একাত্তরের বর্বরতার জন্য পাকিস্তানকে ক্ষমা চাইতে হবে

অনেক দেরিতে হলেও পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের উপলব্ধি একাত্তরে মুক্তিকামী বাঙালির ওপর পাকিস্তানের বর্বরতার স্বীকৃতি। তবে, ১৯৭১ সালে ইতিহাসের নৃশংসতম হত্যাযজ্ঞের জন্য রাষ্ট্রটিকে ক্ষমা চাইতে হবে। বলছেন ইতিহাস ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকরা। ঢাকা ও ইসলামাবাদের কূটনৈতিক সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে পাকিস্তানকে ষড়যন্ত্রের কূটনীতি থেকে বেরিয়ে আসার আহ্বান তাদের।

দ্বিজাতিতত্ত্বের ভিত্তিতে ১৯৪৭ সালে হাজার মাইল দূরত্বের দুই ভূখণ্ড নিয়ে তৈরি হওয়া পাকিস্তান টিকে ছিল মাত্র ২৩ বছর। অবিচার আর শোষণ-বঞ্চনার প্রায় দুই যুগে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ স্বাধীনতার জন্য ছিল মরিয়া।

১৯৭০ সালে নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ জয়ের পর ক্ষমতা হস্তান্তরের বদলে ইতিহাসের নৃশংসতম হত্যাযজ্ঞ এ দেশের আপামর জনগণকে বাধ্য করেছিল যুদ্ধে নামতে। একাত্তরে রক্তাক্ত সংগ্রামের বাংলাদেশ স্বাধীন হলেও ৫০ বছরেও অতীত অপরাধের জন্য ক্ষমা চায়নি পাকিস্তান। বরং বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারী ও যুদ্ধাপরাধীদের সরাসরি মদত দিয়ে আসছে দেশটি।

অর্ধশতাব্দী পর সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বর্তমান বিরোধী রাজনৈতিক নেতা ইমরান খানের সেই সময়ের প্রশাসনের ভূমিকার তীব্র সমালোচনাকে ইতিবাচক রাজনীতির ধারা হিসেবে দেখছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকরা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মুহম্মদ রুহুল আমিন বলেন, অনেক দেরিতে হলেও ইমরান খান বিষয়টি বুঝতে পেরেছেন, এটা ঐতিহাসিক বাস্তবতা। ইমরান খান যদি প্রধানমন্ত্রী থেকে এ কথা বলতেন, তাহলে তার মরদেহ পাওয়া যেত।

যদিও ইতিহাস বিশ্লেষকরা মনে করেন, ’৭০-এর নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা হস্তান্তর করা হলেও বাংলাদেশের স্বাধীনতা অবশ্যম্ভাবী ছিল।

আন্তর্জাতিক জন-ইতিহাস ইনস্টিটিউটের সভাপতি অধ্যাপক মেসবাহ কামাল বলেন, ‘ইমরান খান তৎকালীন পাকিস্তান সরকারের সিদ্ধান্তগুলো ভুল ছিল বলেছেন। এটা একরকম পাকিস্তানের অপরাধের স্বীকৃতি। বিষয়টিকে আমি স্বাগত জানাই।

কিন্তু পাকিস্তান যে গণহত্যা চালিয়েছে, সেটা বলেননি। পাকিস্তান সরকারকে ক্ষমা চাইতে হবে। যেখানে পাকিস্তান সরকার ও বিরোধী দলের একমত থাকবে।’

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, বাংলাদেশ-পাকিস্তান কূটনৈতিক সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে ষড়যন্ত্রের কূটনীতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে পাকিস্তানকে।

এসএইচ-০৭/০২/২২ (অনলাইন ডেস্ক)