টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ: কার ঘরে কয়টি শিরোপা?

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের সর্বকনিষ্ঠ সংস্করণ টি-টোয়েন্টির প্রথম বিশ্ব আসর বসে ২০০৭ সালে। সেবার পাকিস্তানকে ফাইনালে হারিয়ে শিরোপা ঘরে তোলে ভারত। এরপর একে একে হয়ে গেছে সাতটি বিশ্ব আসর। পাকিস্তানও আক্ষেপ মিটিয়ে এ সংস্করণে জিতেছে বিশ্বকাপ ট্রফি। কিন্তু আক্ষেপ মেটেনি প্রথম আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি খেলে ইতিহাসের অংশ হওয়া নিউজিল্যান্ডর। অন্যদিকে আধিপত্য দেখিয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। চ

আগামী অক্টোবরে অস্ট্রেলিয়ায় বসতে যাচ্ছে অষ্টম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আসর। এর আগে দক্ষিণ আফ্রিকা, ইংল্যান্ড, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ, ভারত ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে আয়োজিত হলেও এবারই প্রথম ওশেনিয়া মহাদেশের কোনো দেশে জাঁকজমকপূর্ণ আসরটি আয়োজিত হতে যাচ্ছে। আসরকে ঘিরে ইতোমধ্যে শুরু হয়ে গেছে উন্মাদনা। এদিকে ক্রিকেট সমর্থকদের মনে প্রশ্ন এবারের ট্রফি ঘরে তুলতে যাচ্ছে কারা?

অস্ট্রেলিয়ার সাবেক অধিনায়ক রিকি পন্টিং এমন প্রশ্নে এগিয়ে রেখেছেন নিজ দেশকেই। অন্যরাও যে চ্যাম্পিয়নের দাবি থেকে নিজেদের সরিয়ে রাখছে বিষয়টা এমনও না। অস্ট্রেলিয়া বিশ্বকাপ কারা ঘরে তুলবে, সে আলোচনা না হয় এখন থাক। যোগ্য দাবিদার কারা সে উত্তর সমর্থকরা জানতে পারবেন আগামী ১৩ নভেম্বর। তার আগে জেনে নেয়া যাক আগের সাত আসরে কে কে আধিপত্য দেখিয়ে তাদের ঘরে তুলেছিল বিশ্বকাপ নামক সোনার হরিণটি?

টি-টোয়েন্টির প্রথম বিশ্ব আসর বসে ২০০৭ সালে দক্ষিণ আফ্রিকায়। সে আসরের সবাইকে অবাক করে দিয়ে ফাইনাল খেলে এশিয়ার দুই পরাশক্তি ভারত ও পাকিস্তান। দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর হাড্ডাহাড্ডি লড়াই শেষে ৫ রানের জয় নিয়ে টি-টোয়েন্টি ইতিহাসের প্রথম বিশ্বকাপ শিরোপা ঘরে তুলে ভারত। পরের আসর বসে ২০০৯ সালে ইংল্যান্ডে। এবারও আধিপত্য এশিয়ার। ফাইনালে পাকিস্তানের প্রতিপক্ষ শ্রীলঙ্কা। ক্রিকেটের মক্কাখ্যাত লর্ডসে এবার শিরোপার আক্ষেপ ঘুচিয়ে আনন্দে মেতে ওঠে পাকিস্তান । জয় তুলে নেয় ৮ উইকেটের বড় ব্যবধানে। এক বছর পর জাঁকজমকপূর্ণ আসরটি বসে ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জে। ক্রিকেটর দুই পরাশক্তির অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ড মুখোমুখি হয় ফাইনালে।

৭ উইকেটের জয় তুলে নিয়ে প্রথমবার যে কোনো সংস্করণে বিশ্বকাপ ঘরে তোলার কীর্তি অর্জন করে ইংলিশরা। টি-টোয়েন্টির ক্রিকেটের যাত্রাটা প্রথম ২০০৩ সালে চালু হয় ইংল্যান্ডের ঘরোয়া আসরে। আর প্রথম আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ম্যাচের সঙ্গেও তাদের নামটা জড়িয়ে আছে। অথচ এ সংস্করণে তারা সফলতা পেয়েছে তৃতীয় দেশ হিসেবে। ২০১২ সালে প্রথমবার এশিয়ার কোনো দেশ হিসেবে বিশ্বকাপ আয়োজন করে শ্রীলঙ্কা। আগের আসরের আয়োজক ওয়েস্ট ইন্ডিজ নিজ দেশে সফলতা না পেলেও, তারা দাপট দেখিয়েছে লঙ্কা দ্বীপে।

শ্রীলঙ্কাকে ফাইনালে ৩৬ রানের ব্যবধানে হারিয়ে জিতে নেয় নিজেদের প্রথম সংক্ষিপ্ত সংস্করণে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। ওয়ানডে ক্রিকেটের প্রথম দুই আসরের চ্যাম্পিয়নদের জন্য টি-টোয়েন্টিতে অপেক্ষাটা তুলনামূলক বেশিই ছিল। এরপর ২০১৪ সালে এককভাবে কোনো বিশ্বকাপ আসর আয়োজনের গৌরব অর্জন করে বাংলাদেশ। মিরপুরে এ আসরের ফাইনালে ভারতকে ৬ উইকেটের ব্যবধানে হারিয়ে দুই বারের রানার্স আপরা আক্ষেপ ঘোচান কাঙ্ক্ষিত শিরোপার। মজার বিষয় হচ্ছে, ২০১০ থেকে ২০১৪, এ তিন আসরে আগের আয়োজকরা চ্যাম্পিয়ন হচ্ছিল পরের আসরে গিয়ে। কিন্তু সে ভাগ্য হয়নি বাংলাদেশের।

২০১৬ সালে প্রথমবার ভারতে আয়োজিত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ক্যারিবীয়দের দাপট আরেকবার দেখে বিশ্ব। ফাইনালে ইংল্যান্ডকে শ্বাসরুদ্ধকর এক ম্যাচে শেষ ওভারের প্রথম চার বলে টানা চারটি ছক্কা হাঁকিয়ে ৪ উইকেটের জয় তুলে নেয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ওয়ানডেতে দুই বারের চ্যাম্পিয়নরা জোড়া শিরোপা ঘরে তুলে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও। পরের আসর পাঁচ বছর পর সংযুক্ত আরব আমিরাতে আয়োজন করে ভারত। এবার নিউজিল্যান্ডকে ফাইনালে ৮ উইকেটের ব্যবধানে হারিয়ে প্রথম টি-টোয়েন্টি শিরোপা ঘরে তুলে ওয়ানডেতে পাঁচ বারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া।

এক নজরে সাতটি বিশ্বকাপ আসর:

২০০৭, দক্ষিণ আফ্রিকা
চ্যাম্পিয়ন: ভারত
রানার্স আপ: পাকিস্তান

২০০৯, ইংল্যান্ড
চ্যাম্পিয়ন: পাকিস্তান
রানার্স আপ: শ্রীলঙ্কা

২০১০, ওয়েস্ট ইন্ডিজ
চ্যাম্পিয়ন: ইংল্যান্ড
রানার্স আপ: অস্ট্রেলিয়া

আরও পড়ুন: আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে সবচেয়ে দ্রুততম ফিফটি কার?

২০১২, শ্রীলঙ্কা
চ্যাম্পিয়ন: ওয়েস্ট ইন্ডিজ
রানার্স আপ: শ্রীলঙ্কা

২০১৪, বাংলাদেশ
চ্যাম্পিয়ন: শ্রীলঙ্কা
রানার্স আপ: ভারত

২০১৬, ভারত
চ্যাম্পিয়ন: ওয়েস্ট ইন্ডিজ
রানার্স আপ: ইংল্যান্ড

২০২১, সংযুক্ত আরব আমিরাত
চ্যাম্পিয়ন: অস্ট্রেলিয়া
রানার্স আপ: নিউজিল্যান্ড

এসএইচ-১৮/২৮/২২ (স্পোর্টস ডেস্ক)