নাটকীয় জয়ে ফাইনালে মেসির মায়ামি

মেসি গোল করেন, সতীর্থদের দিয়ে গোল করিয়ে মাতেন উচ্ছ্বাসে। এটা ধারাবাহিক নাটকেরই অংশ। তবুও মেসি মানেই যেন ভিন্ন এক রোমাঞ্চ, প্রত্যাবর্তনের গল্প। তবে আজকের এটাকে কী বলবেন, মাস্টারস্ট্রোক? বলতেই পারেন। কারণ, মাঠে আর্জেন্টাইন সুপারস্টার মেসি মানেই যেন জীবন্ত কিংবদন্তির সান্নিধ্যে কিছুক্ষণ। মেসির অতিমানবীয় পারফরম্যান্সে ইউএস ওপেন কাপ ফুটবলের সেমিফাইনালে সিনসিনাটিকে টাইব্রেকারে ৫-৪ গোলে হারিয়ে আরও একটি শিরোপা জয়ের লক্ষ্যে একধাপ এগিয়ে গেল ইন্টার মায়ামি।

সেমিফাইনালে তখন অতিরিক্ত সময়ের খেলা চলছে। ২-১ গোলে এগিয়ে এফসি সিনসিনাটির জয় তখন প্রায় নিশ্চিতই! তবে মেসির রোমাঞ্চ তখনও বাকিই ছিল। ফুটবলের ঈশ্বর যেন মেসির পায়েই ভর করেন! তাই তো শেষ বাঁশি বাজার মিনিট দুয়েক আগেই চমক দেখালেন মেসি। বাঁ প্রান্ত থেকে আর্জেন্টাইন মহাতারকার নেওয়া নিখুঁত ক্রস এমনভাবে মায়ামি ফরোয়ার্ড লিওনার্দো কাম্পানার মাথায় গিয়ে পড়ল, যেন প্লেটে আপনমনে বরণডালা সাজালেন সাতবারের ব্যালন ডি’অর জয়ী লিও। আর নিখুঁত দক্ষতায় বাকি কাজটা সারলেন কাম্পানা।

ঠিকঠাক মতো হেডটা করেই শিরোপা উঁচিয়ে ধরার নিভে যাওয়া স্বপ্নকে পুনর্জীবিত করলেন কাম্পানা। এই গোলেই রেফারির বাঁশি বাজার ঠিক আগমুহূর্তে সমতায় ফেরে মায়ামি। তবে গোলদাতা কাম্পানা হলেও মূল কৃতিত্ব মেসিকেই দেবেন সবাই। ২-২ গোলে মায়ামি সমতায় ফেরার পর অতিরিক্ত সময়ে গড়ায় ম্যাচ।

অতিরিক্ত সময়েও জালের দেখা পায় দুদল। ম্যাচের ৯৩তম মিনিটে বক্সের ভেতর থেকে দারুণ এক শটে গোল করে মায়ামিকে ৩-২ গোলে এগিয়ে দেন হোসেফ মার্তিনেজ। তবে নাটকের অনেকটা তখনও বাকি। ম্যাচের ১১৪ মিনিটে সুবিধা মতো জায়গায় বল পেয়ে ডান পায়ের বাঁকানো শটে গোল করে সিনসিনাটিকে ৩-৩ সমতায় ফেরান জাপানি অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার ইয়ুয়া কুবো। শেষ পর্যন্ত ৩-৩ গোলে অমীমাংসিত থাকে ম্যাচ। এরপর টাইব্রেকার রোমাঞ্চে এফসি সিনসিনাটিকে ৫-৪ ব্যবধানে হারিয়ে ফাইনালে উঠেছে মেসি বাহিনী।

এর আগে, বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সময় ভোরে টিকিউএল স্টেডিয়ামে ম্যাচের ১৮ মিনিটে লুসিয়ানো অ্যাকোস্টার গোলে লিড পায় সিনসিনাটি। বিরতির পর পাল্টা আক্রমণ থেকে ৫৩ মিনিটে স্বাগতিকদের আরেক ধাপ এগিয়ে নেন ব্র্যান্ডন ভাজকুয়েজ।

জোড়া গোল হজমের পর ম্যাচে ফেরার আপ্রাণ চেষ্টা করে মায়ামি। ম্যাচের ৬৮ মিনিটে মেসির ক্রসে হেডে গোল করে ব্যবধান কমান লিওনার্দো কাম্পানা। যোগ করা সময়ের সপ্তম মিনিটে মেসির অ্যাসিস্টেই আবারও হেডে গোল করেন ক্যাম্পানা।

প্রথম পেনাল্টি শ্যুট-আউটে সিনসিনাটির হয়ে কুবো ও মায়ামির হয়ে মেসি লক্ষ্যভেদ করেন। পরের তিন শটেও সফল উভয় দল। তবে সিনসিনাটির নিক হ্যাগ্লান্ডের নেওয়া পঞ্চম শটটি রুখ দেন মায়ামির গোলরক্ষক। তবে ডান পায়ের কোণাকুণি শটে লক্ষ্যভেদ করে মায়ামিকে ফাইনালের টিকিট এনে দেন বেঞ্জামিন ক্রেমাসচি।

এসএ-১০/০৮/২৩ (স্পোর্টস ডেস্ক)