ভারতের সঙ্গে টাই করল বাংলাদেশ

মেহরাব হোসেন অপির কথা মনে হচ্ছিল কি ফারজানা হকের? ওয়ানডেতে বাংলাদেশের পক্ষে প্রথম সেঞ্চুরি করেও হারতে হয়েছিল বিশ্বকাপে প্রথম ফিফটি উপহার দেওয়া ওপেনারকে। শনিবার ভারতের বিপক্ষে নারী ওয়ানডেতে বাংলাদেশকে প্রথম সেঞ্চুরি করেছেন ফারজানা। তাঁর সেঞ্চুরিতে ২২৫ রান করেও হারের ভয় পেয়ে বসেছিল স্বাগতিক দল।

বাংলাদেশ হারেনি, তবে জয়ও পায়নি। মহানাটকীয় এক ম্যাচে শেষের ঝড়ে ম্যাচ টাই করেছে বাংলাদেশ। ২৪ রানে শেষ ৬ উইকেট হারিয়েছে ভারত। ফলে তিন ম্যাচের সিরিজ সমতাতেই (১-১) শেষ হলো। নারী ওয়ানডেতে এটি নবম টাই ম্যাচ, বাংলাদেশের প্রথম।

৩ উইকেটে ১৬০ রান তোলা ভারত পরে কিছু উইকেট হারালেও ভালোভাবেই জয়ের পথে ছিল। কিন্তু নাহিদা আক্তারের বাঁহাতি স্পিনে ৪৮তম ওভারে ২ উইকেট হারাল ভারত। আগের ওভারের শেষ বলেই আমানজোত কৌরকে ফিরিয়ে শুরুটা করেছিলেন রাবেয়া। জয় থেকে ৯ রান দূরে নবম উইকেট হারায় ভারত। নাহিদার শেষ দুই বলে কোনোমতে উইকেট টিকিয়ে রাখেন মেঘনা সিং।

অন্য প্রান্তে দ্বিতীয় ম্যাচের সেরা জেমাইমা রদ্রিগেজ ছিলেন ৩১ রানে। সুলতানার ওভারের তৃতীয় বলে সিঙ্গেল নিলেন রদ্রিগেজ। পঞ্চম বলে মিড উইকেট দিয়ে চার মারলেন মেঘনা। পরের বলে সিঙ্গেল। শেষ ওভারে ৩ রান দরকার ছিল ভারতের।

শেষ ওভারে বল পান মারুফা। যার স্পেলের প্রথম বলেই অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতি ক্যাচ না ফেললে ম্যাচ হতো এত দূর গড়াত না। শেষ ওভারের প্রথম বলে সিঙ্গেল, স্ট্রাইকে জেমাইমা। দ্বিতীয় ওভারে আবার সিঙ্গেল। স্কোরে সমতা।

৪ বলে ১ রান দরকার। এই অবস্থায় মারুফার বল থার্ডম্যানে পাঠাতে গিয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন মেঘনা। টাই করেও জয়ের আনন্দে মাতে বাংলাদেশ।

এর আগে স্মৃতি মান্ধানার ৫৯ ও হারলীন দেওলের ৭৭ রানে ৩০ ওভারের মধ্যেই ৩ উইকেটে ১৩৯ রান তুলে ফেলে ভারত। এর মধ্যে মান্ধানা অবশ্য ১ রানেই ফিরতে পারতেন। নিজের প্রথম বলেই মান্ধানাকে ক্যাচ দিতে বাধ্য করেছিলেন মারুফা। কিন্তু জ্যোতি ক্যাচটি ফেলে দেন। সে ওভারের পঞ্চম বলেই দুর্দান্ত ক্যাচে শেফালি ভার্মাকেকে ফেরান মারুফা নিজেই।

ভারত তবু বেশ দ্রুত রান তুলছিল। পঞ্চম ওভারে যস্তিকা ভাটিয়া ফেরার পরও পাওয়ার প্লেতে ৫৯ রান তুলেছে ভারত। ২৯তম ওভারে মান্ধানা ফেরেন। দলকে ১৬০ রানে রেখে ফেরেন হারমানপ্রীত কৌরও। কিন্তু দেওল ও জেমাইমা তো ছিলেন। দুজনে মিলে ৩১ রান এনে দিয়েছিলেন ৪৬ বলে। শেষ ৫৩ বলে ৩৫ রান দরকার ছিল ভারতের।

প্রথমে রানআউট হলেন দেওল। নেমেই ফিরলেন দীপ্তি শর্মা। ১ রানের মধ্যে ২ উইকেট হারাল ভারত। বাংলাদেশের আশা জাগিয়েও একটু পরে হারিয়ে যাওয়ার দশা। আমানজোতকে নিয়ে ৫ ওভারে ২৪ রান তুলে ফেললেন জেমাইমা।

৪ উইকেট হাতে ১৯ বলে ১০ রান দরকার ভারতের। এই অবস্থায় রাবেয়ার লেগ সিন এলবিডাব্লিউ করে দিল আমানজোতকে। পরের ওভারে তিন বলের মধ্যে স্নেহ ও দেবিকাকে ফ্লাইটে বিভ্রান্ত করে নিজের কাছেই ক্যাচ দেওয়াতে বাধ্য করলেন নাহিদা। এরপর তো সে নাটকীয়তা। নির্ধারিত সময় শেষ হয়ে যাওয়ায় সুপার ওভার আর করা যায়নি।

এসএইচ-০৩/২২/২৩ (স্পো্টস ডেস্ক)