শবেবরাতে যা করবেন না

পবিত্র শাবান মাসের ১৪ তারিখ দিবাগত রাতকে ‘শবেবরাত’ বলা হয়। সে হিসেবে আজ পবিত্র শবেবরাত। ফারসি ‘শব’ শব্দের অর্থ রাত এবং ‘বরাত’ অর্থ সৌভাগ্য। আরবিতে একে বলে ‘লাইলাতুল বরাত’। অর্থাৎ, ‘শবেবরাত’ শব্দের অর্থ ‘সৌভাগ্যের রাত’। এ রাতটি ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা এবাদত-বন্দেগি ও জিকির-আসকারের মধ্য দিয়ে কাটান। বিভিন্ন বর্ণনামতে, এ রাতে মহান আল্লাহ বান্দাদের জন্য তার রহমতের দরজা খুলে দেন।

তবে শবেবরাতকে কেন্দ্র করে কিছু ভুল রেওয়াজ রয়েছে, যা পরিহার করা আবশ্যক।

যা যা করা উচিত নয়

১. আতশবাজি বা পটকা ফোটানো

২. ইবাদত-বন্দেগি বাদ দিয়ে ঘোরাফেরা করা

৩. অনাকাঙ্ক্ষিত আনন্দ-উল্লাস করা

৪. অযথা কথাবার্তা ও বেপরোয়া আচরণ করা

২. শুধু শবেবরাতকে কেন্দ্র করে মসজিদে বা ঘরে প্রয়োজনের অতিরিক্ত লাইটিং করা

৬. হালুয়া-রুটি বা খাওয়ার পেছনে বেশি সময় নষ্ট করে ইবাদত থেকে দূরে থাকা

৪. ইবাদত মনে করে খাসি জবেহ করা

৭. গর্হিত ও অশ্লীল কোনো কাজ করা

৮. অন্য কারও ইবাদতের বা ঘুমের বিঘ্ন ঘটানো

তবে অনেকে হালুয়া-রুটি বিতরণকে বিদআত মনে করেন। এ প্রসঙ্গে ইকরা জামিয়ার সিনিয়র মুহাদ্দিস মুফতি ফয়জুল্লাহ আমান বলেন, একেক অঞ্চলের একেক কালচার বা কৃষ্টি থাকে। এসব কালচার আর্থসামাজিক ও ঐতিহাসিক বিভিন্ন কারণেই গড়ে ওঠে। এর সঙ্গে ধর্মের কোনো সংঘর্ষ থাকে না। অনেকে না বুঝেই সেগুলোকে বিদআত বলে দেয়। অথচ বিদআতের সংজ্ঞায় শাস্ত্রবিদগণ এ কথা স্পষ্ট করেছেন, কোনো বিষয়কে ধর্মের অংশ মনে করলে তবেই তা বিদআত হবে। রাসুল (সা.) রুটি খেতেন, কেউ যদি তার অঞ্চলগত অভ্যাসের কারণে রুটি না খেয়ে ভাত খায়, তাহলে এটিকে বিদআত বলা যায় না। এটা তার অভ্যাস ও সুবিধার ব্যাপার।

খাওয়া-দাওয়া পোশাক-আশাকের মতোই সাংস্কৃতিক বিষয়াদি। শবেবরাত নিঃসন্দেহে ধর্মীয় বিষয়। কিন্তু শবেবরাতের আনুষ্ঠানিকতা ধর্মের অংশ হিসেবে নয়, উপমহাদেশের মুসলিম কালচার হিসেবে উদ্‌যাপিত হয়ে আসছে। তবে কালচার হিসেবে যা কিছু উদ্‌যাপিত হয়, তার সবকিছুকে চোখ বুজে বৈধ বলে দেওয়া যায় না। দেখতে হবে, এসব উদ্‌যাপনের মাঝে কোনো শরিয়াবিরোধী কিছু আছে কি না? অপব্যয়, অপচয় ও বেশরা কাজকর্ম নিঃসন্দেহে পরিত্যাজ্য। কিন্তু রাত জেগে নামাজ পড়া, দোয়া করা, পরদিন রোজা রাখা, কবর জিয়ারত করা ইত্যাদি আমল হাদিস দ্বারা প্রমাণিত। ফকির-মিসকিন-এতিমদের দান-সদকা করা, গরিব-দরিদ্র অসহায় মানুষকে সাহায্য করা শবেবরাতে নিষিদ্ধ হওয়ার কোনো কারণ নেই।

এসএইচ-০৪/১৮/২২ (ধর্ম ডেস্ক)