মোনাজাত বা দোয়া শেষে মুখে হাত মোছা নিয়ে ইসলাম যা বলে

মোনাজাত

আমাদের দেশে দোয়া-মোনাজাত শেষে মুখমণ্ডলে হাত মোছার একটা ব্যাপক প্রচলন আছে। অনেকে আবার মোনাজাত শেষে হাত ছেড়ে দেন। কিন্তু বেশিরভাড় মানুষকে দেখা যায়, মুখে হাত মুছতে। এটার পক্ষে-বিপক্ষে কথা ও যুক্তিও আছে। তবে দোয়া শেষে হাত চেহারায় মোছা হাদিস দ্বারা প্রমাণিত। তাই চেহারায় এভাবে হাত মোছা হাদিস সম্মত। তবে হাত না মুছলেও কোনো সমস্যা নেই।

হজরত উমর ইবনুল খাত্তাব (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দোয়া করার সময় যখন তার উভয় হাত উঠাতেন, তিনি তা দিয়ে তার মুখমণ্ডল মর্দন না করা পর্যন্ত নামাতেন না। -সুনানে তিরমিজি: ২/১৭৬

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) সূত্রে বর্ণিত, হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমরা তোমাদের ঘরের দেয়ালগুলো পর্দায় আবৃত করো না। যে ব্যক্তি বিনা অনুমতিতে তার ভাইয়ের চিঠিতে দৃষ্টি নিক্ষেপ করলো, সে যেন জাহান্নামের আগুনের দিকে তাকালো। তোমরা হাতের পৃষ্ঠের দ্বারা নয় বরং হাতের তালুর দ্বারা আল্লাহর কাছে চাইবে। অতঃপর দোয়া শেষে তোমাদের হাতের তালু দিয়ে নিজের চেহারা মুছবে। -সুনানে আবু দাউদ: ১/২০৯

আরেকটি বিষয় হলো, দোয়া বা মোনাজাতে কোনো ধরনের উদাসীনতা প্রকাশ করা যাবে না। অনেক সময় দেখা যায়, অনেকেই দোয়ার জন্য তোলার পর উদাসীন। বিশেষ করে জুমার দিন বিষয়টি বেশি চোখে পড়ে। মসজিদ থেকে বের হচ্ছে আর হাঁটতে হাঁটতে হাত তুলে দোয়া করছে। অর্থাৎ নিছক হাত তুলেছে। এমনও দেখা যায় যে, হাত তুলে আরেকজনের সঙ্গে গল্প করছে, হাতের আঙ্গুল ফোটাচ্ছে ইত্যাদি। এ সবই উদাসীনতার সঙ্গে দোয়া করার শামিল, যা কখনোই উচিত নয়।

হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, উদাসীনতার সঙ্গে দোয়া করলে আল্লাহ সে দোয়া কবুল করেন না। ইরশাদ হয়েছে, হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, দোয়া কবুল করা হবে এই বিশ্বাস নিয়ে তোমরা দোয়া করো এবং জেনে রাখো আল্লাহতায়ালা উদাসীন হৃদয়ের দোয়া কবুল করেন না। -সুনানে জামে তিরমিজি: ৪৭৯

সব সময় দোয়ায় অংশগ্রহণ করতে হবে এটা তো জরুরি না। দোয়ায় যদি শরিক হওয়ার সময় না থাকে তাহলে শরিক হবো না। কিন্তু আল্লাহতায়ালার সামনে হাত তুলে মনোযোগ অন্যদিকে থাকা কখোনোই সমীচীন নয়। এটা পরিত্যাগ করতে হবে।

আরএম-০২/৩১/১০ (ধর্ম ডেস্ক)