ভিসা প্রসেসিং নিয়ে বায়রার দু’পক্ষ মুখোমুখি

দেশের প্রধান বৈদেশিক শ্রমবাজার সৌদিআরবে জনশক্তি রপ্তানিতে এ খাত সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের মধ্যে শুরু হয়েছে প্রতিযোগিতা। এক পক্ষ সৌদি সরকারের বেঁধে দেওয়া শর্তসাপেক্ষে জনশক্তি রপ্তানিতে একমত হয়েছেন। অপরপক্ষ এর বিরোধিতা করছেন। এতে এই বাজার ফের ক্ষতির মুখ পড়ার আশঙ্কা করছেন অভিবাসন বিশেষজ্ঞরা।

গতকাল শনিবার বিবদমান দুক্ষই রাজধানীতে পৃথক স্থানে সমাবেশ করেছে। সকাল সাড়ে ১০টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সৌদি সরকারের সিদ্ধান্তের বিরোধীতা করে ‘ড্রবক্স সিন্ডিকেট নির্মূল কমিটি’র ব্যানারে প্রতিবাদ সমাবেশ করে জনশক্তি রপ্তানি সংশ্লিষ্ট আরেক পক্ষ।

কমিটির আহ্বায়ক আব্দুল আলীম বলেন, সৌদি সরকার তাদের ভিসা প্রসেসিং এর কাজ সরাসরি বায়রাকে দেওয়া যেতে পারে। তবে কোনো চার্জ বা ফি ধরা যাবে না। কারণ একজন বিদেশগামী বিদেশ যাওয়ার আগেই ১০০ টাকা করে বায়রার কল্যান তহবিলে জমা করে যায়। এ সময় আরো বক্তৃতা করেন, কমিটির সদস্য সচিব কে এম মোবারক উল্লাহ শিমুল, সমন্বয়ক ফজলুল মতিন তৌহিদ প্রমুখ।

অন্যদিকে বেলা ১১টায় ঢাকার ইস্কাটনস্থ বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশর অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সিজের সামনে সৌদি শ্রমবাজার রক্ষা পরিষদ এক মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভার আয়োজন করে। সৌদি ও বাংলাদেশ সরকারের নীতিমালার বিরোধিতাকারীদের দেশের শত্রু আখ্যায়িত করে আয়োজকরা নিয়মতান্ত্রিক ভাবে তাদের প্রতিহতের ঘোষণা দেন।

পরিষদের আহ্বায়ক ও সান ওভারসীজের স্বত্তাধীকারী এবিএম শামসুল আলম কাজল বলেন, একটি দীর্ঘ সময়ের জন্য এই বৃহৎ শ্রম বাজারটি বন্ধ ছিলো। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফল ক‚টনৈতিক প্রচেষ্টার ফলে সৌদি বাজারটি আবারও উন্মুক্ত হয়। ১৯৭৬ সাল থেকে এই পর্যন্ত এই দেশটিতে প্রায় ৩৮ লাখ বাংলাদেশী অভিবাসী কর্মীর কর্মসংস্থানের সুযোগ হয়েছে যার মধ্যে গত দুই বছরে অন্তত ৩ লাখ ৮১ হাজার কর্মীর কর্মসংস্থানের সুযোগ হয়। কিন্তু পরিতাপের বিষয় হলো স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক একটি চক্রের নজর এখন এই বাজার ওপর। কোন ভাবে এই শ্রম বাজারটি হাতছাড়া করাতে পারলেই সরকারকে অর্থনৈতিক চাপ ও বিব্রতকর পরিস্থিতির মধ্যে ফেলাই এদের মূল লক্ষ্য।

তিনি সাংবাদিকদের বলেন, সৌদি দূতাবাস গৃহীত পদক্ষেপ হিসেবে তারা সৌদি ভিসা সেন্টার প্রতিষ্ঠা করেছে। বিস্ময়কর হলো, নিয়োগকারী দেশের এই পদক্ষেপকে তারা ‘সিন্ডিকেট’ বলে প্রচার দিচ্ছে। সৌদি দূতাবাস তাদের নবনির্মিত মূল কার্যালয় বারিধারা ক‚টনৈতিক এলাকায় স্থানান্তর করতে যাচ্ছে। পৃথিবীর অন্য দেশের মতো ওই দেশের সরকার নিরাপত্তা ইস্যুকে সর্বাধিক গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় নিয়েছে।

তাই বর্তমানে যুক্তরাজ্য, কাতার, ভারত, থাইল্যান্ড, মালেশিয়া সহ বিভিন্ন দেশে তাদের ভিসা সার্ভিসটি আউট সোর্সিং কোম্পানীর মাধ্যমে প্রদান করছেন। এরই ধারাবাহিকতায় সৌদি দূতাবাস বর্তমান পদ্ধতিতে চলমান ভিসা সংক্রান্ত কার্যক্রম তাদের নতুন কার্যালয়ে পরিচালনার বিষয়টি পুরোপুরি বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনায় রেখে অভিবাসী কর্মীদের ভিসার কার্যক্রম ‘সৌদি ভিসা সেন্টার’ এর মাধ্যমে আউট সোর্সিং কোম্পানিকে দায়িত্ব দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ওই ভিসা সেন্টারের ম‚ল কাজ হলো শুধু মাত্র অভিবাসী কর্মীদের ভিসা স্টিকার সৌদি দ‚তাবাস থেকে প্রসেস করা। কিন্তু আশ্চর্যের কথা হলো, সৌদি দ‚তাবাসের ঐ ভিসা সেন্টারকে উল্লেখিত চিহ্নিত কুচক্রি মহলটি সিন্ডিকেট হিসাবে অপপ্রচার চালাচ্ছে।

এসএইচ-০৭/২৯/১৯ (প্রবাস ডেস্ক)