শেষ টেস্ট খেলতে ক্রাইস্টচার্চে পৌঁছেছে বাংলাদেশ

নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম টেস্টে ইতিহাস গড়া জয়ের পর সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট খেলতে মাউন্ট মঙ্গানুই থেকে ক্রাইস্টচার্চে পৌঁছেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল।

জানা গেছে, মুমিনুলরা বৃহস্পতিবার সকালে ক্রাইস্টচার্চে পৌঁছায়। টিম টাইগার্সের কন্ডিশনিং কোচ নিক লি এক বার্তায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

প্রথম টেস্টে জয়ের পর থেকে বেশ ফুরফুরে মেজাজে আছেন ক্রিকেটাররা। বুধবার সারাদিন উদযাপনেই কাটান সবাই। পরে, আজ সকালে দ্বিতীয় টেস্ট ভেন্যুর উদ্দেশে রওয়ানা দিয়েছিলেন দলের সদস্যরা।

এর আগে পেসাররা হালকা জিম সেশনে অংশ নিলেও, বাকিরা ছিলেন বিশ্রামে। ক্রাইস্টচার্চে পৌঁছালেও বৃহস্পতিবারই মাঠে নামছেন না মুমিনুল-মুশফিকরা। শুক্রবার থেকে শেষ টেস্টের জন্য প্রস্তুতি শুরু করবে টিম বাংলাদেশ।

এদিকে, মাহমুদুল হাসান জয়ের ইনজুরিতে কপাল খুলতে যাচ্ছে নাঈম শেখের। দ্বিতীয় টেস্টে অভিষেক হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে তার। সিরিজে এক শূন্যতে এগিয়ে থাকায় আত্মবিশ্বাস তুঙ্গে আছে ডমিঙ্গো বাহিনীর।

টিম টাইগার্সের কন্ডিশনিং কোচ নিক লি বলেন, ‘আমরা আজ সকালে ক্রাইস্টচার্চে এসে পৌঁছেছি। ছেলেরা সবাই খুব ভালো মুডে আছে। বে ওভালের জয়টা আমাদের পুরো দলের চেহারাই বদলে দিয়েছে। সফরের শুরু থেকে আমরা বেশ চাপে ছিলাম। কোয়ারেন্টাইন নিয়ে দলের সবাই খুব দ্বিধায় ছিল। কিন্তু, এখন সব চেঞ্জ হয়ে গেছে। উইকেট এবং কন্ডিশন দেখে একাদশ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। জয়ের এ টেস্টে খেলার সম্ভাবনা খুব কম। সেক্ষেত্রে আমরা বিকল্পও ভেবে রেখেছি।’

২০১৯ সালে এই ক্রাইস্টচার্চেরই একটি মসজিদে সন্ত্রাসী হামলার পর সফর স্থগিত করেই ফিরতে হয়েছিল তামিম-মুশফিকদের। ওই সফরে তৃতীয় ও শেষ টেস্ট না খেলেই সিরিজের মাঝপথে দেশে ফিরে আসে বাংলাদেশ। অবশেষে সেই ক্রাইস্টচার্চেই আবারও খেলতে গেল মুমিনুলরা। যদিও এর আগে গত বছরও সেখানে আরেকবার সফর করেছিল।

নিউজিল্যান্ডে ঐতিহাসিক এক জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। কিউইদের মাটিতে এর আগে কোনো ফরম্যাটেই জিতেনি টাইগার বাহিনী। সেই গেরো কাটল ক্রিকেটের অভিজাত সংস্করণ দিয়েই, তাও আবার ৮ উইকেটের বড় ব্যবধানে। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে এই জয়ে অনেক প্রথমের জন্ম দিয়েছে বাংলাদেশ। দেশের বাইরে টপ পাঁচ টেস্টখেলুড়ে দেশের বিপক্ষে প্রথম জয়ও এটি।

এদিকে, ঐতিহাসিক জয়ের পর টাইগার কান্ডারি মুমিনুল হক কৃতিত্ব দিলেন দলগত পারফরম্যান্সকেই। ম্যাচশেষে এক প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, দুই দলই ম্যাচটি জেতার জন্য মরিয়া ছিল। তবে আমরা আমাদের বোলারদের দারুণ নৈপুণ্যে ম্যাচে এগিয়ে গিয়েছি। এবাদত-তাসকিনরা দুই ইনিংসেই অসাধারণ পারফরম্যান্স দেখিয়েছে। বিশেষ করে এবাদত অবিশ্বাস্য ছিল।

মুমিনুল বলেন, সবশেষ কয়েকটা টেস্ট ম্যাচে আমরা ভালো করতে পারছিলাম না। আর তাই নতুন বছরে ঘুরে দাঁড়ানোর তাড়না ছিল। অবশেষে সেটা পেরেছি। তবে এ মুহূর্তে জয়টা আপাতত ভুলে যেতে চাই। আমাদের এখন সব ভাবনা দ্বিতীয় তথা ক্রাইস্টচার্চ টেস্ট ঘিরে।

অন্যদিকে নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক টম লাথাম নিজেদের ব্যর্থতার কথাই তুলে ধরলেন। তিনি বলেন, তিন ফরম্যাটের কোনো ফরম্যাটেই আমরা ভালো করতে পারিনি। বাংলাদেশ আমাদের দেখিয়ে দিয়েছে কীভাবে এমন উইকেটে মানিয়ে নিতে হয়। তারা ব্যাটিংয়ে দারুণ পার্টনারশিপ গড়েছে। এ ছাড়া বল হাতেও আঁটসাঁট বোলিং করে আমাদের ব্যাটারদের ওপর বাড়তি চাপ তৈরি করেছিল, আমরা যা পারিনি।

মাউন্ট মঙ্গানুইয়ের উইকেট নিয়ে টম লাথাম বলেন, এখানে মাত্র দুটি টেস্ট ম্যাচ হয়েছে। দুটিই একই রকম হয়েছে। আমাদের ধারণার চেয়েও কিছুটা মন্থর ছিল পিচ। তিনি বলেন, প্রথম ইনিংসে আমরা যদি ৪৫০-এর বেশি স্কোর গড়তে পারতাম, তাহলে হয়তো গল্পটা অন্যরকমও হতে পারত। পাঁচ দিন ধরে বাংলাদেশ যেভাবে খেলেছে, তাদের কৃতিত্ব দিতেই হবে। এ জয়ের যোগ্য ছিল তারা।

এসএইচ-০৫/০৬/২২ (স্পোর্টস ডেস্ক)