তালেবানের ভয়ে ছাত্রীদের নথি পুড়িয়ে দিলেন শিক্ষিকা

তালেবানের

আফগানিস্তানের একমাত্র বালিকা বোর্ডিং স্কুলের ছাত্রীদের কাগজপত্র পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। তালেবানের হাতে কাবুলের নিয়ন্ত্রণ চলে যাওয়ার পর ছাত্রী ও তাদের পরিবারকে রক্ষায় স্কুল কর্তৃপক্ষ এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

যাতে এসব নথি ধরে ধরে শিক্ষার্থী ও তাদের পরিবারকে তালেবান হানা দিতে না পারে, তা নিশ্চিত করতে চেয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষ। স্কুল অব লিডারশিপ আফগানিস্তানের (এসওএলএ) অধ্যক্ষ সাবানা বাসিজ-রাসিখ টুইটারে নথি পোড়ানোর ভিডিও শেয়ার দিয়েছেন। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেই এমন পদক্ষেপ নিয়েছেন বলে দাবি করেন এই শিক্ষিকা।

তিনি বলেন, ফের নারীশিক্ষার উপর আঘাত নেমে আসতে চলেছে। তালিব আমলে মেয়েদের উন্নতি এবং শিক্ষা কতদূর এগোবে তা নিয়ে সংশয় আছে। ছাত্রীদের কথা মনে পড়লে অসহায় লাগে বলেও তিনি জানান।

এদিকে কাবুল বিমানবন্দরে লোকজনকে সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করাতে গিয়ে আকাশে ফাঁকা গুলি করেছে তালেবান যোদ্ধারা। এ সময়ে তারা লাঠিপেটাও করেছে। এছাড়া বিমানবন্দরের বাইরে হুড়োহুড়িতে অন্তত সাত বেসামরিক আফগান নাগরিক নিহত হয়েছেন। এ নিয়ে গত সাত দিনে আফগান বিমানবন্দরে অন্তত ২০ জন নিহত হয়েছেন বলে এক ন্যাটো কর্মকর্তা দাবি করেছেন।

নিহতদের কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। বাকিরা পদদলিত হয়ে মারা গেছেন। রোববার ভিড় সরিয়ে দিতে বন্দুকধারীরা মারধর করলেও কেউ বড় ধরনের হতাহত হয়নি।

বিশৃঙ্খল কাবুল বিমানবন্দরে নতুন নির্দেশনা জারি করেছে আফগানিস্তানের তালেবান যোদ্ধারা। বিমানবন্দরের প্রধান ফটকের বাইরে লোকজন যাতে সুশৃঙ্খলভাবে সারিবদ্ধ হতে পারে, তা নিশ্চিত করতে এমন নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বিমানবন্দরের সীমানার বাইরে লোকজনকে জড়ো হওয়ার অনুমোদন দিচ্ছে না তালেবান।

প্রত্যক্ষদর্শীর বরাতে বার্তা সংস্থা রয়টার্স এমন খবর দিয়েছে। রোববার ভোরেও সেখানে মানুষের দীর্ঘ সারি দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। শনিবার রাতে কাবুলের চারটি ফ্লাইট পরিচালনা করেছে অস্ট্রেলিয়া। এতে অস্ট্রেলীয়, আফগান ভিসাধারী, নিউজিল্যান্ডের অধিবাসী, মার্কিন ও ব্রিটিশ নাগরিকসহ ৪০০ জনকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন এমন খবর দিয়েছেন।

নিরাপত্তা ঝুঁকির কথা বলে এদিন কাবুল বিমানবন্দরে যেতে নাগরিকদের নিষেধ করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও জার্মানি। যদিও আফগান ছাড়তে হাজার হাজার মানুষকে বিমানবন্দরটিতে জড়ো হতে দেখা গেছে।

গেল রোববার থেকে এখন পর্যন্ত একক রানওয়ের বিমানবন্দরটিতে ১৯ জন নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে কয়েকজন গুলিতে, বাকিরা পদদলিত হয়ে নিহত হয়েছেন। সপ্তাহখানেক ধরে তীব্র গরম ও ধুলাবালির মধ্যে সেখানে পলায়নরত মানুষের ভিড় বেড়েছে।

যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য যেসব দেশ বহু আফগান নাগরিকসহ, কূটনৈতিক ও বেসামরিক লোকজনকে সরিয়ে নেওয়ার যে চেষ্টা করছে, অতিরিক্ত ভিড় ও চাপাচাপিতে তাদের অভিযান ব্যাহত হচ্ছে।

বাবা-মা ও শিশুরা কংক্রিটের দেয়াল ঠেলে ফ্লাইটে ওঠার চেষ্টা করছেন। শনিবার কাবুলে একটি চার্টার ফ্লাইট স্থগিত করে দিয়েছে সুইজারল্যান্ড। মার্কিন সামরিক বাহিনীর মেজর জেনারেল উইলিয়াম টেইলর বলেন, এখনো পাঁচ হাজার ৮০০ সেনা বিমানবন্দরে রয়েছে। স্থাপনাটি এখনো নিরাপদ বলে তিনি উল্লেখ করেন।

এসএইচ-১৭/২২/২১ (অনলাইন ডেস্ক)