‘গুটি’ দিয়ে নতুন বছর শুরু চরকির

সুলতানা একজন মাদক পাচারকারী। বছর কয়েক ধরে স্থানীয় মাদক চোরাচালান নেটওয়ার্কের সঙ্গে যুক্ত সে। এই সময়ের মধ্যে প্রচুর অর্থসম্পদ করেছে ঠিকই, তবে হারাতে হয়েছে কাছের মানুষ, সম্পর্ক, বিশ্বাস ও আশা। এ কাজে পালানোর কোনো পথ নেই, তবে সুলতানা স্বপ্ন দেখে। মেয়ের জন্য সুন্দর একটি পৃথিবীর স্বপ্ন। কিন্তু সেই স্বপ্ন পূরণ হয় কি? এমন টান টান উত্তেজনা নিয়ে এগিয়ে যায় গল্প। এই গল্প ‘গুটি’ সিরিজের। নতুন বছরের প্রথমেই মুক্তি পেতে যাচ্ছে চরকি অরিজিনাল সিরিজটি।

‘গুটি’তে সুলতানার চরিত্রে অভিনয় করেছেন আজমেরী হক বাঁধন। সাত পর্বের সিরিজটি চরকিতে মুক্তি পাবে আজ। এতে বাঁধন ছাড়াও অভিনয় করেছেন শাহরিয়ার নাজিম জয়, শরীফ সিরাজ, মৌসুমী হামিদ, নাসির উদ্দিন খান, আরিয়া আরিত্রা, টুনটুনি সোবহান, আরফান মৃধা শিবলু, মাহমুদুল আলমসহ আরও অনেকে।

সিরিজটি নিয়ে বাঁধন বলেন, ‘গল্পটা পরিচালক শঙ্খ খুব দুর্দান্তভাবে সাজিয়েছেন। একদম ভিন্ন প্লট, ভিন্ন চরিত্র, ভিন্ন ধরনের একটা গল্প ফুটিয়ে তুলতে চেয়েছেন। এখানে আমি সুলতানা নামের এক মাদক পাচারকারীর চরিত্র করেছি। চরিত্রটা নিয়ে আমরা দীর্ঘদিন ধরে আলাপ করেছি। চরিত্রটা অনেক দিন নিজের মধ্যে ধারণ করছি। সিরিজের অভিনয়শিল্পী নির্বাচন কিন্তু খুব ইন্টারেস্টিং।’

সিরিজটিতে অভিনয়ের অভিজ্ঞতা ছাড়াও দর্শকদের উদ্দেশে আরেকটি বার্তা দেন বাঁধন, ‘বাংলাদেশে নারীপ্রধান কাজ চলে না, কথাটা শুনতে চাই না। আমি বিশ্বাস করি, আগামী এক-দুই বছরের মধ্যে ধারণাটির পরিবর্তন হবে। আমরা আমাদের কাজ দিয়েই এই চিন্তার পরিবর্তন করতে পারব। দর্শককেও নতুন কিছু দিতে পারব। এখন শুধু অপেক্ষা মুক্তির।’

‘গুটি’তে সেলিম চরিত্রে অভিনয় করেছেন শাহরিয়ার নাজিম জয়। কাজটি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘যে চরিত্র করেছি, সেই মাপের অভিনেতা আমি কি না, সেটা দর্শকেরা তাঁদের মন্তব্যে জানাবেন। আমি সেই রায় পাওয়ার অপেক্ষায়। তবে গল্প ও নির্মাণশৈলী অনেক বাস্তবধর্মী হয়েছে। গল্পের ভেতরের গভীর কিছু বিষয় উঠে আসবে। এখন শুধু পরীক্ষার ফলাফলের অপেক্ষায়।’

ধীরে ধীরে ওটিটিতে নিয়মিত হচ্ছেন অভিনেত্রী মৌসুমী হামিদ। তিনি জানালেন সিরিজটিতে তাঁর চরিত্র সম্পর্কে, ‘সিরিজটিতে আমার চরিত্রের বেশ কয়েকটা ধাপ আছে। লিপি চরিত্রটির নিজের মধ্যেই একটা মানসিক দ্বন্দ্ব নিয়ে চলতে থাকে। এখন লিপিকে দর্শক কতটা বুঝতে পারবে, এটাই দেখার।’

সাম্প্রতিক সময়ের আলোচিত অভিনেতা নাসির উদ্দিন খান। চরিত্রের দৈর্ঘ্য যেমনই হোক, ঠিকই পর্দায় নিজের ছাপ রাখেন তিনি। নাসির উদ্দিন আছেন গুটিতেও। তিনি বলেন, ‘শঙ্খের সঙ্গে এটা আমার তৃতীয় কাজ। তাই তার টিমের সঙ্গে একটা অন্য রকম বন্ধুত্বের সম্পর্ক আছে। পরিচালক আমাকে যথেষ্ট সময় দেন, কাজ করার জায়গা দেন। এতে চরিত্রটি কঠিন হলেও ফুটিয়ে তোলা সহজ হয়।’

‘গুটি’র কাজ করতে দুটি বড় চ্যালেঞ্জ ছিল অভিনেতার সামনে। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘একটি হলো ভাষা; ঢাকার ভাষা শিখতে ১৫ দিন সময় দিতে হয়েছে। যেখানে অভিনেতা সাহেদ আলী সুজনের অনেক সহযোগিতা পেয়েছি। আরেকটি হলো, সিএনজি চালানো। একজন সিএনজিচালক আমাকে সিএনজি চালানো শিখিয়েছেন। সহ–অভিনেতারা সবাই ছিলেন দারুণ। তাই কাজ করতে কষ্ট হয়নি। সব মিলিয়ে গুটি একটা ভালো প্রোডাকশন হবে বলে ধারণা করছি।’

‘গুটি’ দিয়েই চরকির সঙ্গে প্রথমবার কাজ করলেন পরিচালক শঙ্খ দাসগুপ্ত। তিনি বলেন, ‘কাজটির জন্য উন্মুখ হয়ে ছিলাম। চট্টগ্রাম, কুমিল্লাসহ ঢাকার বিভিন্ন লোকেশনে শুটিং হয়েছে। পুরো দলটিই ছিল দুর্দান্ত। এখন টেনশনে আছি এটা ভেবে, দর্শকদের কেমন লাগবে।’

চরকির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রেদওয়ান রনি বলেন, ‘গুটি দিয়ে চরকি ২০২৩ সালের যাত্রা শুরু করল। শঙ্খ বেশ ভালোভাবে কাজটা শেষ করেছেন। সেই সঙ্গে সিরিজে যাঁরা অভিনয় করেছেন, তাঁরাও বেশ দুর্দান্ত কাজ করেছেন। এখন যাঁদের জন্য এত কষ্ট করা হলো, অর্থাৎ দর্শকদের কাজটা কেমন লাগল, সেটাই জানার পালা।’

এসএ-০৫/০১/২৩ (বিনোদন ডেস্ক)