বাংলাদেশকে হারিয়ে নিউজিল্যান্ডের সিরিজ জয়

NAPIER, NEW ZEALAND - FEBRUARY 13: Martin Guptill of New Zealand celebrates scoring 100 runs during Game 1 of the One Day International series between New Zealand v Bangladesh at McLean Park on February 13, 2019 in Napier, New Zealand. (Photo by Kerry Marshall/Getty Images)

তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের মুখোমুখি হয় সফরকারী বাংলাদেশ।টাইগারদের দেওয়া ২২৭ রানের জয়ের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে মার্টিন গাপটিলের সেঞ্চুরিতে

দ্বিতীয় ম্যাচেও জয় তুলে নেয় স্বাগতিকরা।টস হেরে আগে ব্যাট করে ৪৯.৪ বলে সবকটি উইকেট হারিয়ে ২২৬ রান করে টাইগাররা। বিশেষ করে মার্টিন গাপটিলের কথা না বললেই নয়। প্রথম ওয়ানডের মতো দ্বিতীয় ওয়ানডেতেও তুলে নিলেন ব্যাক টু ব্যাক সেঞ্চুরি। তাতে হেসেখেলে এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ জিতল কিউইরা।

ব্যাট করতে নেমে উড়ন্ত সূচনা করে নিউজিল্যান্ড। শুভসূচনা এনে দেন মার্টিন গাপটিল ও হেনরি নিকোলস। দুরন্ত গতিতে জয়ের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলেন তারা।কিন্তু তাতে বাঁধা হয়ে দাঁড়ান মোস্তাফিজুর রহমান। নিকোলসকে লিটন দাসের তালুবন্দি করে সাজঘরে ফেরান তিনি। হেনরি নিকোলস ফিরে গেলেও থেকে যান গাপটিল।ব্যাট হাতে তার ঝড় চলে। সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন তিনি।৭৬ বলে ১১ চার ও ৪ ছক্কায় তিন অংকের ম্যাজিক ফিগার স্পর্শ করেন গাপটিল। এটি তার ক্যারিয়ারের ১৬তম সেঞ্চুরি।

এ নিয়ে ব্যাক টু ব্যাক তিন অংক ছোঁয়া ইনিংস খেললেন গাপটিল। তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে ১১৭ রানে অপরাজিত থেকে বিজয়ীর বেশে মাঠ ছাড়েন। শুরু থেকে স্ট্রোকের পসরা সাজান গাপটিল। তিনি ১১৮ রানে মুস্তাফিজের বলে লিটনের হাতে ধরা পড়ে ক্যাচ আউট হয়ে সাজঘরে ফিরেন।

শনিবার ক্রাইস্টচার্চের হ্যাগলি ওভালে টস জিতে প্রথমে বাংলাদেশকে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানান নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন। শুরুতেই নিউজিল্যান্ডের পেস তোপে পড়ে টাইগাররা। মাত্র ১ রান করে ট্রেন্ট বোল্টের শিকার হয়ে সাজঘরে ফেরেন লিটন দাস। এরপর বৃষ্টির জন্য মিনিট দশেক খেলা বন্ধ থাকার পর আবার শুরু হয়।এরপর ম্যাট হেনরির বলে এলবিডব্লিউ হয় তামিম ইকবাল। রিভিউ নিয়েও রক্ষা পাননি তিনি।

১৬ রানে দুই ওপেনারকে হারিয়ে শুরুতেই ধাক্কা খায় বাংলাদেশ। দলকে খেলায় ফেরাতে স্বাভাবিক খেলার চেষ্টা করেন সৌম্য সরকার ও মুশফিকুর রহিম। ভালোই খেলেন তারা। কলিন ডি গ্রান্ডহোমের বলে ওয়াইড স্লিপে দাঁড়িয়ে থাকা রস টেইলরকে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি। ফেরার আগে ২৩ বলে ২২ রান করেন বাঁহাতি ব্যাটার।

ঠিক পরের ওভারে স্লিপে ক্যাচ তুলে দেন মুশফিক। তবে ব্যক্তিগত ১৫ রানে টেইলরের কল্যাণে দ্বিতীয়বারের মতো জীবন ফিরে পান তিনি। দুইবার জীবন পেয়েও ৩৬ বলে ২৪ রানের বেশি করতে পারেননি মুশি। লুকি ফার্গুসনের বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন তিনি। ছয় নম্বরে ব্যাটিংয়ে নেমে টম অ্যাস্টলের বলে আউট হন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। এতে বিপর্যয়ে পড়ে বাংলাদেশ।

৯৩ রানে ৫ উইকেট হারানোর পর দলের হাল ধরেন মোহাম্মদ মিঠুন। তাকে যোগ্য সমর্থন দেন সাব্বির রহমান। দু’জনে দলের বিপর্যয় সামাল দেন। তাতে সামনে এগুতে থাকে সফরকারীরা। ব্যাক টু ব্যাক ফিফটি তুলে এগিয়ে চলেন মিঠুন। টম অ্যাস্টলের বলে সরাসরি বোল্ড হয়ে ফেরেন তিনি। ফেরার আগে ৬৯ বলে ৭ চার ও ১ ছক্কায় ৫৭ রানের নান্দনিক ইনিংস খেলেন এ মিডলঅর্ডার। তাতে ভাঙে ৭৫ রানের জুটি।

শেষদিকে ভরসা হয়ে দেখা দেন সাব্বির। শুরু থেকেই ভালো খেলতে থাকেন এই টাইগার ব্যাটসম্যান। কিন্তু হঠাৎই থেমে হয়ে যান তিনি। ফার্গুসনের বলে জেমস নিসামের অসাধারণ ক্যাচে পরিণত হন এ হার্ডহিটার। সাজঘরে ফেরার আগে ৬৫ বলে ৭ চারে লড়াকু ৪৩ রান করেন তিনি। তার আগে নিসামের শিকার হন মিরাজ।

সাব্বিরের বিদায়ের পর শেষের ব্যাটসম্যানরা প্রত্যাশিত ব্যাটিং করতে পারেননি। ফার্গুসনের বলে সোজা বোল্ড হয়ে ফেরেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে নিসামের শিকার হয়ে ফেরেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। শেষ পর্যন্ত ৪৯.৪ ওভারে ২২৬ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ। কিউইদের হয়ে ফার্গুসন নেন সর্বোচ্চ ৩ উইকেট। ২টি করে উইকেট নেন অ্যাস্টল ও নিসাড়ীয়।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

বাংলাদেশ: ৪৯.৪ ওভারে ২২৬/১০ (তামিম ৫, লিটন ১, সৌম্য ২২, মুশফিক ২৪, মিঠুন ৫৭, মাহমুদউল্লাহ ৭, সাব্বির ৪৩, মিরাজ ১৬, সাইফউদ্দিন ১০, মাশরাফি ১৩, মোস্তাফিজ ৫*; ফার্গুসন ৩/৪৩, নিশাম ২/২১, অ্যাস্টল ২/৫২, হেনরি ১/৩০, বোল্ট ১/৪৯, ডি গ্র্যান্ডহোম ১/২৫)

নিউজিল্যান্ড: ৩৬.১ ওভারে ২২৯/২ (নিকোলস ১৪, গাপটিল ১১৮, উইলিয়ামসন ৬৫*, টেলর ২১*, মোস্তাফিজ ২/৪২)

ম্যাচসেরা: মার্টিন গাপটিল

সিরিজ: ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে নিউজিল্যান্ড।

এসএইচ-০১/১৬/১৯ (স্পোর্টস ডেস্ক)