শেষ হলো শহীদ সন্তানের জন্য মায়ের অপেক্ষা

জীবনের শেষ দিনটি পর্যন্ত ঘরের দরজা খুলে রেখে অপেক্ষা করেছেন ছেলে ফিরবে বলে। আজ অপেক্ষা করার কেউ নেই। আর কখনো জানতে চাইবেন না ছেলে সহযোগী মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে এসেছিল কি না কিংবা তাদের সবাই খেতে পেরেছে কি না।

স্বাধীনতা-পরবর্তী ৫০ বছরের বেশি সময় ধরে ছিল শহীদ সন্তানের জন্য এক মায়ের এমন অপেক্ষা। বলা হচ্ছিল পিরোজপুরে স্বাধীন বাংলার প্রথম পতাকা উত্তোলনকারী শহীদ ওমর ফারুকের মা কুলসুম বেগম মঙ্গলবার রাত ২টার দিকে পিরোজপুরের নিজ বাসভাবনে বার্ধক্যজনিত কারণে ইন্তেকাল করেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯৮ বছর। তিনি ছেলে মেয়ে ও আত্মীয়স্বজনসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

স্বাধীন বাংলা নিউক্লিয়াস গ্রুপের এই ছাত্রনেতা ছিলেন পিরোজপুরে মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক। আর এই অভিযোগেই পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাতে ধরা পড়ার পর একটি রডের এক মাথায় সেই পতাকা বেঁধে আরেক মাথা হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে ঢুকিয়ে দেওয়া হয় তার মাথায়। এমন নির্মমভাবে হত্যার পরও দমেনি পাকিস্তানি হানাদাররা। অন্য মুক্তিযোদ্ধাদের শিক্ষা দিতে তার দেহ ৩ দিন গাছের সঙ্গে লটকে রাখা হয়।

এদিকে কুলসুম বেগমের মেয়ে জেলা মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সালমা রহমান হ্যাপি বলেন, আমার ভাইয়ের ঘরে ফেরার অপেক্ষায় মা জীবনের শেষ দিনটি পর্যন্ত দরজা খুলে রেখে অপেক্ষা করেছেন।

আজ সেই অপেক্ষার প্রহর শেষ হয়েছে। আমার মায়ের জন্য সবাই দোয়া করবেন। তার জানাজা ও দাফন কাজের বিষয়টি সবার সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নিয়ে পরে জানানো হবে।

এসএইচ-০৯/২৬/২২ (আঞ্চলিক ডেস্ক)