রাজশাহীর মুসা রাজাকারের রায় ঘোষণার অপেক্ষা

একাত্তরের মানবতা বিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার বাঁশবাড়িয়ার কুখ্যাত রাজাকার আব্দুস সামাদ ওরফে ফিরোজ খাঁ ওরফে মুসার রায় ঘোষণা যে কোন দিন।

মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত হত্যা, গণহত্যা, অগ্নিসংযোগসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় এই রায় অপেক্ষমাণ (সিএভি) রেখেছেন ট্রাইব্যুনাল।

রাষ্ট্র ও আসামি পক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে সোমবার ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এ আদেশ দেন।

এর আগে বৃহস্পতিবার এই মামলায় যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শুরু হয়। সোমবার সর্বশেষ যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ করার পর রায় ঘোষণার জন্য অপেক্ষমাণ (সিএভি) রাখেন ট্রাইব্যুনাল।

আসামির বিরুদ্ধে মামলার তদন্ত কর্মকর্তাসহ (আইও) প্রসিকিউশনের ১৫ জন সাক্ষী তাদের জবানবন্দি পেশ করেন। অন্যদিকে আসামির পক্ষে কোনো সাফাই (ডিফেন্স) সাক্ষী ছিল না।

আদালতে আজ রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন প্রসিকিউটর জাহিদ ইমাম। আসামির পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আব্দুস সাত্তার পালোয়ান।

মামলার বিবরণ সূতে জানা যায়, মুক্তিযুদ্ধের সময় পশ্চিমভাগ ও গোটিয়া গ্রামে আদিবাসী ও বাঙালিদের ওপর নৃশংস হত্যাযজ্ঞ চালান আব্দুস সামাদ মুসা ওরফে ফিরোজ খাঁ ওরফে মুসা রাজাকার।

এ সময় তার নেতৃত্বে সেখানে চলে হামলা, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা। তার বিরুদ্ধে মামলা করেন মুসার হাতে নিহত পশ্চিমভাগ গ্রামের শহীদ আবদুস সামাদের স্ত্রী রাফিয়া বেওয়া। তার অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে অপরাধের তদন্ত শুরু হয়।

একাত্তরে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় মুসার বয়স ছিল ২০ থেকে ২২ বছর। ওই বয়সে তিনি পাকিস্তানের পক্ষে এলাকার যুবকদের নিয়ে দল গঠন করেন।

১৯৭১ সালের ১২ এপ্রিল পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী পুঠিয়া আক্রমণ করে মানুষ হত্যা ও অগ্নিসংযোগ শুরু করলে মুসা হানাদার বাহিনীর সঙ্গে যোগ দেন। ১৯ এপ্রিল তিনি ৩০-৪০ জন হানাদার বাহিনীর সদস্য নিয়ে বাঁশবাড়িয়া গ্রামে যান।

সেখানে তারা ২১ জনকে আটক করেন। তাদের নিয়ে রাখা হয় গোটিয়া গ্রামের স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান নুরুল ইসলামের বাড়িতে। সেখানে দিনভর নির্যাতন করে ১৭ জনকে ছেড়ে দেয়া হয়। হত্যা করা হয় চারজনকে।

পুঠিয়া-দুর্গাপুরে তার নির্দেশে তাদের গুলি করে মারা হয়। এরপর মুসার নির্দেশে পশ্চিমভাগ মাদরাসার সামনে গুলি করে হত্যা করা হয় আক্কেল আলীর ছেলে আবদুস সাত্তারকে।

মুসা পশ্চিমভাগ সাঁওতালপাড়ার ধনাঢ্য আদিবাসী লাডে হেমব্রমের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট করেন।

বিএ-০৯/০৮-০৭ (নিজস্ব প্রতিবেদক)