আমেরিকানদের স্বাভাবিক জীবনে ফেরার গল্পে পিছিয়ে নেই প্রবাসীরাও

করোনার টিকা প্রদানের সাথে সঙ্গতি রেখেই স্বাভাবিক জীবনে ফিরছেন আমেরিকানরা। অর্থাৎ যারা টিকা নিয়েছেন তারা এখন করোনায় সংক্রমিত হবার আতংকে নেই। সর্বশেষ গ্যালাপ পরিচালিত জরিপে স্বাভাবিক জীবনে ফেরার তথ্যচিত্র উদঘাটিত হয়েছে অর্থাৎ ৬৩% আমেরিকান বলেছেন যে, করোনাকে এখন তারা ভয়ংকর কিছু ভাবেন না।

কেন্দ্রীয় রোগ নিয়ন্ত্রণ এবং প্রতিরোধ কেন্দ্রের (সিডিসি) সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী ১৮ বছরের অধিক বয়েসী আমেরিকানের ৫২% পূর্ণ ডোজের টিকা নিয়েছেন। আর একটি করে ডোজ নিয়েছেন মোট জনসংখ্যার ৬৩%। গ্যালপ জরিপে অংশগ্রহণকারিদের ৫৭% বলেছেন যে, তারা করোনাকালের দু:সহ স্মৃতি একেবারেই ভুলে গিয়ে স্বাভাবিক জীবন-যাপনে অভ্যস্ত হয়ে উঠেছেন।

গত অক্টোবরে পরিচালিত জরিপে এই হার ছিল ৩৪%। যদিও দলগতভাবে করোনাকে ধরাশায়ী করা নিয়ে পার্থক্য এখনও রয়েই গেছে। আর এক্ষেত্রে রিপাবলিকানদের তুলনায় পিছিয়ে রয়েছেন ডেমক্র্যাটরা। রিপাবলিকান পার্টির সমর্থকদের ৬০% বলেছেন যে, তারা পুরোপুরিভাবে স্বাভাবিক জীবন-যাপন শুরু করেছেন। অপরদিকে এমন মনোভাব পোষণ করেছেন ৫৫% ডেমক্র্যাট।

স্বাভাবিক জীবনে ফেরার পরিক্রমায় পিছিয়ে নেই প্রবাসী বাংলাদেশীরাও। ৬ জুন রবিবার কুইন্সের ওয়ার্ল্ড ফেয়ার মেরিনা থেকে শতশত প্রবাসী উচ্ছ্বল আনন্দে উদ্বেলিত হয়ে নৌ-ভ্রমণে যান। চমৎকার আবহাওয়ায় ‘স্কাইলাইন প্রিন্সেস’ যখন কলকল ধ্বনিতে হাডসনের বুক চিড়ে ‘স্ট্যাচু অব লিবার্টি’ অভিমুখে যাচ্ছিল সে সময় করোনা নামক মহামারির তান্ডবের ভয়ংকর স্মৃতি কাউকে আক্রান্ত করতে সক্ষম হয়নি। প্রায় সকলেই গানে গানে উদ্যম গতিতে কেবলই সম্মুখে চলেছেন। আর এই আনন্দকে আরো রঙিন করেন দেশ ও প্রবাসের খ্যাতনামা শিল্পীরা। এর অন্যতম ছিলেন রানু নাওয়াজ, শেফালি শরগম, নাজু আকন্দ, অনীক রাজ, শামীম সিদ্দিকী, সেলিম ইব্রাহিম প্রমুখ।

উত্তর আমেরিকায় বাংলা সংস্কৃতি জাগ্রত রাখতে বহুবছর যাবত কর্মরত ‘শো-টাইম মিউজিক’র কর্ণধার আলমগীর খান আলমের এই প্রয়াস করোনা ভীতি কাটিয়ে প্রবাসীদের স্বাভাবিক জীবনে ফেরার পথে এক নয়ামাত্রার সংযোজন ঘটালো বলে অনেকে মন্তব্য করেছেন। এ আয়োজনে অন্যতম পৃষ্ঠপোষক ছিলেন কমিউনিটি বোর্ড মেম্বার শাহনেওয়াজ। বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার প্রবাসীদের মনোরঞ্জনের ক্ষেত্রে বিশেষ করে করোনা ভীতি একেবারেই দূরে সরিয়ে রাখতে ইতিমধ্যেই বনভোজনসহ নানা কর্মসূচি ঘোষণা করেছে সামাজিক-সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠনগুলো।

নিউইয়র্ক অঞ্চলে বসবাসরত মুক্তিযোদ্ধাগণের সমন্বয়ে গঠিত ‘সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম’র বনভোজন অনুষ্ঠিত হবে সামনের শনিবার হেকশ্চার স্টেট পার্কে। সে প্রস্তুতিও চলছে পুরোদমে। গত ১৪ মাসের ক্ষত সারতে এ ধরনের কর্মসূচির প্রয়োজন রয়েছে বলে চিকিৎসা-বিজ্ঞানীরাও উল্লেখ করেছেন।

উল্লেখ্য, করোনায় ৭ জুন পর্যন্ত আমেরিকায় মারা গেছে হাজার খানেক বাংলাদেশীসহ মোট ৬ লাখ ১২ হাজার ৩৬৬ জন।

এসএইচ-১৬/০৮/২১ (প্রবাস ডেস্ক)