পুনর্বাসন কেন্দ্রে প্রেম, সেখানেই হলো বিয়ে

বগুড়ার টিএমএসএস (ঠেঙ্গামারা মহিলা সবুজ সংঘ) অটিজম ও বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী স্কুল এবং পুনর্বাসন কেন্দ্রে দুই তরুণ-তরুণীর বিয়ে দেওয়া হয়েছে। এটি ছিল এই প্রতিষ্ঠানের প্রথম কোনো বিয়ের আয়োজন। বর ২৪ বছর বয়সী ইমদাদুল হক ও কনে ২০ বছর বয়সী সুমনা খাতুন। এ দুজনই ওই পুনর্বাসন কেন্দ্রের বাসিন্দা। তাদের দুই পরিবারের সম্মতিতে বিয়ে দেওয়া হয়েছে। তিন বছর ধরে তাদের প্রেমের সম্পর্ক ছিল।

সোমবার দুপুরে বগুড়ার টিএমএসএস অটিজম ও বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী স্কুল এবং পুনর্বাসন কেন্দ্রে গিয়ে দেখা গেছে- বর-কনের বরণ মঞ্চে লাল শাড়ি পড়ে বধূর বেশে বসেছিলেন সুমনা। তার পাশেই লাল পাঞ্জাবি পরে বরের সাঁজে বসে আছেন ইমদাদুল হক। তাদের ঘিরে রয়েছে উভয় পরিবারের আত্মীয়-স্বজন ও প্রতিষ্ঠানটির আমন্ত্রিত অতিথিরা।

দুপুর থেকেই তাদের বিয়ের অনুষ্ঠান শুরু হয়। জমকালো এই বিয়ের আয়োজেন প্রীতিভোজে আমন্ত্রিত ছিলেন এক হাজারেও বেশি অতিথি। এর আগে গত রোববার গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানও জাঁকজমকপূর্ণভাবে করা হয়। ওই অনুষ্ঠানেও বর-কনের পরিবারের ২০ জন ছাড়াও ৫০০ অতিথি উপস্থিত ছিলেন বলে জানা গেছে।

কেন্দ্র সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালে কেন্দ্রটির যাত্রা শুরু করে। তবে তারও এক বছর আগে এখানে ঠাঁই হয় বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ইমদাদুল হকের। তখন তার বয়স ১৮ বছর। অন্যদিকে সুমনা খাতুন এখানে আসেন ১৪ বছর বয়সে। বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন হওয়ায় হতদরিদ্র পরিবার তাদের একসময় বোঝা মনে করত। পরে অটিজম স্কুলে পড়াশোনা করেন দুজনই।

পুনর্বাসন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সাঈদ যুবায়ের বলেন, ইমদাদ ও সুমনার মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। তাদের মধ্যে তিন বছর ধরে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। ওই সম্পর্ক থেকেই এ দুজন বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন। দুই পরিবারের সম্মতিতে বিয়ের আয়োজন করা হয়। উৎসবমুখর পরিবেশে তাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে। এই বিয়েতে দুই পরিবারের সদস্যসহ হাজারের বেশি অতিথি উপস্থিত ছিলেন।

আগামীতে সব ধরনের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে উল্লেখ করে টিএমএসএসের নির্বাহী পরিচালক হোসনে আরা বেগম বলেন, ‘বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ইমদাদুল-সুমনার বিয়ের আয়োজন করতে পেরে খুব ভালো লাগছে। তারা যেন সুখে-শান্তিতে বসবাস করতে পারেন, সে জন্য তাদের পুনর্বাসন কেন্দ্রে থাকার ব্যবস্থা করা হবে। তিনি বলেন, আমি চাই অসহায় মানুষের পাশে বিত্তবানেরা দাঁড়াবেন এবং এটি তাদের স্বাভাবিক জীবনযাপনে শক্তি জোগাবে।

এসএইচ-২০/১৯/২১ (উত্তরাঞ্চল ডেস্ক)