বিদ্যালয়ে ফিরলেন হৃদয় মণ্ডল

বিজ্ঞান ক্লাসে আলোচনার সূত্র ধরে ১৯ দিন কারাবরণ করা মুন্সীগঞ্জের স্কুলশিক্ষক হৃদয় মণ্ডল বুধবার নিজ কর্মস্থলে ফিরেছেন। এদিন তদন্ত কমিটির সামনে তিনি তার বক্তব্য উপস্থাপন করেছেন। এ ছাড়া তদন্ত কমিটি অন্যান্য কার্যক্রম পরিচালনা করছে।

এর আগে রোববার মুক্তিলাভের পর তিনি চিকিৎসার জন্য সরাসরি ঢাকায় যান। সেখানেই এক আত্মীয়র বাসায় থেকেই চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। তবে তার স্ত্রী ও সন্তানরা বিদ্যালয় কম্পাউন্ডে নিজ কোয়ার্টারেই রয়েছেন। তার ছেলেও ক্লাস করছে।

এদিকে ওই ঘটনায় শিক্ষা অধিদফতর কর্তৃক গঠিত এক সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটির কাছে নিজের বক্তব্য উপস্থাপন করেন শিক্ষক হৃদয় মণ্ডল।

তদন্তের দায়িত্ব পাওয়া মুন্সীগঞ্জের সরকারি হরগঙ্গা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক আব্দুল হাই তালুকদার সরাসরি উপস্থিত হয়ে তার বক্তব্য নেন। এ ছাড়া তিনি শিক্ষার্থী, অডিও রেকর্ড, অভিযোগ দেওয়া ছাত্র, মামলার বাদী এবং সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলছেন।

গত ২০ মার্চ বিজ্ঞান ক্লাসের কথোপকথন অডিও রেকর্ড করা হয়। ভুল বোঝাবুঝির সমাধান না হওয়ায় বিলম্বের সুযোগে অডিওটি যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। তৃতীয় দিনের মাথায় ২২ মার্চ শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন করে বিক্ষোভ ও মারমুখী হয়ে ওঠে।

পরে ২২ মার্চ রাতে হৃদয় মণ্ডলের বিরুদ্ধে ইচ্ছাকৃতভাবে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত, ধর্মীয় বিশ্বাসকে অপমান করা ও ধর্মীয় গ্রন্থের অবমাননার অভিযোগ এনে বিদ্যালয়টির ইলেক্ট্রিশিয়ান মো. আসাদ বাদী হয়ে মামলা করেন। এরপর শিক্ষক হৃদয় মণ্ডলকে গ্রেফতার করা হয়।

মুন্সীগঞ্জ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে গত ২৮ মার্চ ও ৪ এপ্রিল তার জামিন আবেদন করা হলেও আদালত নাকচ করেন। এরপর থেকেই গণমাধ্যমসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে আলোচনার ঝড় ওঠে। এরপরও হৃদয় মণ্ডলকে ১৯ দিন কারাগারে থাকতে হয়। রোববার বিকেলে কারামুক্ত হন মুন্সীগঞ্জের বিনোদপুর রামকুমার উচ্চবিদ্যালয়ের গণিত ও বিজ্ঞানের শিক্ষক হৃদয় মণ্ডল।

হৃদয় মণ্ডল প্রায় ২১ বছর ধরে বিনোদপুর রামকুমার উচ্চ বিদ্যালয়ে গণিত ও বিজ্ঞান বিষয় পড়ান। পরিবার নিয়ে স্কুলের পাশে একটি কোয়ার্টারে থাকেন।

এসএইচ-১৪/১৩/২২ (আঞ্চলিক ডেস্ক)