চিত্রশিল্পাঙ্গনে আলোচিত মুখ রাজশাহীর সোমা

রাজশাহীর মেয়ে নারগিস পারভিন সোমা নারীর জীবন সংগ্রামের চিত্রকর্ম দিয়ে দেশ ছাড়িয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিজেকে মেলে ধরছেন। ইতমধ্যে অর্জন করেছেন ডজনাধিক এ্যাওয়ার্ড। যার অধিকাংশই ২০১৮ সালের প্রাপ্তি। আর এ জন্য বিভিন্ন সময় বিদেশের সংবাদ মাধ্যমগুলোতেও আলোচিত মুখ হয়ে উঠেছেন রাজশাহী চারুকলা মহাবিদ্যালয়ের এই শিক্ষক। বিশেষ করে ভারতের যুগশঙ্খ, সাময়িক প্রসঙ্গ, প্রান্তজ্যোতি উল্লেখযোগ্য।

অপর দিকে নেপালের দৈনিক নাগরিক, হিমালয়, দৈনিক নেপাল কলা, মিউজিক খবর পত্রিকাগুলো উল্লেখযোগ্য। এই সব মিলিয়ে সোমা চিত্রশিল্পাঙ্গনে গেলো বছরের আলোচিত মুখ হয়ে উঠেছেন।

বিভিন্ন চিত্র প্রদশর্নীতে নারীর জীবন সংগ্রাম বিষয়ক ছবি প্রদর্শনের মাধ্যমে অর্জন করেছেন আন্তর্জাতিক পর্যায়ের বিভিন্ন এ্যাওয়ার্ড। এর মধ্যে মধ্যে ১২টি আন্তর্জাতিক পর্যায়ের। বাকি দুটি পেয়েছেন দেশে। সর্বশেষ এ্যাওয়ার্ড অর্জন করেছেন এ বছরের ডিসেম্বরে নেপালে।

দেশে ২০১৫ সাল থেকে জাতীয় পর্যায়ের বিভিন্ন চিত্র প্রদর্শনীতে অংশ নেয়া শুরু হলেও এখন পর্যন্ত তেমন সাফল্য নেই। অংশ নেয়ার মধ্যে জাতীয় চিত্র প্রদর্শনী, ওরিয়েন্টাল, নবিন, রাশেদ, বঙ্গবন্ধু চিত্র প্রদর্শনী উল্লেখযোগ্য।

সোমা তাঁর মায়ের এই প্রতিচ্ছবিকে ঘিরে নারী জাগরনের জন্য নারীর জীবন সংগ্রামের ছবি এঁকে চলেছেন। এখন পর্যন্ত ভারত, নেপাল, জাপান, নেদারল্যান্ড, ফ্রান্স ও ইতালিতে চিত্র প্রদর্শনীতে অংশ নিয়েছেন।

মুলত ১৯৯৯ সালে বাংলাদেশ শিশু একাডেমী ও ২০১৪ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বার্ষিক প্রদর্শনীতে বেস্ট নিরিখা পুরস্কার দিয়ে তাঁর অর্জনের মূলত যাত্রা শুরু। এরপর দেশের বাইরে প্রথম জাপানে তারপর নেপাল ও ভারতের বিভিন্ন জায়গাতে। ২০১৬ সালে জাপানে গ্রন্ড হার্ড এ্যাওয়ার্ড।

২০১৭ সালে ভারতের কেরালার দি মায়েষ্ট্র এ্যাওয়ার্ড, দিল্লিতে গান্ধি আর্ট গ্যালারীর বেষ্ট পেন্টিং এ্যাওয়ার্ড, আহমেদাবাদে ললিত কলা একাডেমির এ্যাওয়ার্ড।

২০১৮ সালে ভারতের সিমলা, চন্ডিগড়ে বেষ্ট পেন্টিং এ্যাওয়ার্ড, দিল্লিতে কালাকার ফাউন্ডেশন এ্যাওয়ার্ড ও অগ্নিপথ বর্ষসেরা এ্যাওয়ার্ড এবং নেপালে বেষ্ট পেন্টিং ও কাপল এ্যাওয়ার্ড অর্জন। এখন পর্যন্ত সর্বশেষ আন্তর্জাতিক এ্যাওয়ার্ড গত বছরের ১৫ ডিসেম্বর নেপালে অর্জন করেন কাপল এ্যাওয়ার্ড। এ্যাওয়ার্ড প্রাপ্ত ছবিটি ছিল নারীর জীবন সংগ্রাম বিষয়ক।

সোমা বলেন, নারীরা ক্রমশই সকল ক্ষেত্রে এগিয়ে যাচ্ছে। যেমন রাজশাহীতে থেকে তিনি এখন চিত্রশিল্পী হিসেবে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পা রাখতে সক্ষম হয়েছেন। প্রত্যাশা করেন তার অনুজরা আগামীতে দেশের গন্ডি মাড়িয়ে পুরো পৃথিবীজুড়ে চিত্র প্রদর্শনীতে অংশ নিয়ে দেশের মুখ উজ্জ্বল করতে পারবেন। বয়ে আনবেন গৌরব গাঁথা এ্যাওয়ার্ড।

তিনি বলেন, বিদেশের পত্রিকায় প্রথমেই বলা হয় আমি (তিনি) বাংলাদেশের মেয়ে। এটাই আমার (তাঁর) কাছে সবচেয়ে গর্বের। নিজ মাতৃভূমিকে নারীর জীবন সংগ্রামের অঙ্কিত ছবি দিয়ে বিশ্বের সকল চিত্রশিল্পিদের সাথে আরো সুবনিবিড় ভাবে পরিচয় করিয়ে দেয়াই মুল লক্ষ্য।

এসএইচ-০২/০১/১৯ (সুমন হাসান)