রাত ৯:৪৫
বুধবার
১৩ ই আগস্ট ২০২৫ ইংরেজি
২৯ শে শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
১৮ ই সফর ১৪৪৭ হিজরী
spot_img

ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কার করল আফ্রিকান ইউনিয়ন

পূর্ব আফ্রিকার দেশ ইথিওপিয়ার ইসরায়েলি রাষ্টদূতকে বহিষ্কার করেছে আফ্রিকার দেশগুলোর জোট আফ্রিকান ইউনিয়ন (এইউ)। এইউ নেতারা জানিয়েছেন, যদি ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূতের উপস্থিতিতে জোটের কোনো বৈঠক বা কর্মসূচিতে অংশ নেবেন না তারা।

সোমবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ইসরায়েলভিত্তিক সংবাদমাধ্যম জেরুজালেম পোস্ট। ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওরেন মারমোরস্টেইন এ ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ জানিয়ে বলেন, “রুয়ান্ডার টুটসি সম্প্রদায়ের গণহত্যার শিকারদের স্মরণে রোববার আদ্দিস আবাবায় (ইথিওপিয়ার রাজধানী) আফ্রিকান ইউনিয়নের সদর দপ্তরে পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি ছিল। সেই কর্মসূচিতে ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূতকে নিমন্ত্রণ করা হয়েছিল এবং তিনি উপস্থিতও হয়েছিলেন।”

“কিন্তু কর্মসূচিস্থলে তাকে দেখেই আফ্রিকান ইউনিয়ন কমিশনের চেয়ারম্যান ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে বিষোদ্গার করতে থাকেন এবং এক পর্যায়ে তাকে অনুষ্ঠান থেকে চলে যেতে বলেন।”

“এইউ কমিশনের চেয়ারম্যান যা করেছেন, তা পুরোপুরি অগ্রহণযোগ্য। রুয়ান্ডার জনগণ এবং ইহুদি ধর্মাবলম্বীরা— উভয়েই যে শতকের পর শতক ধরে ভয়াবহ জাতিগত সহিংসতার ইতিহাস বহন করছে— এই মৌলিক সত্য আফ্রিকান ইউনিয়নের নেতারা জানেন না।”

এ ইস্যুতে ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কূটনৈতিক পদক্ষেপ নেবে বলেও জানিয়েছেন ওরেন মারমোরস্টেইন।

এআর-০৪/০৭/০৩ (আন্তর্জাতিক ডেস্ক)

এ বছর পহেলা বৈশাখে পান্তা-ইলিশ না খাওয়ার আহ্বান মৎস্য উপদেষ্টার

এ বছর পহেলা বৈশাখে পান্তা-ইলিশ না খাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। তিনি বলেন, পহেলা বৈশাখে পান্তা-ইলিশ, এটা কোনো সংস্কৃতির অংশ নয়। যারা ঢাকায় থাকেন তারা এটা চালু করেছেন। এটা আরোপিত সংস্কৃতি।

সোমবার (৭ এপ্রিল) দুপুরে সচিবালয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে ‘জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহ-২০২৫’ উপলক্ষ্যে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।

মৎস্য উপদেষ্টা বলেন, আপনারা চৈত্র সংক্রান্তি পালন করবেন এবং পহেলা বৈশাখে বাতাসা খান, দই, চিড়া, মিষ্টি, ছাতুর শরবত খান, ভাত, শাক, সবজি খান, ইলিশ বাদে অন্য মাছ খান।

উপদেষ্টা বলেন, মানুষ পহেলা বৈশাখে ইলিশ খায় কেমন করে। এসময় তো ইলিশ পাওয়ার কথা না। পহেলা বৈশাখে পান্তা-ইলিশ আমাদের সংস্কৃতির অংশ নয়। এটা আমি পরিষ্কার করতে চাই যেহেতু ঢাকায় এটা চালু হয়েছিল। পহেলা বৈশাখে যারা ইলিশ খাবেন তারা জাটকাই খাবেন। একইসঙ্গে তারা আইন লঙ্ঘন করবেন। কাজেই বাজারে পাওয়াটাও আইনের লঙ্ঘন হয়। এসময়টাতে জোরালোভাবে জাটকা সংরক্ষণের বিষয়টাতে সচেতন করার জন্যই আমরা বলেছি।

ফরিদা আখতার বলেন, আমি আপনাদের মাধ্যমে আহ্বান জানাতে চাই যে পহেলা বৈশাখে বা এপ্রিল মাসে পান্তা-ইলিশ, কোনোভাবেই এটা আমাদের সংস্কৃতি অংশ নয়। অন্য সময় খেলেও আমাদের কোনো বিষয় না। কিন্তু ১৪ এপ্রিল পান্তার সঙ্গে ইলিশ খাওয়া হয়, সেটা যেন না খাওয়া হয়, সেই অনুরোধটা করব। কারণ এসময় ইলিশ নয়, জাটকা খাওয়া হয়। সে হিসেবে জাটকা সংরক্ষণ করে ইলিশে রূপান্তর করার আহ্বান জানাচ্ছি। একইসঙ্গে এ বছর পান্তা-ইলিশ না খাওয়ারও আহ্বান জানাই। কারণ আগে আমাদের জাটকা সংরক্ষণ করতে হবে।

উপদেষ্টা বলেন, কোল্ডস্টোরেজ থেকে মজুত করা ইলিশ বাজারে আসার একটা সম্ভাবনা রয়েছে। আমরা চাই না সেটা বাজারে আসুক। কারণ ইলিশ ও জাটকা একটা কনফ্লিট তৈরি করবে। পহেলা বৈশাখে পান্তার সঙ্গে ইলিশ না খেয়ে ভর্তা, পোড়া মরিচ খেতে পারেন। জেলেরা যদি তাদের জীবন-জীবিকা ঝুঁকিতে রেখে মাছ ধরা বন্ধ রাখতে পারে। তাহলে আমরা কেন একদিন ইলিশ খাওয়া বন্ধ করতে পারব না। সেজন্য আমি অনুরোধ করব, আমরা এই সময়টাতে ইলিশ বা জাটকা না খাই।

এআর-০৩/০৭/০১ (জাতীয় ডেস্ক)

৩৭ শতাংশ শুল্ক তিন মাস স্থগিতের অনুরোধ করে ট্রাম্পকে প্রধান উপদেষ্টার চিঠি

বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি পণ্যের ওপর আরোপিত পাল্টা শুল্ক কার্যকরের সিদ্ধান্ত তিন মাসের জন্য স্থগিত রাখার অনুরোধ জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে চিঠি পাঠিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

চিঠিতে বলা হয় বাংলাদেশকে তিনি মাস সময় দেওয়া হোক, যাতে আমদানি বাড়িয়ে এবং শুল্ক কাঠামো সংস্কার করে একটি ভারসাম্যপূর্ণ বাণিজ্যিক সম্পর্ক গড়ে তোলা যায়।

সোমবার (৭ এপ্রিল) প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে এ তথ্য জানানো হয়।

চিঠিতে ড. ইউনূস বলেন, আপনার অভিষেকের পরপরই আমি আমার উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি পাঠিয়ে জানিয়েছি যে ১৭ কোটি মানুষের দ্রুত বর্ধনশীল বাজারে আমরা যুক্তরাষ্ট্রের পণ্য আমদানি উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়াতে আগ্রহী। আমরা এই উদ্যোগ গ্রহণকারী প্রথম দেশ।

প্রধান উপদেষ্টা আরও জানান, বাংলাদেশই প্রথম দেশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানিতে বহু বছরের চুক্তিতে সই করেছে। ট্রাম্প প্রশাসন এলএনজি রপ্তানির নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের পর থেকেই বাংলাদেশ এলএনজিভিত্তিক সহযোগিতা সম্প্রসারণে কাজ করছে।

চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, বাংলাদেশ সরকার ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের কৃষিপণ্য বিশেষ করে তুলা, গম, ভুট্টা ও সয়াবিন আমদানি বাড়ানোর কার্যক্রম গ্রহণ করেছে, যা আমেরিকান কৃষকদের আয় ও জীবিকার ওপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। দ্রুত বাজারে এসব পণ্য পৌঁছাতে বাংলাদেশে একটি ‘ডেডিকেটেড বন্ডেড ওয়্যারহাউজ’ চালুর কাজ চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে, যেখানে এসব পণ্য শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার পাবে।

প্রধান উপদেষ্টা জানান, দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের রপ্তানি পণ্যে বাংলাদেশেই সবচেয়ে কম শুল্ক আরোপ করা হয়। তুলা, স্ক্র্যাপ লোহা ও কৃষিপণ্যে শুল্ক শূন্য রাখার প্রতিশ্রুতির পাশাপাশি গ্যাস টারবাইন, সেমিকন্ডাক্টর ও চিকিৎসা যন্ত্রপাতির মতো শীর্ষ মার্কিন পণ্যে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক হ্রাসের কাজ চলছে। তা ছাড়া, যুক্তরাষ্ট্রের পণ্য রপ্তানির বিদ্যমান অশুল্ক বাধা দূর করারও পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে বাংলাদেশ। এর মধ্যে রয়েছে নিরীক্ষা ও পরীক্ষার বাধ্যবাধকতা হ্রাস, প্যাকেজিং ও লেবেলিংয়ের মানদণ্ড সহজিকরণ, শুল্ক প্রক্রিয়া সরলীকরণ এবং অন্যান্য বাণিজ্য সুবিধা সম্প্রসারণ।

চিঠিতে আরও জানানো হয়, ‘বাংলাদেশ ইতোমধ্যে দেশে মার্কিন ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান স্টারলিংক চালুর কার্যক্রম সম্পন্ন করেছে। এর ফলে নাগরিক প্রযুক্তি, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও প্রতিরক্ষা খাতসহ বিভিন্ন উচ্চ প্রযুক্তি ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগের নতুন দ্বার উন্মোচিত হবে।’

অধ্যাপক ইউনূস আরও বলেন, আমরা আশা করি, আগামী তিন মাসের মধ্যেই এসব উদ্যোগ বাস্তবায়ন সম্পন্ন হবে। এই সময়ের মধ্যে আমরা যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের সঙ্গে পরামর্শক্রমে বাণিজ্য সম্প্রসারণ ও ভারসাম্য তৈরির কার্যক্রম শেষ করব।

চিঠির শেষাংশে তিনি অনুরোধ জানিয়ে লিখেছেন, বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি পণ্যে আরোপিত পাল্টা শুল্ক তিন মাসের জন্য স্থগিত রাখার বিষয়টি বিবেচনা করে দেখার অনুরোধ জানাচ্ছি। আমি আন্তরিকভাবে আশা করি, আপনি আমাদের এই অনুরোধ গ্রহণ করবেন।

এআর-০২/০৭/০১ (জাতীয় ডেস্ক)

ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের অব্যাহত গণহত্যায় বাংলাদেশের নিন্দা

গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি দখলদার বাহিনীর অব্যাহত গণহত্যা এবং চরম মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ সরকার।

সোমবার (৭ এপ্রিল) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে এই নিন্দা জানায়।

বিবৃতিতে বলা হয়, যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের পর থেকে ইসরায়েলি সামরিক হামলায় বহু ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। এর ফলে গাজায় মানবিক সাহায্য পৌঁছানো বন্ধ হয়ে গেছে, যা বাসিন্দাদের মানবিক বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দিয়েছে। স্পষ্টত ইসরায়েল বারবার আন্তর্জাতিক আবেদনের তোয়াক্কা করেনি বরং ক্রমবর্ধমান হত্যাকাণ্ডে লিপ্ত হয়েছে।

বাংলাদেশ নিরস্ত্র ফিলিস্তিনি জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে জাতিগত নির্মূল অভিযান চালানোর উদ্দেশ্যে গাজার ঘনবসতিপূর্ণ বেসামরিক এলাকায় ইসরায়েলি দখলদার বাহিনীর নির্বিচার বিমান হামলা ও বোমাবর্ষণের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে। বাংলাদেশ সরকার ইসরায়েলকে অবিলম্বে সমস্ত সামরিক অভিযান বন্ধ, সর্বাধিক সংযম প্রদর্শন এবং আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের অধীনে তার দায়িত্ব পালন করার আহ্বান জানাচ্ছে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বিশেষ করে জাতিসংঘের কাছে আবেদন করছে যে তারা নিঃশর্ত যুদ্ধবিরতি বাস্তবায়ন এবং বেসামরিক নাগরিকদের জীবন রক্ষা ও অবরুদ্ধ গাজায় মানবিক ত্রাণ পৌঁছানোর জন্য অবিলম্বে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করে তার নৈতিক ও আইনি দায়িত্ব পালন করুক।

ফিলিস্তিনি জনগণের সব ন্যায্য অধিকার, আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার এবং ১৯৬৭ সালের পূর্ববর্তী সীমানা অনুসারে একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রতি বাংলাদেশ সরকার দৃঢ় সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করছে, যার রাজধানী হবে পূর্ব জেরুজালেম।

বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, বাংলাদেশ সরকার মধ্যপ্রাচ্যে স্থায়ী শান্তির জন্য আলোচনার প্ল্যাটফর্মে ফিরে আসার প্রয়োজনীয়তা পুনর্ব্যক্ত করছে, যা আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক স্থিতিশীলতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশ ফিলিস্তিনি জনগণের ওপর সহিংসতা ও দুর্ভোগের অবসান ঘটাতে কূটনীতি এবং সংলাপের পথে নিজেদের প্রতিশ্রুতিবদ্ধ করার জন্য সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।

আন্তর্জাতিক আইন, জাতিসংঘের প্রস্তাব এবং শান্তি, মর্যাদা ও ন্যায়বিচারের জন্য ফিলিস্তিনিদের আকাঙ্ক্ষার ভিত্তিতে দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধানে পৌঁছাতে কাজ করার জন্য বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে বাংলাদেশ।

এআর-০১/০৭/০৪ (জাতীয় ডেস্ক)

‘সংস্কারের সংক্ষিপ্ত প্যাকেজ’ হলে ভোট ডিসেম্বরে, আর ‘বৃহত্তর প্যাকেজ’ হলে ২০২৬ এর জুনে

চলতি বছরের ডিসেম্বরে কিংবা আগামী বছরের জুনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো যদি ‘সংক্ষিপ্ত সংস্কার প্যাকেজ’ নিয়ে একমত হয়, তবে নির্বাচন ডিসেম্বরেই হতে পারে। তবে তারা যদি ‘বৃহৎ সংস্কার প্যাকেজ’ গ্রহণ করে, তাহলে নির্বাচন আগামী বছরের জুনে অনুষ্ঠিত হবে।

জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস শুক্রবার ঢাকার তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করেন। এ সময় প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচনের সম্ভাব্য সময় নিয়ে এ কথা বলেন। বৈঠকে বাংলাদেশে সংস্কার উদ্যোগের প্রতি জাতিসংঘের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন গুতেরেস। তিনি বিশ্বে ‘সবচেয়ে বৈষম্যের শিকার জনগোষ্ঠী’ রোহিঙ্গাদের দুর্দশা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

প্রধান উপদেষ্টা বাংলাদেশে সংস্কারপ্রক্রিয়া সম্পর্কে জাতিসংঘের মহাসচিবকে অবহিত করেন। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের গঠিত ছয়টি সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনের বিষয়ে ইতিমধ্যে প্রায় ১০টি রাজনৈতিক দল তাদের মতামত জমা দিয়েছে। তিনি বলেন, দলগুলো ছয়টি কমিশনের সুপারিশগুলোর সঙ্গে একবার একমত হলে, তারা জুলাই সনদে স্বাক্ষর করবে; যা দেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণের পাশাপাশি রাজনৈতিক, বিচারিক, নির্বাচনসংক্রান্ত, প্রশাসনিক, দুর্নীতি দমন ও পুলিশ সংস্কারের একটি রূপরেখা হবে।অধ্যাপক ইউনূস বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো যদি ‘সংক্ষিপ্ত সংস্কার প্যাকেজ’ নিয়ে একমত হয়, তবে নির্বাচন ডিসেম্বরেই হতে পারে। তবে, তারা যদি ‘বৃহৎ সংস্কার প্যাকেজ’ গ্রহণ করে, তাহলে নির্বাচন আগামী বছরের জুনে অনুষ্ঠিত হবে। প্রধান উপদেষ্টা ‘সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন’ নিশ্চিত করার ব্যাপারে অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন।

জাতিসংঘের মহাসচিব বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্যোগে নেওয়া সংস্কার কর্মসূচির প্রতি পূর্ণ সমর্থন ব্যক্ত করেন। তিনি দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে কক্সবাজারে বসবাসরত ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থীর জন্য মানবিক সহায়তা কমে যাওয়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি অধ্যাপক ইউনূসকে বলেন, ‘আমি সংস্কার কর্মসূচির প্রতি আমাদের সম্পূর্ণ প্রতিশ্রুতি প্রকাশ করতে চাই। আমরা আপনাদের সংস্কার প্রচেষ্টাকে সমর্থন দিতে এখানে এসেছি। আমরা আপনাদের সর্বোত্তম সফলতা কামনা করি। যেকোনো সহযোগিতা লাগলে আমাদের জানান।’ তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে এই সংস্কারপ্রক্রিয়া একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন এবং দেশের একটি ‘বাস্তব রূপান্তর’ নিশ্চিত করবে। তিনি বলেন, ‘আমি জানি যে সংস্কারপ্রক্রিয়াটি জটিল হতে পারে।’

গুতেরেস বলেন, জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের প্রতি সংহতি প্রকাশ করতে তিনি রমজান মাসে বাংলাদেশে এসেছেন।কক্সবাজারের শরণার্থীশিবিরে বসবাসরত ১২ লাখ রোহিঙ্গার জন্য মানবিক সহায়তা হ্রাস নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, ‘পৃথিবীতে এতটা বৈষম্যের শিকার অন্য কোনো জনগোষ্ঠী আমি দেখিনি।’ তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় রোহিঙ্গাদের ভুলতে বসেছে।

‘মানবিক সহায়তা কমানো একটি অপরাধ’ উল্লেখ করে গুতেরেস বলেন, পশ্চিমা দেশগুলো এখন প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয় দ্বিগুণ করছে, কিন্তু তখন আবার বিশ্বজুড়ে মানবিক সহায়তা সংকুচিত হচ্ছে।রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য বাংলাদেশের প্রতি জাতিসংঘের ‘অপরিসীম কৃতজ্ঞতা’ প্রকাশ করেন গুতেরেস। তিনি বলেন, বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের প্রতি অত্যন্ত উদারতা দেখিয়েছে। তিনি আরও বলেন, ‘রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী আমার জন্য একটি বিশেষ বিষয়।’অধ্যাপক ইউনূস জাতিসংঘ মহাসচিবকে এই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে বাংলাদেশ সফরের জন্য ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, ‘আপনার আসার জন্য এর চেয়ে ভালো সময় আর হতে পারত না। আপনার সফর কেবল রোহিঙ্গাদের জন্য নয়, বরং বাংলাদেশের জন্যও সময়োপযোগী।’অধ্যাপক ইউনূস জাতিসংঘ মহাসচিবের সহযোগিতা চান, যাতে রোহিঙ্গারা সম্মানের সঙ্গে তাদের জন্মভূমি মিয়ানমারের পশ্চিম রাখাইন রাজ্যে ফিরে যেতে পারে। তিনি বলেন, যত দিন তারা বাংলাদেশে অবস্থান করছে, তত দিন পর্যন্ত তাদের জন্য পর্যাপ্ত খাদ্য ও মানবিক সহায়তা যেন নিশ্চিত করা যায়। তিনি বলেন, ‘আমরা রোহিঙ্গাদের দুর্দশার প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করছি। বিশ্বকে জানতে হবে, তারা কতটা কষ্ট পাচ্ছে। তাদের মধ্যে একটা হতাশার অনুভূতি রয়েছে।’

জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, তিনি রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে সর্বোচ্চ চেষ্টা করবেন এবং তাদের জন্য সহায়তা সংগ্রহকে অগ্রাধিকার দেবেন।গুতেরেস বিশ্বশান্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষায় বাংলাদেশের শান্তিরক্ষী বাহিনীর ভূমিকার প্রশংসা করেন। বাংলাদেশের শান্তিরক্ষী বাহিনীর কার্যক্রম ‘অসাধারণ’ এবং বাংলাদেশ ন্যায়সংগত বিশ্ব প্রতিষ্ঠার অগ্রভাগে রয়েছে উল্লেখ করে জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, ‘বাংলাদেশের শান্তিরক্ষী বাহিনী আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’অধ্যাপক ইউনূসও বাংলাদেশের শান্তিরক্ষী বাহিনীর সদস্যদের প্রশংসা করে বলেন, এই মিশনে কাজ করার ফলে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এক অনন্য অভিজ্ঞতা অর্জন করেছে। তিনি বলেন, ‘শান্তিরক্ষী বাহিনীতে কাজ করা আমাদের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ।’

বৈঠকে ভূরাজনীতি, দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক জোট সার্কের বর্তমান অবস্থা এবং বাংলাদেশের সঙ্গে প্রতিবেশী দেশগুলোর সম্পর্ক নিয়েও আলোচনা হয়। অধ্যাপক ইউনূস দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক ফোরামকে পুনরুজ্জীবিত করার জন্য তাঁর প্রচেষ্টার কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় দেশগুলোর সঙ্গে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়ানোর লক্ষ্যে বাংলাদেশ আসিয়ানের সদস্য হতে চায়।

প্রধান উপদেষ্টা বাংলাদেশের চট্টগ্রাম অঞ্চলে একাধিক বন্দর নির্মাণ প্রকল্প সম্পর্কেও কথা বলেন যা নেপাল, ভুটানসহ ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের মাধ্যমে দেশকে ‘একটি অর্থনৈতিক কেন্দ্র’ হিসেবে গড়ে তুলতে সহায়ক হবে। অধ্যাপক ইউনূস বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, চীন, জাপানসহ প্রায় প্রতিটি দেশের সমর্থন পেয়েছে।

অর্থনীতি প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, তাঁর সরকার উত্তরাধিকারসূত্রে ধ্বংসপ্রাপ্ত ও ভঙ্গুর ব্যাংকিং খাত, সংকুচিত বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এবং বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে ভেঙে পড়া অবস্থায় পেয়েছে। তিনি বলেন, ‘অর্থনীতি এখন সুসংহত হয়েছে। রপ্তানি কয়েক মাস ধরে বৃদ্ধি পাচ্ছে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভও ভালো অবস্থানে রয়েছে।’

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, অর্থনীতি এমনভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে যে অন্তর্বর্তী সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আগামী বছর স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে বেরিয়ে আসবে বাংলাদেশ। তিনি বলেন,‘আমরা এলডিসি উত্তরণের জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুতি নিচ্ছি।’ তিনি আরও বলেন, পূর্ববর্তী সরকারের শাসনামলে লুটপাট হওয়া কয়েক শ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ফেরত আনার জন্য সরকার চেষ্টা করছে।

জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, আগের সরকারের রেখে যাওয়া অর্থনীতির ভঙ্গুর পরিস্থিতি তাকে ১৯৭৪ সালের পর্তুগালের বিপ্লবী দিনগুলোর কথা মনে করিয়ে দেয়।

বৈঠকে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন, প্রধান উপদেষ্টার রোহিঙ্গা সমস্যা ও অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত বিষয়াবলিসংক্রান্ত হাই রিপ্রেজেনটেটিভ খলিলুর রহমান এবং এসডিজি–বিষয়ক সিনিয়র সচিব লামিয়া মোরশেদ উপস্থিত ছিলেন। জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল রাবাব ফাতিমা ও বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গুইন লুইসও বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।

এআর-০৩/১৪/০৩ (জাতীয় ডেস্ক)

লাখো রোহিঙ্গার সঙ্গে ইফতার করলেন প্রধান উপদেষ্টা ও জাতিসংঘ মহাসচিব

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস উখিয়ায় শরণার্থী শিবিরে প্রায় এক লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীর সঙ্গে ইফতার করেছেন।

শুক্রবার (১৪ মার্চ) জাতিসংঘ মহাসচিব বিমানবন্দর থেকে সরাসরি কক্সবাজারের উখিয়ায় যান।

সেখানে তিনি রোহিঙ্গা লার্নিং সেন্টার, রোহিঙ্গাদের সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ও পাটজাত পণ্যের উৎপাদন কেন্দ্র পরিদর্শন করেন। পরে এদিন সন্ধ্যায় প্রায় এক লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীর সঙ্গে ইফতার করেছেন।

এর আগে দুপুর ১টায় হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বাংলাদেশ বিমান এয়ারলাইন্স যোগে তিনি কক্সবাজারে পৌঁছান তিনি। তার সঙ্গে ছিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির পরিদর্শন শেষে জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, আজ আমি অনেকের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছি এবং তাদের সাহসে অনুপ্রাণিত হয়েছি। তাদের সংকল্প আমাকে গভীরভাবে নাড়া দিয়েছে। অনেকেই মিয়ানমারে তাদের যন্ত্রণা এবং তাদের এখানে আসার গল্প শেয়ার করেছেন।

মিয়ানমারের সব পক্ষের প্রতি আমার বার্তা, সর্বোচ্চ সংযম অবলম্বন করুন, আন্তর্জাতিক মানবিক আইন অনুযায়ী সাধারণ মানুষের সুরক্ষা নিশ্চিত করুন। আর কোনও সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা এবং সহিংসতা উদ্রেক না করতে সহায়তা করুন।

তিনি বলেন, কয়েক দশক ধরে বৈষম্য ও নির্যাতনের পর আট বছর আগে রাখাইন রাজ্যে গণহত্যার শিকার হয়ে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ঢল নামে বাংলাদেশে। মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার হয়ে অনেকেই সাম্প্রতিক সময়ে এসেছেন। এক মিলিয়নেরও বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়েছে বাংলাদেশ। এখন বিশ্বের সহায়তা প্রয়োজন। তারা বাড়ি ফিরতে চায়, মিয়ানমার তাদের মাতৃভূমি। নিরাপদ, মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসন এই সংকটের প্রধান সমাধান।

এআর-০২/১৪/০৩ (জাতীয় ডেস্ক)

রোহিঙ্গাদের সহায়তা কমে যাওয়ায় জাতিসংঘ মহাসচিবের উদ্বেগ

বাংলাদেশের আশ্রয়ে থাকা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য আন্তর্জাতিক সহায়তা কমে যাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস।

শুক্রবার সকালে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনুসের সঙ্গে এক ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকে তিনি এ উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

জাতিসংঘ মহাসচিব জানান, তিনি রোহিঙ্গাদের প্রতি সংহতি প্রকাশ করতে ও তাদের পাশে দাঁড়াতে এখানে এসেছেন।

অ্যান্তোনিও গুতেরেস বলেন, আমি কখনো এমন একটি জনগণকে এত বেশি বৈষম্য সহ্য করতে দেখিনি। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় রোহিঙ্গাদের ভুলে গেছে। সহায়তা কমে যাওয়া একটি অপরাধ।

তিনি বলেন, পশ্চিমা দেশগুলো এখন প্রতিরক্ষা ব্যয়ের ক্ষেত্রে দ্বিগুণ করেছে, কিন্তু মানবিক সহায়তা সারা পৃথিবীতে কমে যাচ্ছে।

গুতেরেস বলেন, জাতিসংঘ বাংলাদেশের প্রতি অভূতপূর্ব কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য। বাংলাদেশ রোহিঙ্গা জনগণের প্রতি অত্যন্ত দানশীল হয়েছে।

অধ্যাপক ইউনুস জাতিসংঘের মহাসচিবকে দেশের গুরুত্বপূর্ণ সময়ে সফর করার জন্য ধন্যবাদ জানান।

তিনি বলেন, আপনার সফর শুধু রোহিঙ্গাদের জন্যই নয়, বাংলাদেশের জন্যও সময়োপযোগী।

জাতিসংঘ মহাসচিব বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের শুরু করা সংস্কার প্রক্রিয়ার প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, আমি আমাদের সংস্কার প্রক্রিয়ার প্রতি পূর্ণ প্রতিশ্রুতি জানাতে চাই। আপনার উন্নতির জন্য শুভকামনা জানাই। আমরা যা কিছু করতে পারি, আমাদের জানাবেন।

তিনি আশা প্রকাশ করেন, এই সংস্কারগুলো একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের দিকে নিয়ে যাবে এবং দেশের একটি বাস্তব পরিবর্তন আনবে।

এসময় উপস্থিত ছিলেন, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন, প্রধান উপদেষ্টার উচ্চ প্রতিনিধি ড. খলিলুর রহমান এবং সিনিয়র সচিব লামিয়া মর্শেদ, জাতিসংঘের সহকারী মহাসচিব রাবাব ফাতিমা এবং বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক গুইন লুইস।

এআর-০১/১৪/০৩ (জাতীয় ডেস্ক)

চোর সন্দেহে আটক, মোবাইল ঘেঁটে বেরিয়ে এলো ধর্ষণের পর নৃশংসভাবে হত্যার তথ্য

পঞ্চগড়ের আটোয়ারীতে ইজিবাইক চুরি করতে গিয়ে ধরা পড়েন রিফাত বিন সাজ্জাদ (২৩)। স্থানীয়রা তাকে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে দেন। পরে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। তার মোবাইলে এক তরুণীকে বেঁধে রাখা ও নির্যাতনের ভিডিও দেখতে পায় পুলিশ। পরে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে অজ্ঞাতপরিচয় ওই তরুণীকে হত্যার লোমহর্ষক বর্ণনা দেন তিনি।

সোমবার দুপুরে পঞ্চগড় পুলিশ সুপার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে হত্যাকাণ্ডের বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান মুন্সী।

তিনি জানান, শনিবার (৮ মার্চ) ভোর ৪টার দিকে উপজেলার রাধানগর গ্রামের তাহিরুল ইসলামের ইজিবাইক চুরি করে পালানোর সময় ধরা পড়ে রিফাত বিন সাজ্জাদ। এসময় তার সহযোগী আরও ২ জন পালিয়ে যায়। তিনি বোদা উপজেলার মাঝগ্রাম এলাকার মো. আকতার হোসেনের ছেলে।

পরে তার স্বীকারোক্তিতে জানা যায়, পালিয়ে যাওয়া দুইজন হলো রাণীগঞ্জ এলাকার মো. ফরিদুল ইসলাম ও ঠাকুরগাঁওয়ের নামাজপাড়া এলাকার জাহাঙ্গীর আলম।

গ্রামবাসীরা গণধোলাইয়ের পর সাজ্জাতকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে। তখনই চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে আসে। তিনি গত ১৩ জানুয়ারি রাধানগর কিসমত রেলস্টেশন এলাকায় এক নারীকে (২৭) ধর্ষণের পর হত্যা করেছিল বলে স্বীকার করে। পুলিশ তার মোবাইলে হত্যাকাণ্ডের ছবি-ভিডিও উদ্ধার করেছে।

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার জানান, গত ১৩ জানুয়ারি ঢাকা থেকে পঞ্চগড়গামী একতা এক্সপ্রেস ট্রেনে ওই তরুণীর সঙ্গে তার পরিচয় হয়। এরপর আটোয়ারীর কিসমত স্টেশনে নামিয়ে পাশের এলাকায় নিয়ে ধর্ষণ করে। পরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে তরুণীর যৌনাঙ্গ, স্তনসহ শরীরের বিভিন্ন অংশ কেটে হত্যা করে। পরে মরদেহ রেললাইনে ফেলে যায়। পরদিন কিসমত এলাকায় রেলাইনে ক্ষতবিক্ষত ওই নারীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় থানায় অপমৃত্যুর মামলা হয়। তবে খবর পেয়ে ঠাকুরগাঁয়ের ভুল্লি এলাকার একটি পরিবার তাদের মেয়ে মনে করে মরদেহ গ্রহণ করে দাফন সম্পন্ন করেন।

পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান মুন্সী বলেন, ধর্ষণ ও হত্যার শিকার ওই নারী পরিচয় এখনও পাওয়া যায়নি। আমরা তার পরিচয় খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি। আসামি স্বীকারোক্তিতে জানিয়েছেন, ধর্ষণের পর ওই নারী টাকা দাবি করে এবং তার মাকে নিয়ে গালিগালাজ করে, সেজন্য তরুণীকে হত্যা করেছেন তিনি।

এআর-০৪/১০/০৩ (আঞ্চলিক ডেস্ক)

ডিসেম্বরে জাতীয় নির্বাচনের টাইমলাইন অতিক্রম করতে চায় না ইসি

নির্বাচন কমিশন চলতি বছরের ডিসেম্বরে জাতীয় নির্বাচন করার সময়সীমা অতিক্রম করতে চায় না বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন। তিনি বলেছেন, এই সময়সীমা যাতে পার না হয় সে জন্য ইসি প্রস্তুতি নিচ্ছে। এক্ষেত্রে অক্টোবরে তফসিল ঘোষণা করতে হবে।

সোমবার দুপুরে রাজধানীর নির্বাচন কমিশন ভবনে ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুকের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের এ কথা বলেন সিইসি। এর আগে ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে ঘন্টাখানেকের বৈঠকে অংশ নেন তিনি।

বৈঠকে আলোচনার বিষয় নিয়ে সিইসি সাংবাদিকদের বলেন, জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি সম্পর্কে জানতে চাওয়ার পাশাপাশি বাংলাদেশের গণতন্ত্রের পথে উত্তরণে তারা (ব্রিটিশ হাইকমিশন) ইসিকে সহায়তা করতে চান। পর্যবেক্ষক, ভোটার তালিকা, দল নিবন্ধন ও কেনাকাটার বিষয়ে ব্রিটিশ হাইকমিশনারকে জানানো হয়েছে।

এম এম নাসির উদ্দিন বলেন, ‘তারা জাতীয় নির্বাচনে আমাদের প্রস্তুতি সম্পর্কে জানতে চান। এই ডেমোক্রেটিক ট্রানজিশনে তারা আমাদের সহায়তা করতে চান। আমরা ভোটার ও দলের নিবন্ধনের প্রস্তুতি সম্পর্কে জানিয়েছি। আমরা খুব শিগগির প্রকিওরমেন্টে যাব। আমরা অবজারভার (পর্যবেক্ষক) পলিসি রিভাইজ করতেছি। অবজারভার নিয়োগে প্রক্রিয়া আমরা সম্পন্ন করব।’

সিইসি আরও বলেন, ‘যেহেতু একটা টাইমলাইন আছে, আর্লি ডিসেম্বর। সেটাকে মাথায় রেখে আমরা প্রস্তুতি নিয়ে যাচ্ছি। ডিসেম্বরে ইলেকশন, তাই অক্টোবরের শিডিউল ঘোষণা করতে হবে। টাইমলাইন যেন আমরা মিস না করি সেভাবেই আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে হাইকমিশনারকে জানিয়েছি। আগামী নির্বাচনে কি ধরনের সহযোগিতা আমরা চাই তা তারা জানতে চেয়েছেন।’

কী ধরণের সহায়তা আপনারা চেয়েছেন—এমন প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, ইলেকশনে দলগুলোর এজেন্টরা থাকেন। পার্টির কর্মী বলে তাদের এজেন্ট হিসেবে নিয়োগ দেয়, অথচ তিনি ইলেকশনের নিয়মের কিছুই জানেন না। এখানে একটা ট্রেনিং প্রয়োজন। অবজারভাররা দেশে আসার পর দেখা যায় তিনি আমাদের ইলেকশন সিস্টেম সম্পর্কে জানেন না, আইন-কানুন জানেন না। অবজারভারদের প্রশিক্ষণের কথা আমরা জানিয়েছি।

স্থানীয় সরকার নির্বাচন নিয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে সিইসি জানান, এই বিষয়ে ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে কোনো আলোচনা হয়নি।

এআর-০৩/১০/০৩ (জাতীয় ডেস্ক)

জাতীয় নির্বাচনে প্রক্সি ভোটের সুযোগ পাবেন প্রবাসীরা

আগামী জাতীয় নির্বাচনে প্রথমবারের মতো প্রক্সি ভোট দেয়ার সুযোগ পাচ্ছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা।

সোমবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশনার কার্যালয়ে আয়োজিত বৈঠক শেষে এ কথা জানানো হয়।

নির্বাচন কমিশন (ইসি) জানিয়েছে, একটা অ্যাপস তৈরি করা হবে। সেখানে প্রবাসীরা নিবন্ধন করবেন। সেই অ্যাপসের মধ্যেই প্রবাসীরা তার নমিনি ঠিক করে দেবে এবং সেই নমিনি ভোট দিতে পারবেন। এভাবেই আগামী জাতীয় নির্বাচনে প্রক্সি ভোট দেয়ার সুযোগ পাবেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা।

এর আগে কমিশনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে বৈঠক করেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক।

 
এআর-০২/১০/০৩ (জাতীয় ডেস্ক)