কেবল রাতে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে বাধ্য হচ্ছেন সেখানকার বাসিন্দারা
কোনোটির দরজা আছে, ছাদ নেই। কোনোটিতে ছাদ বা দরজা কিছুই নেই। আলোর বালাই নেই। ভারতের মালদা জেলার পান্ডুয়ার বোসপাড়া গ্রামে ডিভিসি খালের ধারে বেশ কয়েকটি ‘কমিউনিটি’ শৌচাগারের এমনই বেহাল দশা।
সেগুলো ব্যবহার করতে না পেরে খোলা জায়গাতেই শৌচকর্ম সারেন গ্রামবাসীরা। অথচ খাতা-কলমে হুগলি জেলায় খোলা জায়গায় কেউ মলত্যাগ করে না।
সরকারিভাবে বলা হচ্ছে, ওই গ্রামে সাতশ মানুষের বাস। গত বছর পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে ৩০টি শৌচাগার তৈরি করা হয়েছিল। তার মধ্যে ১০টিরই বেহাল দশা।
গ্রামবাসীদের অভিযোগ, শৌচাগারগুলো এত ছোট যে, ভিতরে ঢুকে ঠিকভাবে বসা যায় নি। কেনো শৌচাগারে আবার মল উপচে পড়ছে। শৌচাগারের বাইরে জঙ্গল আর আগাছায় ভর্তি। আশেপাশে মলে ভর্তি।
রজনী হেমব্রম নামে এক নারীর অভিযোগ, সঠিকভাবে কাজ না করাতেই সমস্যা। নির্মাণের সময়ই কয়েকটি শৌচাগারের দরজা বসানো হয়নি। সবগুলোর ছাদে ঢালাই বা টিন বসানো হয়নি।
তিনি বলেন, কোনো মানুষের পক্ষে এগুলো ব্যবহার করা সম্ভব? অন্য এক গ্রামবাসী জানান, বাধ্য হয়ে আমাদের ডিভিসির পাড়েই যেতে হয়। বিডিও দপ্তর বা পঞ্চায়েত খোঁজ নেয় না।
লক্ষ্মী হেমব্রম নামে এক নারী জানান, আমাদের যেন লজ্জা থাকতে নেই! মাঠঘাটই ভরসা। শীত হোক বা বৃষ্টিবাদলের দিন, ভোর থাকতে ঘুম থেকে উঠে কাজ সারতে হয়। নয় তো অপেক্ষা করতে হয়, কখন সন্ধ্যা নামবে। খুব সমস্যায় পড়লে মেয়ে-বউদের কী অবস্থা হয় ভাবুন।
গ্রামের প্রবেশ পথেই ওই বেহাল শৌচাগার। দুর্গন্ধে সেখানে থাকাটাই দায়। নাকে রুমাল দিয়ে চলতে হয়। এক গ্রামবাসী বলেন, ছোটরা এই পথে স্কুলে যায়। ওদের তো রোগ ছড়াতে পারে। প্রশাসন একটু নজর দিক।
পঞ্চায়েতের স্থানীয় তৃণমূল সদস্য আনসুরা বিবি বলেন, গত বছর ৩০টি শৌচালয় নির্মাণ করা হয়েছিল। রাস্তার ধারে ১০টি ভেঙে গেছে। তাই কিছু মানুষ মাঠে যাচ্ছেন বলে শুনেছি। পঞ্চায়েত অনুমতি দিলে সেগুলো সংস্কারের ব্যবস্থা করব।
আরএম-৪৩/২৯/১২ (অনলাইন ডেস্ক)