ইঞ্জিনিয়ারিং ছেড়ে তিনি ধরলেন বাসের স্টিয়ারিং

গৎ বাঁধা জীবন নয় তার। কারণ সব সময় চেয়েছিলেন জীবনটা হোক চমকে ভরা। জীবনের প্রতিটি মোড়ে থাকুক রোমাঞ্চ। এই ভাবনা নিয়ে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ডিগ্রি থাকা সত্ত্বেও প্রতীক্ষা দাস পেশা হিসাবে বেছে নিলেন বাস চালানো।

ভারতের মুম্বাইয়ের বাসিন্দা ২৪ বছর বয়সী এই তরুণী দেশটির বাণিজ্যিক রাজধানী খ্যাত মুম্বাইয়ের প্রথম বাসচালক হিসাবে উল্টো স্রোতে হেঁটে এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে এসেছেন।

মুম্বাইয়ে বেড়ে উঠেছেন প্রতীক্ষা। ছোটবেলা থেকেই অন্যরকম স্বভাবের ছিলেন। তথাকথিত সমাজের চোখে মোটেও লক্ষ্মী নন তিনি, বরং দুষ্টুমিতে ভরপুর। পড়াশোনায় বরাবরের মতো ভালো মেয়েটির বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে গাড়ির প্রতি প্রেম জাগে। বাবা-মা চেয়েছিলেন, ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়াশোনা করেই পায়ের মাটি শক্ত করুক। সেই অনুযায়ী, মালাডেক ঠাকুর কলেজে ভর্তি করে দেয়া হয় প্রতীক্ষাকে। সেখান থেকে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতক করেন তিনি।

কিন্তু চাকরি করে রোমাঞ্চহীন গৎ বাঁধা জীবন যে একেবারে পছন্দ নয় প্রতীক্ষার। জীবনের প্রতিটি মুহূর্তে চড়াই-উতরাই ছাড়া ভালো লাগে না তার। তাই ইঞ্জিনিয়ার হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার কথা ভুলেও ভাবেননি মুম্বাইয়ের এই তরুণী। এর বদলে জীবনে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার জন্য তিনি বেছে নেন বাসের স্টিয়ারিং।

ব্যস্ততায় মোড়া-ভিড়ে ঠাসা বাণিজ্যনগরীর বিভিন্ন প্রান্তে যাত্রীদের পৌঁছে দেয়ার গুরুদায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছেন সাহসিনী এই কন্যা। মুম্বাইয়ে প্রথম নারী বাসচালক প্রতীক্ষা দাস।

কিন্তু কেন এমন অন্যরকম পেশা বেছে নিলেন প্রতীক্ষা? তিনি বলেছেন, ছোটবেলা থেকেই গাড়ির প্রতি ভালোবাসা ছিল। বাইক, স্কুটি সবই চালিয়েছেন।

ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করার পর আরটিও অফিসার হওয়ার স্বপ্ন দেখতেন তিনি। সেজন্য প্রয়োজন ছিল ভারী গাড়ি চালানোর লাইসেন্স। স্বপ্নপূরণের জন্য বড় ভারী গাড়ি চালানো শেখেন প্রতীক্ষা। তারপর থেকেই বাস চালানোর ইচ্ছাই যেন তাড়া করে বেড়াচ্ছিল তাকে।

মনের সেই তাড়না আঁকড়েই জীবনের আঁকাবাঁকা পথে হাঁটতে শুরু করেছেন প্রতীক্ষা। গৎ বাঁধা সমাজের ছবিকে বদলাতে তার এই সাহসী সিদ্ধান্ত নিঃসন্দেহে প্রশংসার যোগ্য।

এসএইচ-১২/১১/১৯ (অনলাইন ডেস্ক)