হ্যাটট্রিক হারের পর বিশ্বকাপে প্রথম জয় শ্রীলঙ্কার

টার্গেট বড় ছিল না মোটেই। বিশ্বকাপে শ্রীলঙ্কাকে বড় জয়ের ভিত আগেই এনে দিয়েছিলেন তাদের বোলাররা। তবে ২৬৩ রানের সেই টার্গেট পার করতেই লঙ্কানদের ঘাম ছুটলো অনেকখানি। তবে শেষ পর্যন্ত জয় এসেছে। বিশ্বকাপের চতুর্থ ম্যাচে এসে প্রথম জয়ের দেখা পেয়েছে ‘৯৬ এর বিশ্বকাপজয়ীরা। ৫ উইকেটের জয়ে পয়েন্ট টেবিলে যুক্ত হলো দুই পয়েন্ট।

লখনৌর একানা স্টেডিয়ামের ব্যাটিং পিচ হিসেবে খ্যাতি আছে। দুই পয়েন্ট নিশ্চিতের পাশাপাশি তাই রানরেটের দিকেও মনোযোগ দেওয়ার কথা ভাবতেই পারতো লঙ্কানরা। তবে ম্যাচ জেতার দিকে নজর দিতে গিয়েই কিনা খেললো ধীরগতির ইনিংস। বিশ্বকাপে যখন ৩০০ এরে উপর রান উঠছে হরহামেশা, সেখানে ২৬৩ রান করতেই শ্রীলঙ্কা খেলেছে ৪৯ ওভার পর্যন্ত।

বিশ্বকাপে নিজের প্রথম ম্যাচটা খারাপ কাটলেও ধীরে ধীরে নিজেকে ফিরে পেতে শুরু করেছেন পাথুম নিশাঙ্কা। আগের দুই ম্যাচের মত এই ম্যাচেও পেয়েছেন ফিফটি। যদিও তার সঙ্গী কুশাল পেরেরার শুরুটা ভাল হয়নি। ব্যক্তিগত ৫ আর দলীয় ১৮ রানেই থেমেছে তার রানের চাকা। দাসুন শানাকার ইনজুরির কারণে কুশাল মেন্ডিস এসেছেন অধিনায়কের দায়িত্বে। তিনিও ব্যর্থ হয়েছেন বড় ইনিংস করতে। ১৭ বলে করেছেন ১১ রান। দুজনেই ফিরেছেন আরিয়ান দত্তের বলে। পাওারপ্লের আগেই নেই দুই উইকেট।

ইনিংস মেরামতের কাজটা করেছেন নিশাঙ্কা এবং সাদিরা সামারাবিক্রমা। দুজনে ধীরগতির ইনিংস খেললেও উইকেট হারাতে দেননি। এরইমাঝে ফিফটি পেয়েছেন নিশাঙ্কা। এটি তার টানা তৃতীয় ফিফটি। যদিও আগের দুইবারের মত এবারেও ইনিংস বড় করা হয়নি। ব্যক্তিগত ৫৪ রান করে পল ভ্যান মিকেরেনের বলে ফিরে যান সাজঘরে।

জয় তখনও দূরের বাতিঘর লঙ্কানদের জন্য। সামারাবিক্রমার সঙ্গে যোগ দিলেন চারিথ আসালাঙ্কা। এই জুটিই মূলত ডাচদের ছিটকে দিয়েছিল ম্যাচ থেকে। ৩৩তম ওভারে আরিয়ান দত্ত আবার আঘাত করলেন। এবার তার শিকার আসালাঙ্কা। ৬৬ বলে ৪৪ রান করে ফিরে যান এই মিডলঅর্ডার ব্যাটার।

আসালাঙ্কা ফিরে গেলেও সামারাবিক্রমা ঠিকই ক্রিজ আঁকড়ে ছিলেন। ধনাঞ্জয়া ডি সিলভার সঙ্গে আরও একটি বড় জুটি করেছিলেন। ধনাঞ্জয়া যখন ফিরে যান, ম্যাচ তখন একেবারেই লঙ্কানদের হাতের মুঠোয়। ম্যাচটা শেষ করতে সময় নিলেও শেষ পর্যন্ত জয় দিয়েই মাঠ ছাড়ে তারা।

এর আগে দিনের শুরুটা ছিল পুরোপুরি শ্রীলঙ্কার বোলারদের। আগের তিন ম্যাচে কোন জয় নেই। নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষেই প্রথম পয়েন্ট পেতে মরিয়া লঙ্কানরা। আগে টস জিতে ব্যাট করতে চাওয়া ডাচরা এই মরিয়া লঙ্কানদের সামনেই খাবি খেল অর্ধেকটা ইনিংস। চতুর্থ ওভারে বিক্রমজিৎ সিং এর পর দশম ওভারে ম্যাক্স ও’ ডড। দুজনেই ফিরেছেন কাসুন রাজিথার বলে। একজন এলবিডব্লিউ হয়েছেন, অন্যজন সরাসরি বোল্ড।

৫৪ রান কলিন অ্যাকারম্যান আর ৬৮ রানে বাস ডি লিট ফরে গেলে ব্যাপক চাপে পড়ে নেদারল্যান্ডস। দুই নির্ভরযোগ্য ব্যাটারই হতাশ করেছেন। ইনিংস বড় করতে পারেনি তেজা নিদামানুরু আর অধিনায়ক স্কট এডওয়ার্ডস। ৯১ রানেই তারা হারায় ৬ষ্ঠ উইকেট।

সাইব্র্যান্ড এবং ভ্যান বিকের প্রতিরোধ শুরু সেখান থেকেই। শুরুতে ধীরগতির ব্যাট করেছেন। এরপর সময় বুঝে চড়াও হয়েছেন। দুজনের সময়োপযোগী ব্যাটিং ডাচদের স্কোরবোর্ডে যোগ করেছে ১৩০ রান। স্কুপ করতে গিয়ে দিলশান মাদুশাঙ্কার বলে বোল্ড হন সাইব্র্যান্ড। নামের পাশে ছিল ৭০ রান।

এরপর লোগান ভ্যান বিক অনেকটা একাই টেনেছেন। করেছেন অর্ধশতক। রাজিথার বলে ফেরার আগে করেছেন ৫৯ রান। শেষদিকে ভ্যান ডার মারওয়ে, পল ভ্যান মিকেরেনরা ইনিংস বড় করতে না পারলেও ২৬২ রানের সংগ্রহ ঠিকই দাঁড় করিয়ে ফেলে ডাচরা। লঙ্গানদের পক্ষে সফল বোলার ছিলেন রাজিথা এবং মাদুশাঙ্কা। দুই পেসারই পেয়েছেন ৪টি করে উইকেট।

এসএ-০৯/১০/২১ (স্পোর্টস ডেস্ক)