বিশেষজ্ঞরা টিকা মজুতের ‘পক্ষে নন’

মাত্র ছয় মাস মেয়াদের অক্সফোর্ডের টিকা একবারে বড় চালান এনে মজুতের পক্ষে নন বাংলাদেশের বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, ধাপে ধাপে এনে দূরদর্শিতার প্রমাণ দিচ্ছে সরকার। এ অবস্থায় মজুত ২৫ লাখ শেষ হওয়ার আগেই পরবর্তী চালান হাতে পাওয়ার আশা বাংলাদেশের।

২১ জানুয়ারি উপহার হিসেবে ভারতের দেয়া ২০ লাখ ডোজের মাধ্যমে ভ্যাকসিনেশন কার্যক্রমের প্রথম ধাপে নাম লেখায় বাংলাদেশ। এর চার দিনের মাথায় ২৫ জানুয়ারি সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে কেনা বাংলাদেশের প্রথম টিকার চালান আসে বেক্সিমকো ফার্মার হাত ধরে।

ওই সময় বেক্সিমকোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজমুল হাসান পাপন জানান, পর্যায়ক্রমে টিকা পাওয়া যাবে।

যদিও এর আগেই সময়মতো টিকা আসা না আসা নিয়ে নানা কথা রটে বেশকিছু গণমাধ্যমসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। ঠিক তখনই সেরামের বাংলাদেশের এজেন্ট বেক্সিমকো জানিয়েছিল, ধাপে ধাপে হলেও সময় মতো তিন কোটি ডোজ পাবে বাংলাদেশ।

সব শঙ্কা কাটিয়ে দেশজুড়ে এখন চলছে টিকাদান কর্মসূচি। মঙ্গলবার অধিদপ্তরের হিসেবে এরই মধ্যে ৫৭ লাখ ৪৫ হাজার ৮৫ জন নিয়েছেন করোনার টিকার প্রথম ডোজ। আর দ্বিতীয় ডোজ দেয়া হয়েছে ১৬ লাখ ৭৮ হাজার ১৮৯ জনকে। অর্থাৎ ধাপে ধাপে আসা এক কোটি দুই লাখের মধ্যে প্রয়োগ হয়েছে ৭৪ লাখ ২৩ হাজার ২৭৪ ডোজ, এখনো মজুত আছে ২৫ লাখ ৭৬ হাজার ৭২৬। তবে এরই মধ্যে আবারো মিশ্র প্রতিক্রিয়া মানুষের মাঝে। গণমাধ্যমের খবরেও তৈরি হয়েছে বিভ্রান্তি।

তবে এ মুহূর্তে যে ভ্যাকসিন প্রয়োগ হচ্ছে তা প্রস্তুত হয়েছে ৬ ডিসেম্বর, ২০২০ আর মেয়াদ ৩ জুন, ২০২১ পর্যন্ত। তাই মজুত নিয়ে কোনো প্রশ্ন তুলতে নারাজ বিশেষজ্ঞরা। বলছেন, সরকারের ধাপে ধাপে আনার প্রক্রিয়ার কারণেই মজুত প্রক্রিয়া সঠিক নিয়মেই হচ্ছে।

বিএসএমএমইউয়ের অতিরিক্ত পরিচালক (হাসপাতাল) ডা. নাজমুল করিম বলেন, একবারে আনাটা ঠিক নয়, ভাগে ভাগে আনাটাই সঠিক, কারণ এতে মজুত করাটা সহজ। হাসপাতালটির উপ-পরিচালক ডা. মো. খোরশেদ আলমও একই কথা জানান।

ভ্যাকসিন নিতে সুরক্ষা ওয়েবসাইটে এ পর্যন্ত নিবন্ধন করেছে ৭১ লাখ ৫০ হাজার ৮৭৩ জন।

এদিকে, ভারতের বাইরে অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা সরবরাহের জটিলতার অবসান হয়েছে। টিকা ক্রয় এবং বিতরণের সঙ্গে যুক্ত থাকা ইউনিসেফের বরাত দিয়ে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। ৮০টি দেশে সরবরাহের জন্য আগামী মে মাসেই অ্যাস্ট্রাজেনেকার ৬ কোটি ডোজ টিকা পাওয়া যাবে বলে জানিয়েছে ইউনিসেফ।

এতে বাংলাদেশেরও টিকা পাওয়া নিশ্চিত হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট এ পর্যন্ত ৭৬টি দেশে সাড়ে ৬ কোটি ডোজ অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা রফতানি করেছে। বাংলাদেশও সেরামের কাছ থেকে কোভিড টিকা আমদানি করছে।

এসএইচ-১১/২১/২১ (অনলাইন ডেস্ক)