বাংলাদেশের খ্রিস্টানদের নিয়ে ৬ মার্কিন কংগ্রেসম্যানের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান

বাংলাদেশের খ্রিস্টান সম্প্রদায় বর্তমান সরকারের আমলে ‘নির্যাতিত’ হচ্ছে উল্লেখ করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন দেশটির ৬ কংগ্রেসম্যান। মার্কিন কংগ্রেসম্যানদের এমন দাবি প্রত্যাখ্যান করেছেন বাংলাদেশের খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের শীর্ষ ধর্মগুরু আর্চবিশপ ইমেরিটাস প্যাট্রিক ডি রোজারিও।

ঢাকার সাবেক এই আর্চ বিশপ কংগ্রেসম্যানদের আনীত অভিযোগকে ‘অসত্য’ বলে আখ্যা দিয়ে বলেছে, উগ্রপন্থিদের হাত থেকে রক্ষায় বাংলাদেশ সরকার সবসময়ই খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের পাশে দাঁড়িয়েছে।

মার্কিন প্রেসিডেন্টের কাছে কংগ্রেসম্যানদের চিঠিতে অভিযোগ করা হয়েছে, ‘শেখ হাসিনার সরকার বাংলাদেশের সংখ্যালঘু খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের উপাসনালয় পুড়িয়ে দেওয়া, লুটপাট করা, যাজকদের কারাগারে বন্দী করা এবং ধর্মান্তরিত হলে পরিবার ভেঙে দেয়াসহ নানাভাবে অত্যাচার করছে।’ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে মার্কিন প্রশাসনের হস্তক্ষেপও কামনা করা হয়।

তবে মার্কিন কংগ্রেসম্যানদের এমন অভিযোগের প্রতিক্রিয়ায় ডি রোজারিও বলেন, ‘আমার অভিজ্ঞতা থেকে আমি বলতে পারি, এই বিবৃতি বাস্তবতাকে অস্বীকার করে। চিঠিতে যা বলা হয়েছে তার থেকে বাস্তব পরিস্থিতি সম্পূর্ণ আলাদা। বর্তমান সরকারের অধীনে, খ্রিস্টানরা সমর্থন পেয়েছে; বরং বলা ভালো যে, তারা আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘যদিও অতীতে কিছু ঘটনা ঘটেছে, তবে এই সরকার আমাদের সম্প্রদায়কে রক্ষায় একটি নিষ্পত্তিমূলক অবস্থান নিয়েছে।’ এ সময় তিনি বলেন, রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের জন্যই এমন অভিযোগ করা হয়েছে। এবং তিনি প্রশ্ন রাখেন, ‘রাজনৈতিক স্বার্থ ছাড়া আপনি কী অন্য কোনো কারণকে সন্দেহ করতে পারেন যা এ ধরনের ঘটনাকে ব্যাখ্যা করেত পারে।’

এরই মধ্যে হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের নেতা রাণা দাশগুপ্তসহ অন্যান্য নেতারা চিঠির সমালোচনা করেছেন। রাণা দাশগুপ্ত চিঠিতে বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের বিষয়ে যে বক্তব্য দেয়া হয়েছে তা প্রত্যাখ্যান করেছেন। ‘শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর হিন্দু জনসংখ্যা কমে অর্ধেক হয়ে গেছে’-কংগ্রেসম্যানদের চিঠির এমন দাবিকে তিনি সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছেন।

মার্কিন কংগ্রেসম্যানদের চিঠিতে এমন দাবির জবাবে রাণা দাশগুপ্ত বলেছেন, ‘জাতীয় নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে, একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠী খুব সক্রিয় হয়ে উঠেছে।’

উল্লেখ্য, ডি রোজারিও ২০১৬ সালে প্রথম বাংলাদেশী হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে রোমান ক্যাথলিক চার্চ কলেজ অফ কার্ডিনালসে অন্তর্ভুক্ত হন। এই অভিজাত সংস্থা পোপ নির্বাচন করা থেকে শুরু করে তাকে যাবতীয় বিষয়ে পরামর্শ দেয়।

এসএইচ-০৬/০৯/২৩ (ন্যাশনাল ডেস্ক)