নিপীড়নে জন্ম নেয়া নবজাতককে নিয়ে থানায় কিশোরী!

ফাইল ছবি

বগুড়ার ধুনটে নিপীড়নে জন্ম নেয়া নবজাতকাকে কোলে নিয়ে কিশোরী মা সোমবার বিকালে থানায় এসেছিলেন বিচার চাইতে।

গত ১০ মাস আগে সে প্রতিবেশী কিশোর মেহেদী হাসানের (১৭) ধর্ষণের শিকার হলেও এতদিন গ্রামের প্রভাবশালীদের ভয়ে আইনের আশ্রয় নিতে পারেনি। পুলিশ ঘটনার বর্ণনা শুনে মামলা নিতে রাজি হয়।

ধুনট থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মিজানুর রহমান মিজান এর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

এজাহারের অভিযোগে জানা গেছে, ধুনট উপজেলার নিমগাছী ইউনিয়নের এক কিশোরীকে (১৬) প্রতিবেশী ফজলু মিয়ার ছেলে মেহেদী হাসান প্রেমের প্রস্তাব দেয়। প্রায় ১০ মাস আগে বাড়িতে কেউ না থাকায় মেহেদী ঘরে ঢুকে তাকে ধর্ষণ করে। কিশোরী কান্নাকাটি করলে সে তাকে বিয়ের প্রলোভন দেয়। এরপর বেশ কয়েকদিন তাকে ধর্ষণ করা হয়।

একপর্যায়ে কিশোরী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। মেহেদী ও তার পরিবার এ ঘটনাটি অস্বীকার করে। পরে কিশোরীর পরিবার স্থানীয় ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও মাতবরদের কাছে বিচার দাবি করে। কিন্তু তারা বিচারের নামে কালক্ষেপণ করেন। এমনকি তাদের আইনের আশ্রয় নেয়ার সুযোগও দেয়া হয়নি।

এ অবস্থায় গত ১৯ ফেব্রুয়ারি ওই কিশোরী বাড়িতে মেয়ে শিশু প্রসব করে। দ্রুত ঘটনাটি পুরো গ্রামে ছড়িয়ে পড়ে। গ্রামের লোকজন মীমাংসার চেষ্টা করলেও মেহেদী ও তার পরিবার বিষয়টি অগ্রাহ্য করে। লোকলজ্জা থেকে বাঁচতে মেহেদীর বিচার ও শিশুটির পিতৃপরিচয়ের দাবিতে কিশোরী তার মায়ের সঙ্গে সোমবার বিকালে ধুনট থানায় আসে।

ওই কিশোরীর মা বলেন, ধর্ষণের কথা জানাজানি হলে আমরা স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও গ্রাম্য মাতব্বরদের কাছে বিচার দেই। কিন্তু তারা দীর্ঘদিনেও কোনো বিচার করে দিতে পারেননি। এমনকি কিছু মাতব্বর আমাদের ভয়ভীতিও দেখিয়েছেন।

তবে নিমগাছী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আজাহার আলী পাইকার বলেন, বাচ্চা জন্ম হওয়ার দু’দিন আগে ধর্ষণের ঘটনা জানতে পেরেছেন। তাই তাদের আইনের আশ্রয় নেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

ধুনট থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মিজানুর রহমান মিজান জানান, ধর্ষণ ও সন্তান প্রসবের ঘটনায় প্রতিবেশী মেহেদী হাসানের বিরুদ্ধে মামলা নেয়া হয়েছে। বয়স নির্ধারণসহ অন্যান্য বিষয়ে তার ডাক্তারি পরীক্ষা করানো হবে। আসামিকে গ্রেফতারে তাদের অভিযান চলছে। এ ছাড়া ওই কিশোরী ও তার সন্তানের চিকিৎসা এবং নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

বিএ-১৭/২৪-০২ (উত্তরাঞ্চল ডেস্ক)