শ্রীলঙ্কার হারে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে এগিয়ে গেল বাংলাদেশ

বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচে মুখোমুখি হয় নিউজিল্যান্ড-শ্রীলঙ্কা। দুই দলের জন্যই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচটি। বিশ্বকাপে সেমিফাইনালে উঠতে হয়ে জয়ের বিকল্প নেই কিউইদের। আবার ২০২৫ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি নিশ্চিত করতে হলে জয়ের বিকল্প নেই শ্রীলঙ্কারও। এমন সমীকরণের ম্যাচে লঙ্কানদের ৫ উইকেটে হারিয়েছে কিউইরা।

বড় জয়ে নেট রানরেটটা বেশ বাড়িয়ে নিয়েছে নিউজিল্যান্ড। অন্যদিকে ৫ উইকেটের হারে রানরেটে বেশ খানিকটা পিছিয়ে পড়েছে শ্রীলঙ্কা। লঙ্কানদের এমন ভরাডুবিতে আদতে লাভ হয়েছে বাংলাদেশ দলের। নিজেদের শেষ ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে হারলেও চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খেলার সম্ভাবনা থাকবে টাইগারদের।

বৃহস্পতিবার বেঙ্গালুরুর চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে টস জিতে আগে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় কিউইরা। টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ৪৬ ওভার ৪ বলে সবকটি উইকেট হারিয়ে ১৭১ রান সংগ্রহ করে শ্রীলঙ্কা। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৫১ রান এসেছে কুশল পেরেরার ব্যাট থেকে। কিউইদের হয়ে ৩৭ রানে ৩ উইকেট শিকার করেছেন ট্রেন্ট বোল্ট।

১৭২ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ২৩ ওভার ২ বলে ৫ উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় নিউজিল্যান্ড। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৪৫ রান এসেছে ডেভন কনওয়ের ব্যাট থেকে। এই জয়ে সেমিফাইনালের পথে অনেকটা এগিয়ে গেলে কিউইরা।

জয়ের লক্ষ্যে খেলতে নেমে উড়ন্ত শুরু করেন কনওয়ে-রাচিন রবীন্দ্র। ৪৫ রান করে কনওয়ে সাজঘরে ফিরলে ভাঙে ৮৬ রানের উদ্বোধনী জুটি। এরপর রবীন্দ্রও আর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। তার ব্যাট থেকে এসেছে ৪২ রান। তিনে নেমে ভালোই শুরু করেছিলেন অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন। কিন্তু থিতু হয়েও ইনিংস বড় করতে পারেননি। ১৫ বলে করেছেন ১৪ রান। তবে রানের চাকা সচল রাখেন ড্যারিল মিচেল। এই ইনফর্ম ব্যাটার করেছেন ৩১ বলে ৪৩ রান। আর শেষদিকে গ্লেন ফিলিপসের ১০ বলে ১৭ রানের ক্যামিওতে সহজেই জয় পেয়েছে কিউইরা।

এর আগে ব্যাট করতে নেমে ম্যাচের দ্বিতীয় ওভারেই ইনফর্ম পাথুম নিশাঙ্কাকে ফিরিয়ে শ্রীলঙ্কার প্রথম উইকেট তুলে নেন টিম সাউদি। সাজ ঘরে ফেরার আগে তার ব্যাট থেকে আসে মাত্র ২ রান। নেতৃত্ব পাওয়ার পর নিজের স্বভাবজাত ব্যাটিংটাই যেন ভুলে বসেছেন কুশল মেন্ডিস। ব্যর্থতার বৃত্ত ভাঙতে পারেননি আজও।তিনে নেমে সুপার ফ্লপ লঙ্কান অধিনায়ক। ৭ বলে ৬ রান করে ট্রেন্ট বোল্টের বলে রাচিন রবীন্দ্রের হাতে ক্যাচ দিয়েছেন তিনি।

এছাড়া দুই অঙ্ক ছুঁতে পারেননি সাদিরা সামারাবিক্রমা-চারিথ আসালঙ্কারাও। ব্যাটারদের এমন আসা যাওয়ার মিছিলেও এক প্রান্তে রীতিমতো ঝড় তুলেন কুশল পেরেরা। এই ওপেনার যতক্ষণ উইকেটে ছিলেন একাই রানের চাকা সচল রেখেছেন। চার-ছক্কার পসরা সাজিয়ে মাত্র ২২ বলে ছুঁয়ে ফেলেন ফিফটি। চলতি বিশ্বকাপে যা দ্রুততম। কিন্তু ফিফটির পরই থেমে যেতে হলো তাকে। শেষ পর্যন্ত ২৮ বলে ৫১ রান এসেছে তার ব্যাট থেকে।

দলীয় ৭০ রানে ৫ উইকেট হারানোর পর উইকেটে আসেন অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস। অভিজ্ঞ এই ব্যাটার সর্তকতার সঙ্গে শুরু করেছিলেন। দেখে-শুনে খেলে ধানাঞ্জয়া ডি সিলভার সঙ্গে জুটি গড়ার চেষ্টায় ছিলেন। তবে তার প্রতিরোধ কিউই বোলারদের সামনে বেশিক্ষণ টিকেনি। ২৭ বলে ১৬ রান করে এই ব্যাটার ফিরলে তিন অঙ্ক ছোঁয়ার আগেই ৬ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে শ্রীলঙ্কা। সেই বিপদ আরো বাড়িয়েছেন ধানাঞ্জয়া। শেষ স্বীকৃত ব্যাটার হিসেবে তার ওপর গুরু দায়িত্ব ছিল। কিন্তু সেই চাপ নিতে পারেননি। ২৪ বলে ১৯ রান করে ফিরেছেন তিনি। মিচেল স্যান্টনারের অফ স্টাম্পের বাইরের বলে স্লিপে ড্যারিল মিচেলের হাতে ক্যাচ দিয়েছেন এই মিডল অর্ডার ব্যাটার।

শ্রীলঙ্কার দলীয় ১২৮ রানে নবম ব্যাটার হিসেবে আউট হয়েছিলেন দুশমান্থা চামিরা। এরপর দিলশান মাদুশঙ্কাকে নিয়ে দুর্দান্ত জুটি গড়েন মাহিশ থিকশানা। শেষ উইকেটে তাদের দারুণ ব্যাটিং লঙ্কান সমর্থকদের টিকিটের টাকা কিছুটা হলেও উসুল করেছে! ১৯ রান করে মাদুশঙ্কা আউট হলে ভাঙে ৪৩ রানে জুটি। থিকশানা অপরাজিত থেকেছেন ৩৮ রান করে।

এসএইচ-১৩/০৯/২৩ (স্পোর্টস ডেস্ক)