বাঘ-সিংহের লড়াইয়ের অপেক্ষায় ক্রিকেটপ্রেমীরা!

দরজায় কড়া নাড়ছে ইংল্যান্ড-বাংলাদেশ ওয়ানডে সিরিজ। ঘরের মাঠে বাঘ-সিংহের সমানে সমান লড়াই দেখার অপেক্ষায় ক্রিকেটপ্রেমীরা। চলুন দেখে নেওয়া যাক, দুই দলের পারফরমেন্সের পরিসংখ্যান।

প্রথমেই আসা যাক অতিথি দল থ্রি লায়ন্সদের কথায়। অভিজাত ইংল্যান্ড দল এবার এসেছে নির্ধারিত সময়ের প্রায় দেড় বছর পর। সিরিজটি হওয়ার কথা ছিল ২০২১-এর সেপ্টেম্বরে। সে সময় চলছিল কোভিডের দাপট। ফলে কোভিড প্রটোকলে কোনো ছাড় দেয়নি বিসিবি। তাই, নাক উঁচু ইংলিশরা সে সময়ে আসেনি।

টাইগারদের মোকাবিলায় থ্রি লায়ন্সরা এসেছে পূর্ণ শক্তির দল নিয়েই। গেল ১০ বছরে ওয়ানডেতে যারা নিজেদের নিয়ে গেছে অনন্য উচ্চতায়। শেষ দশকের সবচেয়ে ধারাবাহিক আর দাপুটে দলটার নাম ইংল্যান্ড। টেস্টের অভিজাত দল হিসেবে পরিচিত থ্রি-লায়ন্সরা ২০১৯ সালে প্রথমবারের মতো বিশ্বচ্যাম্পিয়নের মুকুট পরে।

ওয়ানডে ফরমেটে বাংলাদেশও কিন্তু কম যায় না। ঘরের মাঠে রীতিমতো বাঘের মতো খেলে তামিম বাহিনী। ওয়ানডেতে টাইগারদের ধারাবাহিক পারফরমেন্সের কারণে যেকোনো দলই সমীহ করে চলে। সবশেষ ২০ ম্যাচের ১৪টিতে জয়, তারই প্রমাণ। গেল ডিসেম্বরে লিটনের নেতৃত্বে শক্তিশালী ভারতকে হারিয়ে সিরিজ জিতে বাংলাদেশ।

তবে ইংলিশদের বিপক্ষে টাইগারদের ওয়ানডে রেকর্ড মোটেই সুবিধার না। নিজেদের প্রিয় ফরমেটে ২১ বার ইংল্যান্ডের মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ। এর চারটিতে জয়ের বিপরীতে, টাইগারদের হার ১৭টিতে।

ইংলিশদের সঙ্গে লাল-সবুজের প্রতিনিধিদের প্রথম দেখা হয়, নাইরোবিতে ২০০০ সালে। আট উইকেটে হেরে সে যাত্রা শেষ করেন দুর্জয়-পাইলটরা।

দেশের মাটিতে ইংলিশদের বিপক্ষে টাইগারদের প্রথম দেখা ২০০৩ সালের নভেম্বরে। চট্টগ্রামে সে ম্যাচে ব্যাটিং ব্যর্থতায় ৭ উইকেটে হারে বাংলাদেশ। মাইকেল ভন-অ্যান্ড্রু ফ্লিনটফদের বিপক্ষে প্রথম তিন ম্যাচের সিরিজটায় হোয়াইটওয়াশ হয় খালেদ মাহমুদ সুজনের দল।

ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টাইগারদের জয়ের অপেক্ষা ফুরায় ২০১০ সালে এসে। দ্বিপক্ষীয় সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেটি ছিল, দুই দলের ১৩তম সাক্ষাৎ। ব্রিস্টলে মাশরাফীর অলরাউন্ড নৈপুণ্যে, ৫ রানে জয় তুলে নেয় বাংলাদেশ।

পরের জয়টি আসে ২০১১ বিশ্বকাপে। প্রথমবার বিশ্বকাপের আয়োজক তকমা মেখে, চট্টগ্রামে থ্রি-লায়ন্সদের ২২৫ রানে অলআউট করে বাংলাদেশ। ইমরুল কায়েসের ৬০ রানের সুবাদে, ২ উইকেটে জয় পায় টাইগাররা।

এরপর চার বছর আর দেখা হয়নি দুদলের। তবে বিশ্বকাপে বাংলাদেশের মাঝে পথের নতুন কাঁটার সন্ধান পায় ইংলিশরা। ২০১৫ বিশ্বকাপের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে মাহমুদুল্লাহর সেঞ্চুরিতে, ২৭৫ রানের স্কোর গড়ে বাংলাদেশ। রুবেল হোসেনের দারুণ বোলিংয়ে, ২৬০ রানে ইংলিশদের অলআউট করে, প্রথমবারের মত কোয়ার্টার ফাইনালে জায়গা করে নেয় টাইগাররা।

পরের বছর দ্বিপক্ষীয় সিরিজ খেলতে ঢাকায় আসে ইংল্যান্ড দল। তিন ম্যাচের সিরিজে প্রথম ওয়ানডে ২১ রানে হারলেও, মিরপুরে দ্বিতীয় ম্যাচে বাটলার-স্টোকসদের ২০৪ রানে আটকে দেয় টাইগাররা। ক্যাপ্টেন মাশরাফীর অলরাউন্ড পারফর্মেন্সে, জয় তুলে নেয় ৩৪ রানে। কিন্তু তৃতীয় ম্যাচে হেরে আর সিরিজ জেতা হয়নি সাকিব-তামিমদের।

এরপর আরও দুটি ম্যাচ খেলে, বড় হারের মুখ দেখে বাংলাদেশ। তবে শেষ চার বছরে কিন্তু দেখা হয়নি বাঘ-সিংহের। সব মিলিয়ে ২২ বছরে চারটি সিরিজ খেলেছে বাংলাদেশ ও ইংল্যান্ড। এর একটিতেও শিরোপার দেখা পায়নি লাল-সবুজরা। এবার নিজের ডেরায় সিংহকে বধ করতে পারবে কি বাঘের দল, সেটাই এখন দেখার বিষয়।

উল্লেখ্য, মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে আগামী ১ মার্চ থেকে শুরু হবে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ। যেখানে সর্বনিম্ন মাত্র ২০০ টাকার বিনিময়ে দেখা যাবে ম্যাচ। আর দর্শকদের সর্বোচ্চ গুনতে হবে ১৫০০ টাকা। এবার টিকিটকে পাঁচ ক্যাটাগরিতে বিভক্ত করেছে বিসিবি। সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত শহীদ সোহরাওয়ার্দী ইনডোর স্টেডিয়ামের বুথে টিকিট পাবেন দর্শকরা।

এ ছাড়া ৩০০ টাকায় দর্শকরা নর্থ অথবা সাউথ স্ট্যান্ডের টিকিট পাবেন। ৫০০ টাকায় ক্লাব হাউজ এবং ১০০০ টাকায় ভিআইপি স্ট্যান্ডের টিকিট কেটে খেলার দেখার সুযোগ থাকবে।

এসএ-১৮/২৭/০২ (স্পোর্টস ডেস্ক)