পাকিস্তানকে কাঁদিয়ে বিশ্বকাপের ফাইনালে অস্ট্রেলিয়া

পাকিস্তানকে কাঁদিয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে জায়গা করে নিলো অস্ট্রেলিয়া। আর তাতেই এই ফরম্যাটে নতুন চ্যাম্পিয়ন পেতে যাচ্ছে ক্রিকেট বিশ্ব। উড়তে থাকা পাকিস্তানকে অবশেষে টেনে মাটিতে নামাল অস্ট্রেলিয়া।

পাকিস্তানের দেওয়া বড় লক্ষ্য তাড়ায় শুরুটা করেন ডেভিড ওয়ার্নার আর শেষটা করেন মার্কুস স্টোয়িনিস ও ম্যাথু ওয়েড। তাতেই দারুণ জয়ে বিশ্বকাপের ফাইনাল নিশ্চিত করে অজিরা।

বৃহস্পতিবার দুবাই ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়ামে পাকিস্তানের বিপক্ষে ব্যাটিংয়ে নেমে ১৭৭ রানের চ্যালেঞ্জিং টার্গেট তাড়া করে ৫ উইকেট ও এক ওভার হাতে রেখেই জয়ের লক্ষ্যে পৌঁঁছে যায় অস্ট্রেলিয়া।

বলাই হয়ে থাকে ক্যাচ ড্রপ মানেই ম্যাচ ড্রপ। সেটার জ্বলজ্যান্ত উদাহরণ দেখা গেলো আজ। পুরো ম্যাচে পাকিস্তান যাই খেলুক, কিন্তু ১৯তম ওভারের দ্বিতীয় বলে এক ক্যাচ ড্রপেই পুরো ম্যাচের চালচিত্র পাল্টে গেলো।

অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটসম্যান ম্যাথ্যু ওয়েট শাহিন শাহ আফ্রিদর বলে ক্যাচ তুলেছিলেন ডিপ মিড উইকেটে। সেখানে ছিলেন হাসান আলি। কিন্তু ক্যাচটা ধরতে পারলেন না তিনি। ফেলে দিলেন। রান হলো ২। তখনও অস্ট্রেলিয়ার জয়ের জন্য দরকার ১৮ রান।

এরপরের গল্পটা শুধুই ম্যাথ্যু ওয়েডের। ক্যাচ ড্রপের ফলে যে জীবন পেলেন, তাকে কাজে লাগালেন পরের তিন বলে টানা তিনটি ছক্কা মেরে। তাও শাহিন শাহ আফ্রিদির মত বোলারকে।

এক ক্যাচ ড্রপের পর টানা তিন ছক্কাতেই সেমিফাইনালে শেষ হয়ে গেলো পাকিস্তানের বিশ্বকাপ স্বপ্ন। ৫ উইকেটে হেরে বিদায় নিতে হলো বিশ্বকাপ থেকে।

রীতিমত উড়তে থাকা পাকিস্তানকে টেনে মাটিতে নামিয়ে এনেছে অস্ট্রেলিয়া। দুবাইতে অনুষ্ঠিত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দ্বিতীয সেমিফাইনালে পাকিস্তানকে ৫ উইকেটের ব্যবধানে হারিয়ে ফাইনাল নিশ্চিত করলো অস্ট্রেলিয়ানরা।

পাকিস্তানের দেয়া ১৭৭ রানের লক্ষ্য ১ ওভার হাতে রেখেই পার হয়ে যায় অস্ট্রেলিয়া। শেষ মুহূর্তে মার্কাস স্টইনিজের ঝড়েই মূলতঃ পাকিস্তানকে হারিয়ে ফাইনালে পৌঁছে যায় অসিরা।

পাকিস্তানের করা ১৭৬ রান টপকে জয়ের জন্য ১৭৭ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নামার পর প্রথম ওভারেই শাহিন শাহ আফ্রিদির তোপের মুখে পড়ে অস্ট্রেলিয়া। প্রথম ওভারেই তারা হারায় অ্যারোন ফিঞ্চের উইকেট। পুরো ওভারেই বলতে গেলে তাণ্ডবলীলা চালান শাহিন আফ্রিদি।

দ্বিতীয় ওভার থেকেই খেলায় নিয়ন্ত্রন প্রতিষ্ঠা করে অস্ট্রেলিয়া। বিশেষ করে ডেভিড ওয়ার্নার। ইমাদ ওয়াসিম, হারিস রউফ, শাদাব খান, হাসান আলি- কাউকেই ছেড়ে কথা বলেননি ওয়ার্নার। বাউন্ডারি আর ছক্কার মারে ব্যাস্ত করে তোলেন পাকিস্তানি ফিল্ডারদের। তার সঙ্গে যোগ দেন মিচেল মার্শও। যদিও ৭ম ওভারে আউট হয়ে যান মার্শ। শাদাব খানের বলে শট খেলতে গিয়ে আকাশে বল তুলে দেন। ক্যাচ ধরেন আসিফ আলি।

ব্যাট করতে নামেন স্টিভেন স্মিথ। কিন্তু বরাবরেরমতই অফ ফর্মে তিনি। শাদাব খানকে ছক্কা মারতে গিয়ে ধরা পড়েন ফাখর জামানের হাতে। ৫ রান করে আউট হয়ে যান তিনি। ১১তম ওভারের প্রথম বলে আউট হন ওয়ার্নার। ততক্ষণে ৮৯ রান উঠে গেছে অস্ট্রেলিয়ার স্কোরবোর্ডে। ৩০ বলে ৪৯ রান করে আউট হয়ে যান ওয়ার্নার। ৩টি করে বাউন্ডারি আর ছক্কা মারেন তিনি।

ওয়ার্নার আউট হতেই যেন একটু থমকে যায় অস্ট্রেলিয়ার রানের গতি। ম্যাচে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে পাকিস্তান। কিন্তু মার্কাস স্টয়নিজ আর ম্যাথ্যু ওয়েড ধীরে ধীরে চেপে বসেন উইকেটে এবং ম্যাচ বের করতে থাকেন পাকিস্তানের হাত থেকে।

শেষ মুহূর্তে এসে তো টানা তিনটি ছক্কায় পাকিস্তানকেই টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় করে দিলেন ম্যাথ্যু ওয়েড। ক্যাচ ধরতে না পারার কারণে এখন পাকিস্তানের জাতীয় ভিলেনে পরিণত হবেন হাসান আলি।

এসএইচ-২২/১১/২১ (স্পোর্টস ডেস্ক)