অবরোধ প্রতিহতের সমাবেশে এসে নিজেরাই সংঘর্ষে জড়াল ছাত্রলীগ

বিএনপি-জামায়াতের নৈরাজ্যের প্রতিবাদে মিছিল আর বিক্ষোভ সমাবেশ করতে এসে নিজেরাই সংঘর্ষে জড়ালেন বগুড়া জেলা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। সরকারি আজিজুল হক কলেজ ক্যাম্পাসে বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

সজীব সাহাকে সভাপতি আর মাহমুদুল হাসান জয়কে সাধারণ সম্পাদক করে কমিটি ঘোষণার পর থেকেই বগুড়া জেলা ছাত্রলীগের মাঝে এই বিভাজন দফায় দফায় স্পষ্ট হয়েছে৷ এক বছর পেরিয়ে গেলেও পাল্টায়নি চিত্র। এরই মধ্যে বৃহস্পতিবার কেন্দ্র ঘোষিত হরতাল-অবরোধবিরোধী কর্মসূচির অংশ হিসেবে মিছিল ও বিক্ষোভ সমাবেশে আবারও সংঘর্ষে জড়ালো দুই গ্রুপ।

এদিন কেন্দ্রীয় কর্মসূচি পালন করতে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সজীব সাহার নেতৃত্বে মিছিলে অংশ নেননি সহ-সভাপতি তৌহিদ ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহফুজার। এরপর সমাবেশ শুরু করতেই পাশে থেকে গালিগালাজ করতে করতে এগিয়ে আসে বিদ্রোহী কর্মীরা। রড, লাঠি ও দেশীয় অস্ত্র হাতে তেড়ে গিয়ে কয়েকজনকে আঘাত করে। একপর্যায়ে শুরু হয় সংঘর্ষ।

এ সংঘর্ষের দায় সহ-সভাপতি তোহিদ ও যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহফুজারসহ তাদের অনুসারীদের ওপর দিচ্ছেন হামলার শিকার সজীব সাহা।

তিনি বলেন, ‘আমরা কিন্তু একটি শান্তিপূর্ণ মিছিল করেছি। পরবর্তীতে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে আমরা যখন বিক্ষোভ সমাবেশ করছিলাম। জেলা ছাত্রলীগের শুভ, তৌহিদ, মাহফুজ ও ইমরানের নেতৃত্বে পাশের স্ট্যান্ড থেকে তারা আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা করে। আমাদের ছেলেপেলে তাদের প্রতিহত করে।’

সংঘর্ষের খবর পেয়ে কিছুক্ষণের মধ্যে সেখানে পৌঁছান জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হাসান জয়। তিনি বলেন, ‘আপনারা বলছেন এটি ছাত্রলীগের আরেকটি পক্ষ। কিন্তু আমি বলবো তারা ছাত্রলীগের পক্ষ নয়। তারা জামায়াত-বিএনপির দোসর। যারা বিএনপির অগ্নিসন্ত্রাস ও ভাঙচুর সমর্থন করে, তারাই আজকে ছাত্রলীগের বিক্ষোভ সমাবেশে হামলা করেছে।’

সংঘর্ষের এক পর্যায়ে ছুরিকাঘাতে আহত হন মাহফুজার রহমান। তার পাল্টা অভিযোগ, সজীব সাহাদের অযোগ্য কমিটি বহিরাগতদের দিয়ে হামলা চালিয়েছেন।

যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহফুজার রহমান বলেন, ‘তারা অস্ত্র সজ্জিত বহিরাগত সন্ত্রাসী নিয়ে এসে আমাদের ওপর হামলা চালিয়েছে। ক্যাম্পাসের কারো কাছে অস্ত্র ছিল না। আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে ছুরিকাঘাত করা হয়েছে। আরো ছয় জন আহত আছে।’

বগুড়া স্টেডিয়াম পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. মমিনুল ইসলাম বলেন, ‘সংবাদ পেয়ে এখানে এসে আমরা বিশৃঙ্খলা দেখেছি। আমরা দ্রুত পদক্ষেপ নিয়েছি। এখন পরিবেশ আমাদের নিয়ন্ত্রণে স্বাভাবিক আছে।’

বগুড়া সরকারি আজিজুল হক কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ডক্টর মো. সবুর উদ্দিন বলেন, একাডেমিক কাউন্সিলের মিটিং ছিল সকাল দশটায়। আমরা সব বিভাগীয় প্রধানরা সেখানে উপস্থিত ছিলাম। হই হই শব্দ শুনে আমরা বের হয়ে আসি। এসে এটাকে নিবারণ করার চেষ্টা করি।’

সাধারণ ছাত্রদের নিরাপত্তার জন্য স্থায়ীভাবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তা চেয়েছেন সরকারি আজিজুল হক কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ। সংঘর্ষের ঘটনায় দুই পক্ষের অন্তত ১৩ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

এসএইচ-১২/০৯/২৩ (উত্তরাঞ্চল ডেস্ক)