করোনাকালে প্রতিদিন একজন করে ধনকুবের তৈরি

করোনা মহামারির ভবিষ্যৎ, টিকা সমতা ও জ্বালানির রূপান্তর এসব এখন বৈশ্বিক আলোচনার বিষয়। কেনিয়াভিত্তিক দাতব্যসংস্থা অক্সফামের মতে, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য হ্রাস ও পর্যটন কমে যাওয়ার কারণে বিশ্বের ৯৯ শতাংশ মানুষকে দুর্বিষহ দিন পার করতে হয়েছে। বিশ্বের ১৬ কোটির বেশি মানুষকে দরিদ্রের দিকে ঠেলে দিয়েছে করোনা।

এরপরও অবাক করা তথ্য জানিয়েছেন অক্সফাম ব্রিটেনের প্রধান নির্বাহী ড্যানি শ্রিসকানডারাজাহ। তিনি বলেছেন, মহামারিকালে প্রতিদিন প্রায় একজন নতুন ধনকুবের তৈরি হয়েছে। মহামারিতে ধনীদের সম্পদ বেড়েছে দ্বিগুণ বা তার চেয়েও বেশি।

সাধারণত ডাভোসে বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের বৈঠকের শুরুতে বৈষম্য নিয়ে প্রতিবেদন পেশ করে অক্সফাম। সেখানে প্যানেল আলোচনার জন্য হাজার হাজার কর্পোরেট, রাজনৈতিক নেতা, সেলিব্রেটি, ক্যাম্পেইনার, অর্থনীতিবিদ ও সাংবাদিকরা সুইস স্কি রিসোর্টে জড়ো হন।

নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, প্রতিবছর ডাভোস সম্মেলনের পাশাপাশি আমরা প্রতিবেদন পেশ করি। অর্থনীতি, ব্যবসা ও রাজনৈতিক অভিজাতদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে এ সময়ে প্রতিবেদন দেওয়া হয়।

মহামারিতে গত দুই বছর ধরে স্থবির গোটা বিশ্ব। কর্মহীন হয়ে পড়েছেন অসংখ্য মানুষ। অর্থ সংকটের কারণে দেউলিয়া ঘোষণা করেছে অনেক প্রতিষ্ঠান।

অক্সফাম ইন্টারন্যাশনালের প্রকাশিত এক প্রতিবেদন বলছে, কোভিডের কারণে গত দুই বছরে বিপুল সংখ্যক মানুষ নতুন করে চরম দারিদ্রের শিকার হয়েছে। মহামারির কারণে জাতীয় ঋণ বাড়ায় সামাজিক সুরক্ষা খাতে বরাদ্দ কমাতে বাধ্য হয়েছে উন্নয়নশীল দেশগুলো।

প্রতিবেদনে বলা হয়, গত দুই বছরের মহামারিতে জনজীবন ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে স্থবিরতা, স্বাস্থ্যসেবার ঘাটতি, লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা, ক্ষুধা ও জলবায়ুগত বিপর্যয়ের কারণে প্রতিদিন বিশ্বজুড়ে গড়ে মৃত্যু হয়েছে ২১ হাজার মানুষের।

অবশ্য ধনীব্যক্তিদের সম্পদের পরিমাণ অকল্পনীয় হারে বেড়েছে। গত দুই বছরে প্রতি সেকেন্ডে বিশ্বের শীর্ষ ১০ জন ধনীর সম্পদের পরিমাণ বেড়েছে ১৫ হাজার ডলার করে।

অক্সফাম ইন্টারন্যাশনালের নির্বাহী পরিচালক গ্যাব্রিয়েলা বুচার বলেছেন, বিশ্বের চরম দরিদ্র ৩১০ কোটি মানুষের সব সম্পদ যোগ করলে যত হবে। শীর্ষ ১০ ধনীর মোট সম্পদের পরিমাণ তার ৬ গুণেরও বেশি।

ফোর্বসের হিসাবে বিশ্বের শীর্ষ ১০ ধনী হচ্ছেন—এলন মাস্ক, জেফ বেজোস, বার্নার্ড আরনল্ট ও তার পরিবার, বিল গেটস, ল্যারি এলিসন, ল্যারি পেজ, সের্গেই ব্রিন, মার্ক জুকারবার্গ, স্টিভ ব্যালমার ও ওয়ারেন বাফেট।

২০২০ সালের মার্চ থেকে ২০২১ সালের নভেম্বর পর্যন্ত এসব ধনীদের সম্পদ সামগ্রিকভাবে বেড়ে ৭০ হাজার কোটি থেকে এক লাখ ৫০ হাজার কোটি ডলারে দাঁড়িয়েছে।

এসএইচ-১৯/১৮/২২ (অনলাইন ডেস্ক)