নির্বাচন কমিশনই রোহিঙ্গা নেতাকে এনআইডি দিয়েছিল

নির্বাচন কমিশনের অফিস সহকারী জয়নালের মাধ্যমেই বাংলাদেশের জাতীয় পরিচয়পত্র নিয়েছিলো মিয়ানমারভিত্তিক সশস্ত্র সংগঠন আরসা প্রধান আতাউল্লাহ’র ভাই শাহ আলী। এনআইডি কার্ডে চট্টগ্রাম নগরীর যে ঠিকানা ব্যবহার করা হয়েছিলো সেখানে শাহ আলী কখনোই ছিলেন না।

কোনো যাচাই-বাছাই ছাড়াই নির্বাচন কমিশন এই রোহিঙ্গা নেতাকে এনআইডি কার্ড দিয়েছিলো বলে অভিযোগ পুলিশের। পরিচয়পত্রটি এরইমধ্যে ব্লক করে দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছে নির্বাচন কমিশন।

উখিয়ার কুতুপালং ৬ নম্বর ক্যাম্প থেকে ১৬ জানুয়ারি ভোরে আরসা প্রধান আতাউল্লাহ’র ভাই শাহ আলীকে অস্ত্রসহ আটক করে এপিবিএন। আটকের পর তার বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনসহ বিভিন্ন অভিযোগে ৩টি মামলা করে পুলিশ। কিন্তু মামলার এজাহার দায়ের করতে গিয়ে পুলিশকে চরম বিপত্তিতে পড়তে হয়।

শাহ আলীর কাছে পাওয়া যায় বাংলাদেশ সরকারের জাতীয় পরিচয়পত্র। বর্তমান ঠিকানা হিসাবে কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের কথা বলা হলেও স্থায়ী ঠিকানা বলা হয়েছে চট্টগ্রাম নগরীর কোতোয়ালী থানাধীন দেওয়ান বাজারের জয়নাব কলোনি। এনআইডি কার্ডের নম্বরও মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।

তবে নগরীর দেওয়ান বাজার জয়নাব কলোনিতে গিয়ে রোহিঙ্গা নেতা শাহ আলী’র আগে থেকে অবস্থানের কোনো সত্যতা পাওয়া পাওয়া যায়নি।

সিএমপি কোতোয়ালী থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ নেজাম উদ্দিন বলেন, অভিযুক্ত রোহিঙ্গা নেতা শাহ আলী আদৌ চট্টগ্রামের বাসিন্দা নয়। এক্ষেত্রে সিটি কর্পোরেশনের গাফিলতিতেই এই রোহিঙ্গা নেতা এনআইডি কার্ড পেয়েছে। উখিয়া থেকে মামলার ইনকোয়ারি স্লিপ পেলেই পুলিশ এই এনআইডি কেলেঙ্কারির পূর্ণ তদন্ত শুরু করবে।

রোহিঙ্গা নেতার জাতীয় পরিচয়পত্র পাওয়ার ক্ষেত্রে নিজের দায় অস্বীকার করেছেন ২০ নম্বর দেওয়ান বাজার ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হাসান মাহমুদ হাসনী। তার দাবি, নির্বাচন কমিশনের অফিস সহায়ক জয়নালের মাধ্যমেই এই রোহিঙ্গা নেতা তার এলাকার ঠিকানা ব্যবহার করে বাংলাদেশের পরিচয়পত্র পেয়েছেন।

এদিকে সংবাদকর্মীর কাছ থেকে তথ্য এবং নথিপত্র পাওয়ার পরপরই ঢাকায় নির্বাচন কমিশনে যোগাযোগ শুরু করা হয়। চট্টগ্রামের আঞ্চলিক নির্বাচন অফিস বলছে, আগেই তারা শাহ আলীর এনআইডি কার্ডের বিষয়টি জেনেছেন। এনআইডি নম্বরটিও অকার্যকর করা হয়েছে।

রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশের জাতীয় পরিচয়পত্র পাওয়ার ঘটনা এবারই প্রথম নয়। ২০১৯ সালে টেকনাফে পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী নূর আলম ও চট্টগ্রামের বায়েজীদ এলাকার ঠিকানা ব্যবহার করে জাতীয় পরিচয়পত্র পেয়েছিলো।

এসএইচ-১৪/১৮/২২ (আঞ্চলিক ডেস্ক)