হাসপাতালেই জন্মদিন
নোভেল করোনাভাইরাসের ভয়কে দূরে সরিয়ে হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডের কেবিনের মধ্যেই জন্মদিন পালন করলেন চিকিৎসকরা। শুক্রবার সন্দেহভাজন ওই ব্যক্তির (৩১) জন্মদিনের আয়োজন করেন ফর্টিস হাসপাতালের বক্ষরোগ বিভাগের চিকিৎসকরা।
দিন কয়েক আগে ওই ব্যক্তি জ্বর, কাশি–সহ একাধিক উপসর্গ নিয়ে আনন্দপুরের ওই বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হন। সেখানেই তাঁর চিকিৎসা করছেন একদল চিকিৎসক। আইসোলেশন ওয়ার্ডের কেবিনেই রাখা হয়েছে রোগীকে। পরিবারের কারও সঙ্গেই দেখা করতে দেওয়া হচ্ছে না তাঁকে। আর এরই মধ্যে পালন হল তাঁর জন্মদিন।
মানসিকভাবে তাঁকে ভাল রাখতে চিকিৎসকরা এই সিদ্ধান্ত নেন। আগে থেকে রোগীকে কিছুই জানানো হয়নি। একেবারে সারপ্রাইজ বার্থ ডে। শুক্রবার বিকেলে হঠাৎই চিকিৎসকরা ফ্রুটকেক নিয়ে হাজির হলেন রোগীর কাছে। ঘটনায় অবাক হন রোগী। আনন্দে তাঁর চোখ দিয়ে জল বেরিয়ে যায়। এরপর ওই কেবিনের মধ্যেই চিকিৎসক এবং ওই রোগী কেক কাটেন।
বক্ষরোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ রাজা ধর বলেন, ‘আমরা যখন লড়াইয়ে নেমেছি তখন হার স্বীকার করলে চলবে না। উনি সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরবেন। পরিবার থেকে আলাদা আছেন। এখন সেটার জন্য যেন মনে দুঃখ কষ্ট না পান। মানসিক দিক থেকে স্বস্তি দিতে এবং মনে সাহস বাড়াতেই আমাদের এই উদ্যোগ।’
হাসপাতালে ভর্তির পর রোগীর নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়। রিপোর্ট নেগেটিভ আসে। নিউমোনিয়া ধরা পড়ে। ডাক্তারবাবুদের ‘ভগবান’ বলা হয়। এদিনের ঘটনা তা আবার প্রমাণ করে দিল। জন্মদিনের দিন পরিবারের থেকে দূরে থাকা ব্যক্তির মুখে একটুকরো হাসি দেখলে কার না ভাল লাগে? বক্তব্য চিকিৎসকদের।
করোনা আতঙ্ক গ্রাস করেছে গোটা বিশ্বকে। কলকাতাবাসীর মনও ভাল নেই। লকডাউন পরিস্থিতিতে মানুষের মন আরও অশান্ত হচ্ছে। কোভিড–১৯ সন্দেহভাজন এই ব্যক্তি যেদিন ভর্তি হলেন সেদিনই তাঁর জন্মদিন জানতে পারেন। তখনও রিপোর্ট জানতেন না। কী আসবে নমুনার রিপোর্ট তা জানা বাকি। আইসোলেশন রুমে জন্মদিনের গান ‘হ্যাপি বার্থ ডে’ গেয়ে ব্যক্তির মনে সাহস
জুগিয়েছেন ডাঃ রাজা ধর এবং তাঁর টিম। ব্যক্তির মুখের হাসি আরও চওড়া হয় যখন শেষবেলায় জানতে পারলেন তাঁর রিপোর্ট নেগেটিভ।
এসএইচ-১০/৩০/২০ (অনলাইন ডেস্ক)