কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে হরিপুর জমিদার বাড়ি

অযত্ন, অবহেলায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরের হরিপুর জমিদার বাড়ি। তবে, দখল করে বসতি গড়েছেন প্রায় অর্ধশত পরিবার। জরাজীর্ণ হলেও কালের সাক্ষী এই বাড়িটি দেখতে ভিড় করেন পর্যটকরা। তিতাস নদীর পাড়ে সাদা রঙের বিশাল দালান। স্থাপত্যশৈলী দেখেই বোঝা যায় কয়েকশ’ বছর আগের স্থাপনা।

অট্টালিকাটি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার হরিপুর জমিদার বাড়ি। স্থানীয়রা কেউ বলেন রাজবাড়ি, কেউ বলেন বড়বাড়ি, আবার বলা হয় জমিদার বাড়ি। তিতাস নদীর পূর্বপ্রান্তে প্রায় দু’শ বছর আগে ত্রিপুরার জমিদারদের উত্তরসূরি গৌরী প্রসাদ রায় চৌধুরী ও কৃষ্ণ প্রসাদ রায় চৌধুরী বাড়িটি নির্মাণ করেন। বাড়ির সামনেই দিগন্ত বিস্তৃত হাওড়। শৈল্পিকভাবে তৈরি বিশাল আকারের ঘাট। লাল ইট আর সুরকির গাঁথুনি দিয়ে তৈরি রং-মহল, দরবার হল, গোয়ালঘর, রান্নার ঘর, মন্দির ও সীমানা প্রাচীর। তবে দীর্ঘদিন সংস্কারের অভাবে বাড়িটি এখন ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে।

দূরদূরান্ত থেকে প্রতিদিনই পর্যটকেরা বাড়িটি দেখতে এসে হতাশা হন। বাড়িটি সংস্কারের দাবি তাদের। পর্যটকরা বলেন, সংরক্ষণ করা দরকার। আসলে এটা আমাদের ঐতিহ্য। ধীরে ধীরে এটি ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। হরিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ফারুক মিয়া বলেন, বর্তমান সরকারের কাছে আবেদন এই বাড়িটি যেন দ্রুত সংস্কার করা হয়।

তবে, বাড়ির বেশিরভাগ অংশই এখন ভূমিদস্যুদের দখলে। বসত গড়ে তুলেছেন অনেক পরিবার। এতে নষ্ট হয়েছে বাড়ির ভেতরের পরিবেশ। আর দখলমুক্ত না করা পর্যন্ত বাড়িটি সুরক্ষা সম্ভব নয় বলে জানায় প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতর।

কয়েকজন দখলদার বলেন, ৪০ বছর ধরে আমরা এখানে আছি। আশপাশে জায়গা দিলে আমরা এখান থেকে বের হয়ে যাবো। দখল উচ্ছেদ করে জমিদার বাড়িটি সংরক্ষণের আশ্বাস জেলা প্রশাসকের। জেলা প্রশাসক মো. শাহগীর আলম বলেন, কিছু মানুষ দখল করে আছে। আমরা তালিকা করেছি। তার মধ্যে বারো জনকে আমরা আশ্রয়ণ প্রকল্পে স্থানান্তর করেছি।

প্রায় ৫ একর জমির ওপর হরিপুর জমিদার বাড়ি। ঘেটুপুত্র কমলা, নাইওরী ও মধুমালতী চলচিত্রের শুটিং হয়েছে এখানেই।

এসএইচ-০৭/১৩/২২ (আঞ্চলিক ডেস্ক)