গোলাপি বলে টেস্ট খেলবে বাংলাদেশ!

ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) সভাপতি হিসেবে সৌরভ গাঙ্গুলি নির্বাচিত হওয়ার পরই কলকাতা টেস্টকে আকর্ষণীয় করতে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করছেন তিনি। ইতিমধ্যেই এই টেস্ট দেখতে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং নরেন্দ্র মোদিকে। আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে পশ্চিম বঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানর্জিকেও। একই সঙ্গে, ২০০০ সালে বাংলাদেশের অভিষেক টেস্টে খেলা দুই দেশের ক্রিকেট দলকেও আমন্ত্রণ জানাচ্ছেন সৌরভ।

শুধু তাই নয়, সৌরভ বিসিসিআইয়ের সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই জোর আলোচনা শুরু হয়, কলকাতায় বাংলাদেশ আর ভারত টেস্টটিকে দিবা-রাত্রির করা নিয়ে। ভারতীয় মিডিয়ায় বেশ আগে থেকেই এ নিয়ে ‘সম্ভাবনার খবর’। কিন্তু ভারতে এ নিয়ে অনেক বেশি আলোচনা হলেও, আলোচনা নেই বাংলাদেশে।

গত ২৪ ঘণ্টায় ব্যক্তিগত সম্পর্কের সূত্র ধরেই কলকাতার তিন-চারজন সাংবাদিক ফোন করে যখন জিজ্ঞাসা করলো, ‘আচ্ছা! তোমরা কি জান, কিংবা শুনছো- ভারত আর বাংলাদেশের যে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজের একটি টেস্ট নাকি হবে দিবা-রাত্রিতে? মানে গোলাপি বলে?’ তখন বলতে বাধ্য হলাম, ‘কই, আমরা তো এমন কোন খবর জানি না! বিসিসিআই কি আনুষ্ঠানিকভাবে কোন প্রস্তাব পাঠিয়েছে?

ভারতীয় সাংবাদিকদের দাবি, হ্যাঁ দিয়েছে। কারণ, কলকাতার মিডিয়ায় মোটামুটি চাউর হয়ে গেছে, ইডেন গার্ডেন্সে বাংলাদেশ আর ভারতের টেস্ট ম্যাচটির আকর্ষণ বাড়াতে ম্যাচটিকে দিবা-রাত্রির মানে গোলাপি বলে আয়োজনের চিন্তা চলছে।

তাদের সবার একটাই কথা, ‘সিএবি তথা বিসিসিআই বিশেষ করে দুই প্রতিষ্ঠানের বর্তমান প্রধান সৌরভ গাঙ্গুলি খুব করে চাচ্ছেন বাংলাদেশ আর ভারতের যে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ হবে, যেটা ওয়ার্ল্ড টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপেরও অংশ, তার অন্তত একটি টেস্ট যাতে দিবা-রাত্রিতে অনুষ্ঠিত হয়। অর্থাৎ লাল বলে নয়, খেলা হবে গোলাপি বলে।’

শুধু তাই নয়, কোলকাতায় মোটামুটি চাউর হয়ে গেছে, বাংলাদেশ আর ভারতের দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজের শেষ ম্যাচটি হবে নাকি ওই ফ্ল্যাডলাইটের আলোয়।’

কলকাতার মিডিয়ার দাবি, ইতোমধ্যে সৌরভ গাঙ্গুলি নাকি নাজমুল হাসান পাপন তথা বিসিবির কাছে আনুষ্ঠানিক প্রস্তাবও পাঠিয়ে দিয়েছেন।

পশ্চিম বঙ্গের প্রচার মাধ্যম প্রায় ধরেই নিয়েছে, যেহেতু বাংলাদেশ আর ভারতের কোলকাতা টেস্টটিকে স্মরণীয় করে রাখতে বাংলাদেশ ও ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। ২০০০ সালের নভেম্বরে বাংলাদেশের যে দলটি সৌরভ গাঙ্গুলির নেতৃত্বাধীন ভারতী দলের সাথে অভিষেক টেস্ট খেলেছিল, সেই দলটিকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। তাই ম্যাচটিকে আরও স্মরণীয় করে রাখতেই দিবা-রাত্রিতে টেস্ট আয়োজনের চিন্তা।

তবে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের কাছ থেকে এখন পর্যন্ত তেমন কোন খবর জানা যায়নি। বিসিসিআই সত্যিই বিসিবিকে কলকাতা টেস্ট দিবা-রাত্রির আয়েজনের প্রস্তাব দিয়েছে- এমন কোন খবর বোর্ড কর্তাদের কারো মুখে এখন পর্যন্ত শোনা যায়নি।

এ বিষয়ে জাগো নিউজের পক্ষ থেকে বিসিবির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে, ইতিবাচক সাড়াই পাওয়া গেছে। ইতিবাচক এই অর্থে যে, ব্যাপারটা বিসিবিও জানে বা তাদেরকে জানানো হয়েছে। আজ মধ্যাহ্নে বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দিন চৌধুরী সুজন জাগো নিউজকে জানিয়েছেন, ‘এখনও পর্যন্ত বিসিসিআইয়ের কাছ থেকে আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব না পেলেও আমরা শুনেছি, কলকাতা টেস্টকে ডে-নাইট করার পরিকল্পনা চলছে।’

যদি আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব পান, তাহলে কি করবেন? বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের তো ফ্লাড লাইটের আলোয় দিবা-রাত্রির টেস্ট খেলার অভিজ্ঞতা নেই। বিসিবি সিইও’র জবাব, ‘আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব আসলে, সোজা-সাপটা উড়িয়ে দেয়ার কোন অবকাশ নেই। যেহেতু এটা বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ এবং কলকাতা টেস্টকে আকর্ষণীয় করে তোলার নানা উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে, তাই যদি বিসিসিআই আনুষ্ঠানিকভাবে ডে-নাইট টেস্ট করার প্রস্তাব দেয়, তাহলে আমরা অবশ্যই বিবেচনা করে দেখবো এবং এ নিয়ে কোচ ও টিম ম্যানেজমেন্টের সাথে বসে সিদ্ধান্ত নেবো।’

সিইও’র কথায় পরিস্কার, টিম ম্যানেজমেন্ট চাইলে বিসিবি হয়তো রাজি হয়ে যাবে ডে নাইট ম্যাচ খেলতে।

এসএইচ-০৩/২৭/১৯ (স্পোর্টস ডেস্ক)