ষষ্ঠী থেকে দশমী

ষষ্ঠী থেকে

মন্দিরে মন্দিরে বাজছে ঢাকঢোল-মাদল। ধূপ-ধুনো আর নাচে-গানে চলছে দেবী মায়ের বন্দনা। মহালয়া থেকে বিসর্জন; প্রতিটি মুহূর্ত রঙিন করে রাখতে চান তারকারা। নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে তারা ফিরে পেতে চান দুর্গাপূজার আনন্দময় মুহূর্ত। পূজার গল্প বলেছেন কয়েকজন তারকা…

বাপ্পি চৌধুরী

পূজা মানেই নতুন কাপড় পরা। বাবা-মা আমাকে নতুন জামা কিনেই দিতেন। খাওয়া-দাওয়াতেও ছিল নতুনত্ব। বছরের এ দিনটি সবাই অন্যরকমভাবে কাটাতাম। বন্ধুরা মিলে ঘুরতাম। আমি খুব ডানপিটে ছিলাম। তাই বন্ধুদের সঙ্গে দুষ্টমি করতাম।পূজা এলে ছোটবেলার একটি ঘটনা খুব মনে পড়ে। ভয়ংকর সে ঘটনা। পূজা এলে আমি পটকা ফাটাতাম। এ জন্য অনেকেই আমাকে ভয় পেত। একবার পটকা ফোটাতে গিয়ে বিরক্ত হয়েছিলাম। পটকায় আগুন লেগেছিল কিন্তু ফাটছে না।পরে দেখলাম যে পটকায় পানি লেগেছিল। একটু পর পটকাটি ফাটল আর আমি তো লাফ দিয়ে দু’তলায় ওঠে আবার পড়ে গেলাম। যার ফলে আমার পা ফেটে রক্ত ঝরেছিল। এখন পূজা এলে সে স্মৃতি মনে পড়ে। মন চায় এখনও পটকা ফাটাই, হৈ-হুল্লোড় করি। কিন্তু বয়স আর ব্যস্ততার কারণে তা আর হয়ে ওঠে না। ঢাকায় থাকলেও পূজোতে নারায়নগঞ্জ যাই আমি। সেখানেই বেশ ধুমধামে পূজা পালন করি। পরিবারের সবাই থাকে। এবারও তার ব্যতিক্রম হচ্ছে না।

বিদ্যা সিনহা মিম

যত ব্যস্ততাই থাকুক, সব ছেড়ে ছুড়ে এবার রাজশাহী যাবই যাব- এই ছিল আমার কথা। ভেবেছিলাম, মা-বাবা কিংবা ছোট বোনের কেউ না কেউ আপত্তি তুলবে। কিন্তু না, সবারই দেখি একই রকম ইচ্ছা। আর তা জেনেই আনন্দে ফেটে পড়েছিলাম। শুধু তাই নয়, ষষ্ঠী থেকে দশমী পর্যন্ত কী করব- তারও একটা প্ল্যান তৈরি করে ফেলেছি। অবশ্য বেশিরভাগ সময় প্ল্যান যেভাবে করা হয়, সেভাবে কিছু করা হয়ে ওঠে না। যেমন অষ্টমীতে শাড়ি পরে ঘুরে বেড়াব- এটা ঠিক করলেও শেষমেশ কীভাবে নিজেকে সাজাব তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। সালোয়ার-কামিজে অন্যান্য সময় পূজামণ্ডপে গেলেও কোন দিন কোন পোশাক পরব- তা নিয়েই দ্বিধাদ্বন্দ্বে পড়ে যাই। আর উৎসব আনন্দে মেতে ওঠা যেখানে মুখ্য, সেখানে পোশাক আর সাজসজ্জা নিয়ে যত পরিকল্পনাই করা হোক, তা বদলে যেতে সময় লাগে না। আসল কথা হলো, আবার রাজশাহী যাব, প্রিয়জন, আত্মীয়-স্বজন অনেকের সঙ্গে দেখা, হাসি-গান আড্ডা, দুর্গামায়ের কাছে প্রার্থনা ও তার বিসর্জনে ব্যথা- এসব নিয়ে দিনগুলো কাটাব, এই ভাবনায় আনন্দে আছি।

পূজা চেরি

পূজা এলে অন্যরকম ভালোলাগা কাজ করে। যেন আনন্দে হারিয়ে যায় মন। কখন কী করব, ষষ্ঠী থেকে দশমী পর্যন্ত কোন কোন মণ্ডপে ঘুরে বেড়াব; এমন পরিকল্পনার ছক আঁকতে থাকি। জানি পরিকল্পনা অনুযায়ী সব হয় না। তবুও ভাবতে আনন্দ লাগে। পূজার দিনগুলো পরিবারের সঙ্গে কাটানো হয়। পূজায় নতুন জামাকাপড় আমার চাই-ই চাই। এবারও অনেক পোশাক কিনেছি। ঢাকার হাজারীবাগে বেড়ে ওঠা। ধুলোমাখা শৈশবের দিনগুলো ওই মাটিতেই কেটেছে। ছোটবেলায় তাঁতীবাজার, শাঁখারীবাজারসহ পুরান ঢাকার অনেক মন্দিরে বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে ঘুরে ঘুরে পূজার আনন্দ ভাগাভাগি করেছি। এখন সেই সময়গুলো খুব মিস করি। শুটিং ডাবিংয়ের ব্যস্ততা না থাকলে অনেক আনন্দ করব। ঢাকায় ঢাকেশ্বরী ও বনানী পূজামণ্ডপে ঘোরার ইচ্ছা রয়েছে।

ঊর্মিলা

পূজা আনন্দের বার্তা নিয়ে আসে। গত দু’বছর থেকে আমার পূজার আনন্দে ভাটা পড়েছে। কারণ দু’বছর আগে বাবা মারা গেছেন। এ কারণে পূজা আমার কাছে একদিকে আনন্দ, অন্যদিকে বিষাদের। পূজায় ঢাকায় থাকার ইচ্ছা রয়েছে। বিভিন্ন পূজামণ্ডপে ঘুরব। উৎসবে আলতা-সিঁদুর আর লাল-সাদা শাড়িতে নিজেকে সাজাতে যেমন ভালো লাগে, তেমনি বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে মণ্ডপে মণ্ডপে ঘুরে বেড়াতে ভালো লাগে। মা আমার জন্য একটি শাড়ি এনেছেন কলকাতা থেকে। মায়ের জন্যও উপহার কিনেছি। পূজায় শৈশবের দিনগুলো বেশ মিস করি। আগে রিকশায় ঘুরে ঘুরে প্রতিমা দেখতাম। মণ্ডপে মণ্ডপে প্রসাদ খেতাম। এটা এখন আর হয়ে ওঠে না।

পূজা সেনগুপ্ত

পরিবারের সঙ্গেই পূজার আনন্দ ভাগাভাগি করব। আমার দুটো পরিবার। একটি বাবা-মা, পরিবার-পরিজন ও অন্যটি নাচের দলের সদস্যরা। প্রতি বছরই একটি দিন তুরঙ্গমীর সবাই মিলে আনন্দ করি। বাকি তিন দিন বন্ধুবান্ধব ও আত্মীয়স্বজনের জন্য থাকে। বিশেষ করে পূজায় জগন্নাথ হল সংলগ্ন মেলা বেশ উপভোগ করি। আমার কাছে পূজার সবচেয়ে আকর্ষণীর দিক হলো দুর্গা প্রতিমা। প্রতিমার শৈল্পিক দিক ও প্রতিমার ভেতরকার শক্তির ব্যাপারটি বেশি আকর্ষণ করে। পূজায় দেশীয় শাড়ি পরতে পছন্দ করি। মসলিন, রাজশাহী সিল্ক্ক, জামদানি ও সুতির শাড়ি সাধারণত পরা হয়।

আরএম-১২/০৩/১০ (বিনোদন ডেস্ক, তথ্যসূত্র: সমকাল)