ডাকসুর দায়িত্ব নিলেন নূর : শেখ হাসিনাকে আজীবন সদস্য করতে ‘আপত্তি’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) প্রথম কার্যকরী সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ডাকসুর আজীবন সদস্য হিসেবে মনোনীত করা হয়েছে। শনিবার বেলা ১১টায় শুরু হওয়া এ সভায় প্রধানমন্ত্রীকে আজীবন সদস্য করার প্রস্তাব তোলেন জিএস গোলাম রাব্বানী। সভায় সর্বসম্মতিক্রমে প্রস্তাব গৃহীত হয়।

তবে এ সময় এই সিদ্ধান্তে আপত্তি জানান ডাকসু ভিপি নুরুল হক নুর। বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একজন সম্মানিত ব্যক্তি। এই বিতর্কিত নির্বাচনের মাধ্যমে যে ডাকসু, সেখানে তার মতো সম্মানিত ব্যক্তিকে সদস্য করা ঠিক হবে না।

তার কথার সঙ্গে একমত প্রকাশ করেন সমাজসেবা সম্পাদকও।

এ বিষয়ে জিএস গোলাম রাব্বানী বলেন, যেখানে অধিকাংশ সদস্য মত দিয়েছেন সেখানে একজনের আপত্তি গ্রহণযোগ্য নয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (ভিসি) অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামান বলেন, যে প্রস্তাব উঠেছে তা আমরা গ্রহণ করেছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আজীবনের সদস্য করার বিষয়টি আগামী সভায় চূড়ান্ত করা হবে।

এ প্রস্তাব গৃহীত হলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পর শেখ হাসিনা হবেন ডাকসুর আজীবনের সদস্য হওয়া দ্বিতীয় ব্যক্তি।

এর আগে, ডাকসুর প্রথম কার্যকরী সভায় যোগ দেন ভিপি নুরুল হক নুর, জিএস গোলাম রাব্বানীসহ নবনির্বাচিত কমিটির সদস্যরা। শুরুতেই স্বাগত বক্তব্য দেন ডাকসুর নবনির্বাচিত জিএস গোলাম রাব্বানী। এরপর মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে শহীদদের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।

এরপর রাব্বানী কেন্দ্রীয় সংসদের সবার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। এসময় জিএস সভাপতির কাছে আনুষ্ঠানিক দায়িত্ব গ্রহণের অনুমতি নেন। এক বছরের জন্য অনুমতি দেন ভিসি ড. আখতারুজ্জামান।

দীর্ঘ ২৮ বছর পর গত ১১ মার্চ ডাকসু এবং ১৮টি হল সংসদের নির্বাচন হয়। এতে কারচুপি ও অনিয়মের অভিযোগে ছাত্রলীগ ছাড়া প্রায় সব প্যানেলের ভোট বর্জনের ঘোষণা দেয়।

নির্বাচনের দিন দুপুরে নানা অনিয়মের অভিযোগ তুলে অন্য চারটি প্যানেলের সঙ্গে নির্বাচন বর্জন করে ‘বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ’ প্যানেল। নির্বাচনে ফল ঘোষণায় ভিপি প্রার্থী ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভনকে ২ হাজার ভোটের ব্যবধানে পেছনে ফেলে ভিপি নির্বাচিত হন নুরুল হক নুর।

নির্বাচন বর্জন করার পর ভিপি হিসেবে নুর দায়িত্ব নিবেন কি না সে বিষয়ে প্রশ্ন ওঠে। এ প্রশ্নের উত্তর নুরুল হক নুর নিজেই দেন। ১২ মার্চ পুনরায় ডাকসুর দাবিতে অনশন করা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংহতি জানাতে গিয়ে নুর বলেন, তিনি ভিপি পদ ও তার প্যানেল থেকে বিজয়ী আখতার হোসেনের সমাজসেবা সম্পাদক পদ বাদে ডাকসুর বাকি ২৩ পদে নির্বাচন চান। পুনরায় নির্বাচনের দাবিতে নুর আন্দোলন করবেন বলে ঘোষণা দেন।

এরপর গত ১৬ মার্চ নুরসহ ডাকসু ও হল সংসদের নেতারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে যান। পরের দিন ১৭ মার্চ সংবাদ সম্মেলন করে ডাকসুর নির্বাচিত ভিপি নুরুল হক নুর সবগুলোপদে পুনরায় নির্বাচন চান বলে ঘোষণা দেন। নুরুল হক নুরের এমন দ্বৈতমতের কারণে ডাকসুতে তিনি দায়িত্ব নিবেন কি না সেটা নিয়ে সংশয় বাড়তে থাকে। তবে গতকালের ঘোষণার পর সেই জল্পনা-কল্পনার অবসান হলো!

এসএইচ-২৪/২৩/১৯ (শিক্ষা ডেস্ক)