফিরে আসবে সেই আশায় বুক বেঁধে আছেন তারা।

আটক ইয়াছিনের বাবা মজিবুর শেখ জানান, দালাল শুধু তাদের আশ্বস্ত করে ছেলে আজ ছাড়া পাবে, কাল ছাড়া পাবে এসব বলে। মা রাহাতুন বেগম বলেন, লিবিয়া নেওয়ার পর আমার ছেলেকে জেলে দিছে আমরা জানি না। তাকে ওর বাসা থেকে ধরে নিয়ে গেছে। এ ছাড়া দালালের সঙ্গে যোগাযোগ করলে অনেক সময় ফোন ধরে আবার অনেক সময় ধরে না।

শুধু ইয়াছিন নন, তার সঙ্গে গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুরের বামনডাঙ্গার ইস্রাফিল মুন্সি, নাজমুল শেখ, আনোয়র মুন্সিসহ ৮৬ বাংলাদেশি ৫ মাস ধরে আটক আছে লিবিয়ার জেলে। তাদের ফিরে পেতে স্বরাষ্ট্র, পরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করে কোনো সাড়া পায়নি পরিবারগুলো।

স্বজনরা জানান, দালালচক্রের সক্রিয় সদস্য নুরপুর গ্রামের রবি দারিয়ার ছেলে সজিব ও বামনডাঙ্গার ইউনুস খানের ছেলে নাছির ইতালি নেওয়ার কথা বলে প্রত্যেক পরিবারের কাছ থেকে সাড়ে ৭ লাখ টাকা করে নেয়। লিবিয়া যাওয়ার পরপরই পুলিশ ও সেনাবাহিনীর হাতে আটক হয় ৮৬ যুবক। এরপর তাদের মুক্তির জন্য আবারও নেওয়া হয় ৪ লাখ টাকা করে। কিন্তু যুবকদের মুক্তি মেলেনি।

স্বজন ও এলাকাবাসীর দাবি দালালদের সর্বোচ্চ শাস্তির। এ বিষয়ে স্বজন ও এলাকাবাসীরা প্রধানমন্ত্রীর হন্তক্ষেপ কামনা করছে। যাতে এ ধরনের ঘটনা আর না ঘটে। জানা যায়, ৮৩ জন লোক গেছে, এর মধ্যে ৩ জন মারা গেছে।

অবশ্য জেলা প্রশাসন আশ্বাস দেয় আটক যুবকদের ফিরিয়ে আনতে পদক্ষেপ নেওয়া হবে। মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক ড. রহিমা খাতুন বলেন, স্বজনরা এসেছিলেন, আমার কাছে একটা আবেদন করেছেন তাদের ফিরিয়ে আনার একটা ব্যবস্থা করার জন্য। আমরা এটা সরকারের কাছে পাঠিয়ে দেব।

জেলে আটক থাকা অবস্থায় সেলিম মোল্লা নামের এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে বলে জানান স্বজনরা।

এসএইচ-১৪/২৫/২১ (অনলাইন ডেস্ক)