তাড়াহুড়ো’ করে বিধিনিষেধ শিথিল করায় সংক্রমণ বাড়বে!

বাংলাদেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ ও নিয়ন্ত্রণে যে লকডাউন জারি করা হয়েছিল, সেটি তুলে নেয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করে এ সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি কমিটি বলছে, সরকার তাড়াহুড়ো করে বিধিনিষেধ শিথিল করেছে। এর ফলে সংক্রমণ আবার বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

লকডাউন তুলে নেয়ার সরকারি সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার সুপারিশ করেছেন কোভিড-১৯ সংক্রান্ত বিশেষজ্ঞ কমিটির সদস্যরা।

শুক্রবার রাতে কোভিড-১৯ সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির সভা শেষে পাঠানো একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে। শুক্রবার রাতে কারিগরি কমিটির সদস্যদের সভা অনুষ্ঠিত হয়।

২৩শে জুলাই থেকে বাংলাদেশে সর্বশেষ কঠোর লকডাউন জারি করা হয়েছিল, যা ১০ই অগাস্ট শেষ হয়। ১১ই অগাস্ট থেকে বেশিরভাগ বিধিনিষেধ তুলে নেয়া হয়েছে। যানবাহন চলাচল শুরু, হোটেল রেস্তোরা খুলে দেয়ার পাশাপাশি সামনের সপ্তাহ থেকে পর্যটন কেন্দ্রও খুলে যাচ্ছে।

জীবিকা ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড সচল রাখার সরকারের দায়িত্ব স্বীকার করে, কারিগরি কমিটির সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ সহিদুল্লা স্বাক্ষরিত ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘সভা মনে করে, বিধিনিষেধ শিথিলতার ক্ষেত্রে সরকার কিছুটা তাড়াহুড়ো করেছে। এর ফলে সংক্রমণ আবার বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে, ফলে অর্থনীতি আরও বেশি হুমকির মুখে পড়বে।”

”লকডাউন আরও ১-২ সপ্তাহ চলমান রাখতে পারলে এর পুরোপুরি সুফল পাওয়া যেত।”

তাই সরকারের এই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার সুপারিশ করেছে কমিটির সদস্যরা।

আরও কিছুদিন সভা/সমাবেশ, সামাজিক অনুষ্ঠান, পর্যটন/বিনোদন কেন্দ্র, কমিউনিটি সেন্টার বন্ধ রাখার পরামর্শ দিয়েছে বিশেষজ্ঞদের এই কমিটি।

সেই সঙ্গে আরও কিছু পরামর্শ দিয়েছে কোভিড-১৯ সংক্রান্ত এই বিশেষজ্ঞ কমিটি। যার মধ্যে রয়েছে:

রেস্তোরাঁয় বসে খাওয়ার ব্যবস্থা বন্ধ করে শুধুমাত্র বিক্রি করা

ধারণ ক্ষমতার অর্ধেক যাত্রী নিয়ে যানবাহন চলাচল

অনলাইন বা বাড়িতে বসে কাজ/প্রশিক্ষণ/সভা করার সুযোগ রেখে অফিস চালু করা

সব জায়গায় স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার পরামর্শ দিয়েছে এই কমিটি।

সকল ক্ষেত্রে শতভাগ সঠিকভাবে মাস্ক পরা ও সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করার পাশাপাশি স্বাস্থ্যবিধি মেনে করোনাভাইরাস সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের ওপর জোর দেয়ার পরামর্শ দিয়েছে এই কমিটি।

বাজারে যেসব মাস্ক বিক্রি হয়, সেখানে অন্তত তিন লেয়ারে সঠিক মাস্ক উৎপাদন ও বিক্রি নিশ্চিত করার জন্য ওষুধ প্রশাসনকে তাগিদ দিয়েছে এই বিশেষজ্ঞ কমিটি।

সম্প্রতি বাংলাদেশে গর্ভবতী ও দুগ্ধদানকারী নারীদের কোভিড-১৯ টিকা দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। সেই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বিশেষজ্ঞ এই কমিটি বলছে, তাদের জন্য টিকা প্রদানের ব্যবস্থা আরও সহজ ও নিরাপদ করা উচিত। এজন্য টিকা কেন্দ্র নির্দিষ্ট করা যেতে পারে।

এসএইচ-০১/১৪/২১ (অনলাইন ডেস্ক, তথ্যসূত্র : বিবিসি)