দল থেকে বাদ পড়া নিয়ে পাকিস্তান স্পিনারের বিস্ফোরক দাবি

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের জন্য জোর প্রস্তুতি নিচ্ছে পাকিস্তান। আয়ারল্যান্ড ও ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের জন্য তারা ১৮ সদস্যের স্কোয়াড দিয়েছিল, সেখান থেকেই বিশ্বকাপের জন্য ১৫ জনকে বেছে নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে পিসিবি। ওই তালিকায় নাম নেই লেগস্পিনার উসমান কাদিরের। অবশ্য তিনি জাতীয় দলে নেই গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ থেকে। এরমধ্যে দল থেকে বাদ পড়ার বিষয়ে উসমান বিস্ফোরক তথ্য সামনে এনেছেন।

অস্ট্রেলিয়ায় ২০২২ টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পাকিস্তান দলে ছিলেন উসমান। তবে বুড়ো আঙুলে চোট পাওয়ায় টুর্নামেন্ট শুরুর আগমুহূর্তেই তিনি ছিটকে যান। চীনের হাংজুতে অনুষ্ঠিত এশিয়ান গেমসে তিনি সর্বশেষ খেলেছিলেন। তবে পাকিস্তান জাতীয় দলে অনিয়মিত হয়ে পড়েছেন উসমান কাদির। সে ধারাবাহিকতায় আসন্ন বিশ্বকাপ দলেও নেই ৩০ বছর বয়সী এই স্পিনার। যার জন্য চোট ও তার ফর্মহীনতাকে দায় দিয়ে আসছে পাকিস্তান টিম ম্যানেজমেন্ট। তবে উসমান দলের অব্যবস্থাপনার দিকেই আঙুল তুলেছেন।

পাকিস্তানি ইউটিউবার হাফিজ মুহাম্মদ ইমরানের সঙ্গে এক আলোচনায় এ নিয়ে উসমান বলেন, ‘যখন বিশ্বকাপের (২০২২) আগে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে আমরা খেলছি, তখন আমার বুড়ো আঙুল ভেঙে যায়। এরপর মজার বিষয় ঘটেছে– সাত ম্যাচ খেলার পর আমার আঙুল ভেঙেছে, পরে নিউজিল্যান্ডে খেলতে যাওয়ায় মানুষ আমাকে বলতে শুরু করেন ‘‘তোমার আঙুল ভেঙে গেছে, তুমি শুধু মজা করতে সফর করছ।’’ আমি কি বলেছিলাম আমাকে স্কোয়াডে রাখুন? তারা জানিয়েছিল দুই সপ্তাহ বিশ্রামে থাকলে আমি সেরে উঠব।’

তিনি আরও বলেন, ‘অস্ট্রেলিয়ায় থাকাবস্থায় আমি ডাক্তার নাজকে (পিসিবির প্রধান মেডিক্যাল অফিসার নাজিব সুমরু) বলেছিলাম– ‘‘আমার আঙুলে কোনো ফোলা নেই, এটি নীলও নয় এবং সহজেই আঙুল নড়াচড়া করতে পারছি। আমি বল গ্রিপ করাতে পারব এবং বোলিংয়ে কোনো সমস্যা নেই।’’ জবাবে তিনি বলেছিলেন, দেখা যাক। পরদিন আমি নেটে বোলিং করতে গেলে সাকলাইন (স্পিন কোচ সাকলাইন মুশতাক) বললেন, তুমি এখানে কী করছ? ১৪ দিন শেষ হওয়ার আগে তুমি বোলিং করতে পারবে না। তখন কারণ জানতে চাইলে তিনি জানান, তোমার বোলিং করার ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে বোর্ডে বিশৃঙ্খলা তৈরি হবে।’

পরে সাকলাইন মুশতাকের কথামতো এক্স-রে করার অভিজ্ঞতা বলেন উসমান কাদির, ‘যখন এক্স-রে করানো হলো, ডাক্তার জানালেন আমার আঙুলে দুটি চিড় রয়েছে। আমি আশ্চর্য হয়ে গেলাম, আমার একটি চিড় আছে জানি কিন্তু তিনি বলছেন দুটি। এটি শুনে তিন আমাকে বিশ্রামে থাকতে বললেন। আমি বুঝতে পারলাম যে আমাকে নিয়ে কী খেলা চলছে!’

পরবর্তীতে বাংলাদেশ ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ত্রিদেশীয় সিরিজের পাকিস্তান দল থেকেও বাদ দেওয়া হয় বলে জানান উসমান। যা স্বাভাবিকভাবে তাকে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দলেও বাইরে রাখায় ভূমিকা রেখেছে। এ নিয়ে পাকিস্তানের সাবেক তারকা স্পিনার আবদুল কাদিরের সন্তান উসমান জানান, ‘ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালে আমি নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে খেলার জন্য ছাড়পত্র চাই। তারা আমাকে সিরিজ শেষে এ নিয়ে কথা বলার কথা বলেন। পরে আমাকে মূল স্কোয়াডে না রেখেই বিশ্বকাপের দল ঘোষণা করা হয়। একইসঙ্গে আমাকে রাখা হয় রিজার্ভ ক্রিকেটার হিসেবে। তখন আমি দেশে ফিরে প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলতে চাইলেও, তারা যেতে দেননি।’

পাকিস্তান দলের প্রধান চিকিৎসকের দিকে আঙুল তুলে উসমান আরও বলেন, ‘বিশ্বকাপের পর কোনো সিরিজের দলেই আমাকে রাখা হয়নি। ডাক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করলে বিশ্বকাপ চলাকালেও আমার সমস্যা ছিল না বলে জানান। আমার কাছে সেই প্রমাণ এবং স্ক্রিনশট আছে। কিন্তু একজন ব্যক্তি আমার ক্যারিয়ার শেষ করে দিয়েছে, এই ব্যাখ্যা কাকে দেবো? তিনি ওই ধরনের ডাক্তার, যিনি সাধারণ জ্বরের ওষুধ কী তাও জানেন না! পুরো জাতীয় দল এ বিষয়টি জানে। সেখানে আমার আর কি বলার আছে?’

উল্লেখ্য, ২০২০ সালে আন্তর্জাতিক ম্যাচে অভিষেক হয়েছিল উসমানের। এরপর পাকিস্তানের হয়ে তিনি ২৫টি টি-টোয়েন্টি এবং একটি ওয়ানডে খেলেছেন। সবমিলিয়ে তার শিকার ৩২ উইকেট।

এসএ-০৮/০৭/২৪(স্পোর্টস ডেস্ক)