ঝিনুকের গর্ভে মুক্তার বঙ্গবন্ধু!

১২৩ ফুট উচ্চতায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য স্থাপন করে কিছু দিন আগে সাড়া ফেলেছিল ঝিনাইদহের কালীগঞ্জের এক আওয়ামী লীগ নেতার পরিবার। এবার ঝিনুকের গর্ভে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি তৈরি করে ব্যাপকভাবে সাড়া ফেলেছেন কোটচাঁদপুর উপজেলার এক কৃষি উদ্যোক্তা। পাশাপাশি মাছের সঙ্গে মুক্তাচাষ করে সফলতাও পেয়েছেন ড. নজরুল ইসলাম নামের ওই উদ্যোক্তা।

জানা গেছে, কোটচাঁদপুর উপজেলার কৃষক পরিবারের সন্তান নজরুল ইসলাম। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রাণিবিদ্যা বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শেষ করে ফিশারিজ বিষয়ে মাত্র তিন বছরের মধ্যেই পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। তারপর তিনি উচ্চশিক্ষার জন্য জাপানে পাড়ি জমান। গবেষণা করেন সামুদ্রিক প্রবালের ওপর জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব নিয়ে।

তিনি জাপানের সিজুওকা ইউনিভার্সিটি থেকে ডক্টর অব সায়েন্স ডিগ্রি অর্জন করেন। দেশে ফিরে যোগ দেন জাপানের আন্তর্জাতিক সংস্থা জাইকাতে। করোনা মহামারির কারণে চাকরি হারিয়ে গ্রামের ফিরে ৩ দশমিক ৩ একর জমিতে গড়ে তোলেন ‘রাইয়ান জৈব-কৃষি’ প্রকল্প। যার মধ্যে রয়েছে দুটি পুকুরসহ প্রায় ৩০ প্রজাতির ফলমূল, শাক-সবজি ও মসলা জাতীয় উদ্ভিদ। একটি পুকুরে দেশীয় প্রজাতির ঝিনুক সংরক্ষণ ও ঝিনুকের মাঝে মুক্তা চাষ শুরু করেন।

ড. নজরুল ইসলাম জানান, ‘রাইয়ান পার্ল হারবার’ প্রকল্পে ২ হাজার ঝিনুকে মুক্তা চাষ শুরু করেন। যা থেকে এ বছর ৮-১০ লাখ টাকার মুক্তা বিক্রি হবে বলে আশা করছেন তিনি। মুক্তা চাষের মাঝে পরীক্ষামূলকভাবে তিনি বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতির কাঠামো তৈরি করেছেন। ৮ মাসে তিনি সফলও হয়েছেন। ইতোমধ্যে তার পরীক্ষামূলক উৎপাদন করা ঝিনুকের মাঝে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি তৈরি হয়েছে। পাশপাশি কানের দুল, লকেট, আংটি, ব্যাচ, বাটনসহ নানা অলংকারের কাঠামো তৈরি করছেন।

ড. নজরুল ইসলাম বলেন, মাছের সঙ্গে মুক্তা চাষ করার জন্য ঝিনুকের জন্য বাড়তি কোনো খাবার দেওয়া হয় না। মাত্র ৭-৮ মাসেই ঝিনুকের মাঝে মুক্তা উৎপাদন সম্ভব। এটির ব্যবস্থাপনা খুব বেশি জটিল কিছু নয়। মুক্তা চাষে আমার মনে হলো জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে মুক্তায় ফুটিয়ে তোলা যায় কি না। এ জন্য আমি মুক্তার গর্ভে তার প্রতিকৃতির কাঠামো তৈরি করেছিলাম। দিনে দিনে সেই কাঠামো মুক্তায় পরিণত হয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি তৈরি হয়েছে। আমি এটা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উপহার দিতে চায়।

কোটচাঁদপুর উপজেলার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা সঞ্জয় কুমার জানান, উপজেলা কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে গত বছর ৬০ জন চাষিকে মুক্তা চাষের ওপর প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল। মুক্তা বাংলাদেশের অর্থনীতিতে ব্যাপক অবদান রাখতে পারে। তবে এর বাজার তৈরি করতে হবে। সম্ভাবনাময় এ খাতকে দেশব্যাপী ছড়িয়ে দিলে দেশের অর্থনীতি আরও সমৃদ্ধ হবে বলে মনে করছেন তিনি।

এসএইচ-০২/০৮/২২ (অনলাইন ডেস্ক)