সরকারি কর্মকর্তাদের নতুন গাড়ি কেনায় নিষেধাজ্ঞা আসছে

ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব পড়েছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। এর মধ্যে অর্থনীতি সচল রাখতে নানা সিদ্ধান্ত নেয় বিভিন্ন দেশ। এবার অর্থনীতিতে ঘাটতি কমাতে সরকারি কর্মকর্তাদের নতুন গাড়ি কেনা বন্ধ করতে যাচ্ছে পাকিস্তান সরকার। শুক্রবার পাকিস্তানের অর্থমন্ত্রী মিফতাহ ইসমাইল এ তথ্য জানিয়েছেন।

খবরে বলা হয়েছে, সরকারের খরচ কমানো, বাজেটে ঘাটতি নিয়ন্ত্রণের চাপ মোকাবিলা এবং আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণ সহায়তার শর্তপূরণে পাকিস্তানের সরকার এ পদক্ষেপ নিচ্ছে।

বিগত কয়েক বছর ধরে দেশটির অর্থনীতি ভেঙে পড়েছে। ইতোমধ্যে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এক হাজার কোটি মার্কিন ডলারের নিচে নেমে গেছে। এ অর্থ দিয়ে এখন বড়জোর ৪৫ দিনের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব। পাকিস্তানের আর্থিক ঘাটতির পরিমাণ দিন দিন বেড়েই চলেছে।

শুক্রবার (১০ জুন) দেশটিতে ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট পেশ করেন দেশটির অর্থমন্ত্রী মিফতাহ ইসমাইল। এসময় তিনি জানিয়েছেন, সরকার ধনীদের ওপর বাড়তি কর আরোপের পাশাপাশি বিলাসবহুল গাড়ি আমদানি ও সরকারি কর্মকর্তাদের নতুন গাড়ি কেনা নিষিদ্ধ করবে।

তিনি আরও বলেন, আমরা কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে শুরু করেছি। তবে এটিই শেষ নয়।

আইএমএফ দেশটিকে ঋণ দেওয়ার আগে আর্থিক ঘাটতি নিয়ন্ত্রণের শর্ত বেঁধে দিয়েছে। এ শর্তগুলোর মধ্যে অন্যতম শর্ত জ্বালানি ভর্তুকি বাতিল করা। শাহবাজ শরিফের সরকার এরই মধ্যে সেই দাবি পূরণ করেছে, যার কারণে দেশটিতে জ্বালানির দাম প্রায় ৪০ শতাংশ বেড়ে গেছে।

এদিকে পাকিস্তানে জ্বালানি তেলের পর পর্যায়ক্রমে বাড়ছে নিত্যপণ্যের দাম। আয় না বাড়লেও ব্যয় বাড়ায় বিপাকে সাধারণ মানুষ। অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় এক বছরের মধ্যে চার হাজার কোটি ডলার প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন দেশটির অর্থমন্ত্রী মিফতাহ ইসমাইল।

রাজনীতির পাশাপাশি অর্থনৈতিক অস্থিরতা পাকিস্তানে। দেশটিতে এক সপ্তাহের মধ্যে দুই দফায় প্রতি লিটারে ৬০ রুপি বাড়ানো হয়েছে জ্বালানি তেলের দাম। এরই ধারাবাহিকতায় বাড়ছে নিত্যপণ্যের দাম। আয়ের উৎস না বাড়ায় চাহিদা পূরণে হিমশিম খাচ্ছে নিম্ন আয়ের পাকিস্তানিরা।

এক বছরের মধ্যে দেশটিতে চার হাজার কোটি মার্কিন ডলার ঋণ প্রয়োজন বলে জানায় দেশটির অর্থমন্ত্রী মিফতাহ ইসমাইল, যা পাবেন বলেও আশাবাদী তিনি। এ নিয়ে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তাহবিল (আইএমএফ)-এর সঙ্গে সরকার কাজ শুরু করেছে বলেও জানান অর্থমন্ত্রী।

এর আগে, সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে দেশটির প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ বলেছিলেন, ‘আগামী ১৫ মাসের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এর আগপর্যন্ত আমার লক্ষ্য হলো মুদ্রাস্ফীতি এবং দারিদ্র্য মোকাবিলা করা।’

এসএইচ-১৭/১১/২২ (আন্তর্জাতিক ডেস্ক)